১৮৩ ও ভারতের অধিনায়ক – বিস্ময়কর কাকতাল

জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়ার জন্য কি কি শর্তপূরণ করতে হয় – নেতৃত্বগুণ অবশ্যই থাকতে হয়, ধারাবাহিক পারফরমার হতে হয় আরো কত কি। কিন্তু, যদি বলা হয় ভারতের অধিনায়ক হতে ১৮৩ রানের ইনিংস খেলা যথেষ্ট তাহলে কি পাগলের প্রলাপ ভাববেন?

সত্যি বলতে ১৮৩ রানের ইনিংস খেললেই টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক হওয়া যায়, ইতিহাস সেটারই সাক্ষ্য দেয়। গল্পটা তাহলে এবার একদম শুরু থেকে বলা যাক।

১৯৯৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে টনটনে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। সেই ম্যাচে সৌরভ গাঙ্গুলি ১৮৩ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলেন। আর এমন অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের সুবাদে লঙ্কা বাহিনীকে হারায় তাঁর দল।

এক বছর পর ২০০০ সালে গাঙ্গুলি ওয়ানডে এবং টেস্ট দুই ফরম্যাটেই ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নির্বাচিত হন। শুরু হয় নতুন এক ইতিহাস।

ছয় বছর পর একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়পুরে খেলতে নামে স্বাগতিকরা। সেই ম্যাচে তুলনামূলক এক তরুণের ব্যাট থেকে আসে ১৮৩ রানের অনবদ্য এক ইনিংস, ১৫টি চার ও ১০টি ছয়ে সাজানো সেই ব্যাটিং প্রদর্শনী এখনো চোখে ভাসে ভক্তদের।

মজার ব্যাপার, ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে রঙিন পোশাকে জাতীয় দলের অধিনায়ক হয়ে যান ধোনি, বছরখানেক পরে তিন ফরম্যাটের দায়িত্ব পান তিনি।

১৮৩ আর অধিনায়কত্ব – এই সম্পর্কের সর্বশেষ নিদর্শন বিরাট কোহলি। ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমেছিল টিম ইন্ডিয়া। চাপের মুখে সেদিন ১৮৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন তিনি। ওয়ানডে ইতিহাসে এখনো অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স হিসেবে বিবেচনা করা হয় কোহলির সেদিনের ‘১৮৩’-কে।

তিন বছর পরেই টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের নেতা বনে যান এই তারকা। এরপর ২০১৮ সালে সব ফরম্যাটেই টস করতে শুরু করেন তিনি। রোহিত শর্মা দায়িত্ব নেয়ার আগ পর্যন্ত তাঁর অধিনায়কত্ব ছিল অসাধারণ।

কাকতালীয় হলেও সত্যি, এই তিনজনের সবাই আসলে নিজেদের প্রেক্ষাপটে সেরাটাই দিতে পেরেছেন। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়কদের তালিকা করা হলে তাঁরা নি:সন্দেহে উপরের দিকে থাকবেন। অর্থাৎ ১৮৩ সংখ্যাটি ভারতীয়দের জন্য আশীর্বাদই বটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link