অন্যান্য সময়ে তাও আত্মবিশ্বাস থাকে ভারতের শিবিরে। এবার তাও নেই। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মত ইভেন্টের আগে সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের সংকট আবারও প্রকট হয়ে উঠেছে।
ভারত শেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২০১১ সালে। এরপরের দু’টো আসরে সেমিফাইনালে গিয়ে থেমেছে ভারতের দৌড়। তবে, ফেবারিট হয়েই আসর শুরু করেছিল ভারত। তবে, এবার গত কিছুদিনের পারফরম্যান্সে ভারতকে আর ফেবারিট বলা যাচ্ছে না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজটা ভারতকে যেন নিজেদের বিশ্বকাপ স্বপ্নে বড় ধরণের আঘাতই দিল। বিশ্বকাপের মূল পর্বে যেতে ব্যর্থ হওয়া উইন্ডিজের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে হেরেছে ভারত। প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ভারতের বিপক্ষে জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
অধিনায়ক পান্ডিয়া হেরেও ক্ষিপ্ত নন। বরং, এটাকে দেখছেন ‘ওয়েক আপ কল’ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘হেরে যাওয়া অনেক সময় ভাল। এটা অনেক কিছু শিক্ষা দেয়।’
আর সেই শিক্ষাটা হল, পারফরম্যান্স এমন থাকলে বিশ্বকাপ জিতে যাওয়ার স্বপ্ন না দেখাই ভাল। সেটা দেশের মাটিতে হলেও, বিশ্বকাপ জয়ের জন্য যে পারফরম্যান্স বা প্রস্তুতি থাকা দরকার সেটা ভারতের নেই বললেই চলে।
বাস্তবতার ভাল একটা চিত্র দিলেন সাবেক পেসার ভেঙ্কটেশ প্রসাদ। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে ধুয়ে দিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা হল, ভারত সীমিত ওভারে এখন সাদামাটা একটা দল। ক’দিন আগেই বিশ্বকাপ খেলতে ব্যর্থ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটার কাছে পরাস্ত হয়েছে ভারত। ওয়ানডে সিরিজেও আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হেরেছিলাম। আশা করি ওরা নির্বোধ বিবৃতি দেওয়ার পরিবর্তে নিজেদের ব্যর্থতার কারণ বের করবে।’
এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি দলটারও কিন্তু দল হিসেবে পারফরম্যান্স আশাব্যাঞ্জক ছিল না সাম্প্রতিক সময়ে। গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সুপার টুয়েলভে যেতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা। সেটাও মনে করিয়ে দিলেন প্রসাদ।
তিনি বলেন, ‘কেবল ৫০ ওভারের ক্রিকেট নয়, গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সুপার টুয়েলভে কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের খারাপ পারফরম্যান্স দেখে কষ্ট হয়। জেতার খিদেটা, আগুনটা দেখতে পাই না। আমরা একটা বিভ্রমের মধ্যে বাস করছি।’
প্রসাদ কাঠগড়ায় তুলেছেন টিম ম্যানেজমেন্টকে। মানে তাঁর তীর কোচ রাহুল দ্রাবিড়, রোহিত শর্মা ও হার্দিক পান্ডিয়ার দিকে। বললেন, ‘তাঁরা পরাজয়ের জন্য দায়ী। তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে। এখন সবাই শুধু এমএসের (মহেন্দ্র সিং ধোনি) নামটি ব্যবহার করবে এবং ওর কথা মতো বলবে। নির্বাচনে ধারাবাহিকতা নেই, এলোমেলো জিনিস খুব বেশি ঘটছে।’
দল নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রসাদ। তাঁর ভাষ্যমতে, ‘বোলাররা ব্যাট করতে পারে না, ব্যাটাররা বোলিং করতে পারে না। হ্যাঁ, ক্রিকেটারের খুঁজে না আনার প্রক্রিয়ায় আমরা নিজেদের পছন্দ-অপছন্দকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করছি। কেউ আপনার প্রিয় ক্রিকেটার হতেই পারেন। কিন্তু, আরও ভালো কেউ থাকতে পারেন। তাঁর দিকে তাকান এবং সেই অনুযায়ী দল নির্বাচন করুন।’
ক’দিন আগে আরেক সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফও বলেছিলেন, ভারতকে কাগজে-কলমে খুব শক্তিশালী মনে হচ্ছে না। এখন প্রশ্ন একটাই, ভারত কি বাজে সময় কাটিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরতে পারবে?