ক্যাচ যে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়, সে তো পুরনো গল্প। তবে একটি ক্যাচ শিরোপার ঠিক কাছে নিয়ে যায়- এই গল্পের এক ধ্রুব চরিত্র ভারত ক্রিকেট। তিন খানা শিরোপা জয়ে অবদান রেখেছে তিন কালজয়ী ক্যাচ। যা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাস।
- ১৯৮৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ (কপিল দেব)
সবাইকে অবাক করে সেবার ফাইনালে উঠেছিল ভারত। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমন একটা দলের বিপক্ষে ভারত ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে যাবে- তেমনটা সম্ভবত কেউ বিশ্বাস করেনি। কিন্তু সেই বিশ্বাসের সূত্রপাত ঘটে কপিল দেবের নেওয়া একটা ক্যাচ থেকে। তার নেওয়া ক্যাচই ঘুরিয়ে দেয় ম্যাচের মোমেন্টাম।
ভিভ রিচার্ডস ক্রিজে ছিলেন। একা হাতে ম্যাচ জেতানোর সমস্ত সক্ষমতা ছিল তার। ভারত জানত তিনিই হবেন তাদের গলার কাটা। দলীয় ৫৭ রানের মাথায় মদনলালের বলে ভিভ রিচার্ডস বল তুলে দেন আকাশ পানে। মিড উইকেট থেকে ডিপ মিডউইকেটের দিকে দৌড়ে ক্যাচ লুফে নেন কপিল দেব। বেশ কঠিন ক্যাচ ছিল বটে। ৩৩ রানে রিচার্ডসের প্রস্থানের পর জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ভারত। শেষ অবধি নিজেদের প্রথম শিরোপা জেতে ভারত।
- ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (শ্রীশান্ত)
প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় ২০০৭ সালে। সেবার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান। শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকান মিসবাহ উল হক। আগের এক ওয়াইড সহ পাকিস্তানের জয়ের জন্য ৪ বলে ৬ রান লাগত। হাতে ছিল এক উইকেট।
সে সময় মিসবাহ ছিলেন পাকিস্তানের আশার আলো। তিনি স্কুপ করে ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে চান। যোগিন্দার শর্মার সে বলটি ঠিকঠাক ব্যাটে লাগাতে পারেননি মিসবাহ। দূর আকাশে হাওয়ায় ভেসে যাওয়া বলটি পরবর্তীতে লুফে নেন শ্রীশান্ত। ভারত জিতে যায় নিজেদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
- ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (সুরিয়াকুমার যাদব)
দীর্ঘকাল ধরে জমে থাকা শিরোপার আক্ষেপ ঘুচে যায় সুরিয়াকুমার যাদবের লুফে নেওয়া একটি ক্যাচে। সে ক্যাচ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে অনেক। তবে বাকি দুই ক্যাচের চাইতেও কঠিন এক ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন সুরিয়াকুমার। একেবারে বাউন্ডারি লাইন থেকে ছক্কা বাঁচিয়ে ক্যাচ নিয়েছিলেন স্কাই।
দক্ষিণ আফ্রিকার আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছিলেন ডেভিড মিলার। তাদের হাত ছোঁয়া দূরত্বে জয় ছিল। শেষ ওভারে ৯ রান প্রয়োজন ছিল জয়ের জন্য। বিশতম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা করেন মিলার। তবে দারুণ দক্ষতায় বাউন্ডারির বাইরে গিয়েও শেষ অবধি ক্যাচ ধরেন সুরিয়াকুমার যাদব। তার সেই ক্যাচে দ্বিতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বাদ পায় ভারত।