নেতৃত্বে সাকিব আল হাসান, ফরম্যাটটা ওয়ানডে, তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেলে ভারসাম্যপূর্ণ একটা দল – সবমিলিয়ে তাই এশিয়া কাপে বাংলাদেশ যাচ্ছে বড় স্বপ্ন নিয়ে। আরো স্পষ্ট করে বললে, গত তিন আসরে দুইবার ফাইনাল খেলা টাইগারদের এবারের লক্ষ্য মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট নিজেদের করে নেয়া।
সময়ের অন্যতম সেরা দল নিয়ে এশিয়ান মঞ্চে গেলেও দুই একটা প্রশ্নের উত্তর এখনো পায়নি বাংলাদেশ। এর মধ্যে সাত নম্বরে খেলবেন কে সেটিই বোধহয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
টিম ম্যানেজম্যান্ট চাইলে এই পজিশনে আফিফ হোসেন কিংবা শামীম হোসেনের মত স্পেশালিষ্ট ব্যাটসম্যান খেলাতে পারে। আবার বোলিং শক্তি বাড়াতে চাইলে মেহেদি মিরাজ বা শেখ মেহেদিকে সুযোগ দেয়া যায়। মূলত সাকিব আল হাসান এবং মিরাজের মত দুইজন অলরাউন্ডার থাকায় বাংলাদেশ বাড়তি ব্যাটার কিংবা বোলার – দুটোই ব্যবহার করতে পারে।
তাই তো, এশিয়া কাপে ব্যাটিং নাকি বোলিং কোন বিভাগকে গুরুত্ব দিবে সেটা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল অবশ্য বিশ্বাস করেন অতিরিক্ত একজন বোলার অধিনায়ককে বাড়তি নিরাপত্তা দেয়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, ব্যাটিং লাইনআপে একজন বেশি থাকলে রানও বেশি হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেদিকেই ঝুঁকেছে; মিরাজ সহ আটজনের লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে মাঠে নেমেছে টিম টাইগার্স। ভারতের বিপক্ষে সেটা দারুণভাবে কাজে লেগেছে; আট নম্বরে নেমে মেহেদি মিরাজ করেছেন অতিমানবীয় পারফরম্যান্স। সিরিজের প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৩৮ আর দ্বিতীয় ম্যাচে ১০০ রান করে সিরিজসেরা হয়েছিলেন এই ডানহাতি।
যদিও পরবর্তীতে ইংল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই কম্বিনেশন কাজে লাগেনি। দুটো সিরিজই বাংলাদেশ হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। তাই তো আট ব্যাটসম্যান আর পাঁচ বোলার খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে পাঁচ বোলার নিয়ে খেলাটা যথেষ্ট নয় বলেই মনে হচ্ছে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের।
এখন দেখার বিষয় এশিয়া কাপে কেমন কম্বিনেশনে একাদশ ঠিক করে সাকিব বাহিনী। ডিফেন্সিভ এপ্রোচে আট ব্যাটার, পাঁচ বোলার নাকি আক্রমণাত্বক মানসিকতায় সাত ব্যাটার, ছয় বোলার নিয়ে খেলে টাইগাররা। ছয় বোলার খেলাতে চাইলে সাতে মিরাজ, আটে খেলবেন শেখ মেহেদি আর আটজন ব্যাটার চাইলে সাতে শামীম বা আফিফ, আটে মিরাজ।
যতদূর জানা গিয়েছে, আফগানিস্তান আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছয়জন স্পেশালিস্ট বোলার খেলাতে পারে বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে চার পেসারের সাথে থাকবেন মিরাজ আর সাকিব; অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক পেসার কমিয়ে ব্যবহার করা হতে পারে শেখ মেহেদি হাসানকে। তবে ভারত, পাকিস্তানের মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ রাখবে টিম ম্যানেজম্যান্ট।
গুটি কয়েক দর্শক মহল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে চাইছেন আসলে এই ইস্যুতেই। তবে, রিয়াদ আবার এশিয়া কাপে তেমন সফল নন। সর্বমোট করেছেন ৩২৮ রান, আছে একটি হাফ সেঞ্চুরি। এই ডানহাতির ব্যাটিং গড় স্রেফ ২৫ আর স্ট্রাইক রেট মাত্র ৬২। এই পরিসংখ্যান আধুনিক ক্রিকেটে খুবই বেমানান।
সব এশিয়া কাপে কোন কম্বিনেশন সফল হয় সেদিকে কড়া নজর রাখা হবে। কেননা এশিয়া কাপের দল থেকেই বেছে নিতে হবে বিশ্বকাপ স্কোয়াড; সেজন্যই পরিকল্পনাগুলো হাতে-কলমে যাচাই করে নিতে হবে এই টুর্নামেন্টেই।