পাকিস্তানের বিকল্প ওয়ানডে একাদশ

এই একাদশে পাঁচ ব্যাটার, একজন উইকেটরক্ষক ব্যাটার, একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার ও চার জন বোলার আছেন। দিব্যি দারুণ এক ওয়ানডে দল। অধিনায়ক যথারীতি ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান।

নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করলে পাকিস্তান নিজেদের দিনে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা দল। পাকিস্তানের ইতিহাসে নানা সময়ে ইতিহাস কাঁপানো সব ক্রিকেটারের আবির্ভাব হয়েছে, যারা বিশ্ব ক্রিকেটে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তাঁদের প্রতিভা দিয়ে। আইসিসির র‍্যাংকিংয়ে পাকিস্তানের অনেক ক্রিকেটারের নাম রয়েছে।  আচ্ছা, আইসিসি র‍্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা একটা ওয়ানডে একাদশ করলে কেমন হয়?

এই একাদশে পাঁচ ব্যাটার, একজন উইকেটরক্ষক ব্যাটার, একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার ও চার জন বোলার আছেন। দিব্যি দারুণ এক ওয়ানডে দল। অধিনায়ক যথারীতি ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান।

  • সাঈদ আনোয়ার

সাঈদ আনোয়ারের ২০ টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি যে কোনো পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ১৯৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে এই বাঁহাতি ব্যাটারের ১৯৪ রানটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ স্কোর হিসেবে টিকেছিল। এই ওপেনার ১৯৯০-এর উইজডেনের ওয়ানডে দলে জায়গা করে নেন। সাঈদ আনোয়ার তাঁর ক্যারিয়ারে ২৪৭ টি ওয়ানডে খেলে মোট ৮৮২৪ রান করেছেন। ওয়ানডেতে তাঁর গড় ৩৯.২১।

  • জহির আব্বাস

এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান স্ট্রোক খেলার জন্য পরিচিত। জহির আব্বাসের রানের জন্য অতৃপ্ত ক্ষুধা ছিল। তাঁর ওডিআই গড় ৪৭.৬২ দ্বারা তা বোঝা যায়। তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার ছিলেন তিনি ২০২০ সালে আইসিসির হল অফ ফেমে তাঁকেএশিয়ান ব্র্যাডম্যান’ হিসেবে যথার্থই বিবেচনা করা হয়। তাঁর ৬২ টি ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তিনি ২৫৭২ রান করেন। যার মধ্যে সাতটি সেঞ্চুরি রয়েছে।

  • বাবর আজম

আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা মাল্টিফরম্যাট খেলোয়াড় মানা হয় তাঁকে। প্রতিটা ফরম্যাটেই তিনি আছেন র‌্যাংকিংয়ের ওপরের দিকে। বাবর আজমের ওয়ানডে রেকর্ড বেশ শক্তিশালী। পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপকে দুর্গের মতো আগলে রাখেন বাবর আজম। তাঁর কভার ড্রাইভ তর্কাতীতভাবে বিশ্বে সবচেয়ে সূক্ষ্ম। তাই তিনি অনায়াসে পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা একাদশে জায়গা করে নেবেন।

  • জাভেদ মিয়াঁদাদ 

ওয়ানডে ক্রিকেটে মিয়াঁদাদই প্রথম দিককার ব্যাটার যিনি আক্রমণাত্মক রান করতেন। তার দৌড়, তার সূক্ষ্ম শট প্লেসমেন্ট এবং মানসিক দৃঢ়তা তাঁকে প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণে আধিপত্য বিস্তার করতে সাহায্য করত। তর্কাতীতভাবে সমস্ত ফরম্যাটে পাকিস্তানের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান তিনি। ২৩৩ টি ওয়ানডেতে ৭৩৮১ রান রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। যার মধ্যে আটটি সেঞ্চুরি ও ৫০ টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে।

  • সেলিম মালিক

মালিক তার ২৮৩টি ওয়ানডের মধ্যে ৩৪টিতে পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন। তাঁর গড় ৩২.৮৮। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তিনি মোট ৭১৭০ রান করেছেন। পাশাপশি ৮৯ টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এই অলরাউন্ডার অনায়াসে পাকিস্তানের সেরা একাদশে জায়গা করে নেবেন। 

  • উমর আকমল  (উইকেটরক্ষক) 

এই উইকেটরক্ষক কাম ব্যাটার ১২১ টি ওয়ানডেতে মোট ৩১৯৪ রান করেছিলেন। যার মধ্যে দুইটি সেঞ্চুরি ও ২০ টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে। তাঁর ওয়ানডে এভারেজ ৩৪.৩৪।যদিও মাঠের শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তাঁর ক্যারিয়ারের বিকাশকে ব্যাহত করেছিল। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে বিস্ফোরক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫৪ টি ডিসমিশাল রয়েছে।

  • ইমরান খান (অধিনায়ক) 

পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তর্কাতীতভাবে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার। যদিও ইমরানের টেস্ট রেকর্ড অসাধারণ, কিন্তু ওয়ানডেতেও তিনি পিছিয়ে নেই। তার ওয়ানডে বোলিং গড় ২৬.৬২ এবং ব্যাটিং গড় ৩৩.৩১। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে তিনি উভয় দক্ষতা বজায় রাখার জন্য লড়াই করেন এবং উন্নতি করতে থাকেন। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেন তিনি।

  • ওয়াসিম আকরাম 

তিনি ছিলেন স্যুইংয়ের কিংবদন্তি। তার ৫০২টি ওয়ানডে উইকেটের রেকর্ড বিস্ময়কর। মুত্তিয়া মুরালিধরনের ৫৩৪-এর পরে সর্বকালের তালিকায় তাকে দ্বিতীয় স্থানে রাখা যায়। ওয়াসিম ২০০২ সালে উইজডেন দ্বারা সর্বকালের সেরা ওয়ানডে বোলার হিসেবে স্বীকৃতি পান।

  • ওয়াকার ইউনুস

ওয়াকার ইউনুস ছিলেন তার সময়ের অন্যতম দ্রুততম বোলার। তার ৪১৬ উইকেট তাঁকে সর্বকালের ওয়ানডে উইকেট শিকারীর তালিকায় তৃতীয় স্থানে রাখে। যেখানে ওয়ানডেতে তাঁর ১৩ টি ফাইফার রয়েছে।

  • সাঈদ আজমল 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিছুটা দেরীতে আসা আজমল দারুণ অফস্পিনার ছিলেন। ১৩৩ ওয়ানডেতে ১৮৪ টি উইকেট রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। যদিও তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে বারবারই প্রশ্ন উঠেছে। সেটা না হলে, ক্যারিয়ারটা আরো লম্বা হত।

  • সাকলায়েন মুশতাক

মুশতাককে সর্বদা স্মরণ করা হবে প্রথম অফস্পিনার হিসেবে দুসরাকে আয়ত্ত করার জন্য। ১৬৯ ওয়ানডেতে ২৮৮ উইকেট রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সাকলায়েন ছিলেন অবিশ্বাস্য এক ট্রেন্ড সেটার। অফস্পিন ব্যাপারটাকে সত্যিই ‘খতরনাক’ একটা শিল্পে পরিণত করার নায়ক।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...