চলতি বছরের এপ্রিলে নিউজিল্যান্ড সফরে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার পর থেকেই এই ফরম্যাটে বল হাতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন নাসুম আহমেদ। এই বাঁহাতি স্পিনার জানিয়েছেন সবার সমর্থনেই আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন তিনি। যার কারণে সাফল্যও ধরা দিচ্ছে নিয়মিত।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর অন্য কোন ফরম্যাটে খেলার সুযোগ না পেলেও এই সময় দেশের হয়ে প্রতিটা টি-টোয়েন্টিই খেলেছেন নাসুম। এই ১৩ ম্যাচে বল হাতে ৬.০৭ ইকোনোমিতে তিনি শিকার করেছেন ১৭ উইকেট। ছোট এই ক্যারিয়ারে ইতোমধ্যে দুই বার ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি।
গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার উইকেট শিকার করার পর আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও শিকার করেছেন চার উইকেট। এছাড়া প্রায় প্রতি ম্যাচেই দলের চাহিদা পূরণ করেছেন তিনি। ধারাবাহিক ভাবে এমন পারফরম্যান্স করার জন্য অধিনায়ক, দলের সিনিয়র ক্রিকেটার ও কোচের সমর্থনকেই বড় করে দেখছেন নামুম।
আজ ম্যাচ শেষে এক ভিডিও বার্তায় নাসুম জানিয়েছেন তাদের সমর্থন তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটাররা অনেক সমর্থন দিয়েছে। এটা আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে। পারফরমও ভালো হচ্ছে। কোচও আমার সাথে অনেক কিছু শেয়ার করে। গতকাল যখন অনুশীলন করছিলাম তখন বলছিলো আস্তে বল করলে ভালো হয়। সেটাই করছি।’
চলতি বছরের এপ্রিলে নিউজিল্যান্ড সফরে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল নাসুমের। অভিষেকেই বল হাতে দুই উইকেট শিকার করেছিলেন এই স্পিনার। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ তে হোয়াটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। তাই নিউজিল্যান্ডের সাথে আজ সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে পেরে খুশি এই স্পিনার।
তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে যখন খেলতে গিয়েছিলাম তখন আবার টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছে। প্রথম ম্যাচে দুই উইকেট পেয়েছিলাম। আমরা একটা ম্যাচও জিততে পারি নাই। একটা ইয়ে ছিলো ওদের সাথে জিততে পারি নাই। হোম কন্ডিশনে আমরা সিরিজ জিতছি। আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো লাগতেছে। আমি নিজেও পারফরম করছি।’
আজ চার ওভারে দুই মেইডেন সহ মাত্র ১০ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাসুম। পাওয়ার প্লেতে দুই ওভারে ছয় রান দিয়ে দুই উইকেট শিকার করেন তিনি। এছাড়া প্রায় প্রতি ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে ভালো করে আসছেন তিনি। এই স্পিনার জানিয়েছেন তাকে সব সময় তাঁর শক্তির জায়গাতে বল করতে বলা হয়। আর এটা করেই সফল হচ্ছেন তিনি।
নাসুম বলেন, ‘সিমে বল করার চেষ্টা করছি। উইকেট একটু টার্নিং ছিলো, চেষ্টা ছিলো একটা জায়গাতে বল করার। আসলে সত্য কথা বলতে এখন আমি পাওয়ার প্লেতে বল করে অভ্যাস্ত হয়ে গেছি। আসলে পাওয়ার প্লেতে বল দিয়ে বলা হয়না একটা উইকেট বের করে দাও। আমাকে আমার শক্তির জায়গাতে বল করতে বলা হয়। আমিও সেটাই চেষ্টা করছি। পাওয়ার প্লেতে ডট বল করার চেষ্টা থাকে।’
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাকিব আল হাসানকে রিভার্স সুইপে ছয় মেরে ঝড়ো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন। তবে তাকে উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে দেননি নাসুম। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে ফিন অ্যালেনকে ফিরিয়ে দেন তিনি।
এই বাঁহাতি স্পিনারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ৮ বলে ১২ রান করে ফিরে যান অ্যালেন। নাসুম জানিয়েছেন অধিনায়কের পরামর্শে বল করেই এই উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। নাসুম বলেন, ‘অ্যালেন যখন রিভার্স সুইপ করতেছিল তখন রিয়াদ ভাই বলেছিল ও রিভার্স করলে তুই আস্তে বল করবি। যখন বল করতে গেছি দেখি ও আগেই ঘুরে গেছে, ওর মিস টাইমিংয়ে উইকেটটা পেয়ে গেছি।’
তবে ঘরের মাঠে উইকেটের সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত বল করলেও আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে কেমন করবেন বাংলাদেশের বোলাররা এই আলোচনা চলছে নিয়মিতই। নাসুম জানিয়েছেন উইকেট যেমনই হোক তাঁর চেষ্টা থাকবে ভালো বল করার।
তিনি বলেন, ‘পেশাদার ক্রিকেটার হিসাবে আমাকে যে কোন উইকেটেই বল করতে হবে। ফ্ল্যাট হোক আর টার্নিং হোক। আমাকে ভালো করতে হবে এবং পরিস্তিতি অনুযায়ী বল করতে হবে। কোন জায়গাতে কেমন উইকেট সেটা তো আর আগে থেকে জানিনা। কিন্তু আমার চেষ্টা থাকবে যতো টুকু ভালো করা যায়।’