১.
একদিন খেলার ফাঁকে হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠল, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ মাঠ থেকে বেরিয়ে ১০ মিনিট কথা বলে মাঠে ফিরে এলেন, সেদিন থেকে ফুটবলে জন্ম হল হাফটাইমের।
২.
প্যারিসে ঢোকার পর সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেন জ্লাতানকে, ‘আপনি এখানে কেন স্যার?’ জবাব এলো, আসলে মোনালিসা ছাড়া প্যারিসের মানুষের আর দেখার মতো কিছু ছিল না এতকাল, তাই…’
উপরের ঘটনাগুলো কাল্পনিক কিন্তু বিশ্ব ফুটবলের রজনীকান্ত কিন্তু কাল্পনিক চরিত্র নন। সুইডেনের ম্যালমো শহরে শুধুমাত্র ফ্রি লাঞ্চের জন্য স্কুলে যেত ছেলেটা।
একটু বড় হতেই রাতের অন্ধকারে বাইক চুরি, লকার ভেঙে টাকা নিয়ে পালানো এমনকি পকেটমারি করে নিজের লম্বাচুলটা উড়িয়ে দিয়ে রাতের অন্ধকারে বাইক নিয়ে হারিয়ে যেত ম্যালমো শহরের অন্ধকার পট্টিতে। মা-বাবা কোথাও কেউ নেই।
বসনিয়া-সার্বিয়া-তুর্কির উদ্বাস্তুদের দিয়ে ভরা স্যাঁতসেঁতে গলিতে রাতের অন্ধকারে চলত স্ট্রিট ফুটবল। পয়সা নিয়ে গোল করায় জ্লাতান ছিল বস্তির খেপুরে খেলোয়াড়দের নয়নের মণি!
নিজের আত্মজীবনীতে জ্লাতান লিখছেন তাঁর আইকন মোহাম্মদ আলীর কথা; রাতে ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে শুয়ে থাকা ছেলেটার বাঁচার শক্তি ছিল আলি- হয়ত পেশার তাগিদে অন্ধকার জীবনে হারিয়ে যাওয়া একদল মানুষের হয়ে আলির মতোই একটা পাঞ্চ ছুঁড়ে দিতে চেয়েছিল ও এই সভ্যতার দিকে!
মদ্যপ বাবা, উদাসীন মা, দারিদ্র্য আর আন্ডারওয়ার্ল্ড জীবন থেকে নিজের চুলটা শক্ত করে পেছনে বেঁধে একদল জ্লাতান প্রতিদিন তৈরী হন অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে। রোনালদো-মেসির পৃথিবীতে তাঁরা ধূমকেতুর মতো আসেন।
হয়ত হারিয়ে যান উল্কার মতোই, কিন্তু এই পৃথিবীতে কতজন সভ্যতার দিকে চোখ রেখে বলতে পেরেছেন, ‘ওরা আমাকে অবসরের কথা বলে, আমি ওদের রাষ্ট্রকেই অবসরে পাঠিয়ে দিই।’
স্পর্ধার নাম জ্লাতান, আমাদের কলার তোলা রোয়াবের নাম ‘জ্লাতান’!