ম্যাচ গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। মোটে তা ৮ মিনিট। আর এই আট মিনিটই যেন পুরো ম্যাচের সারাংশ। এই আট মিনিটে দুই পক্ষই গোল পেয়েছে একটি করে। তবে সতেরো বছর বয়সী এন্ড্রিক ফেলিপের গোলেই অন্তিম মুহূর্তে মেক্সিকোর বিপক্ষে জয় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের।
দ্বিতীয় অর্ধে বদলি হিসেবে মাঠে নামা ব্রাজিলিয়ান এই তরুণের চমকে আরও একবার জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো ব্রাজিল। তাঁর শেষ মুহূর্তের গোলেই স্বস্তির হাওয়া বয়ে যায় হলুদ শিবিরে। বরাবরের মত এবারও আস্থার প্রতি বেশ ভালভাবেই দিয়ে গেলেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা।
দলটা যে ব্রাজিল, অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। আলোচনা-সমালোচনা কিংবা তর্ক-বিতর্ক যতই চলুক, তাঁদের ঝুলিতে রয়েছে পাঁচ-পাঁচটি বিশ্বকাপ। তাঁদের রক্তে বয়ে চলে ঐতিহ্য রক্ষার মানসিকতা। পিছিয়ে পড়েও কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয় তা বেশ ভালভাবেই জানা আছে আলিসন বেকার- ডগলাস লুইজদের। মেক্সিকোর বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে সেটার সর্বশেষ প্রমাণ।
শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় পায়ের আলতো ছোঁয়াতে মেক্সিকোর জালে বল জড়ান মিড ফিল্ডার আন্দ্রেস পেরেইরা। প্রথম অর্ধে মাঠে ব্রাজিলের রাজত্ব চললেও, বিরতির পর দ্বিতীয় অর্ধে আক্রমণে নামে জ্যামি লজানোর শিষ্যরা।
একের পর এক আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। ৫৪ মিনিটেই আবারও মেক্সিকোর গোলরক্ষক জুলিও গঞ্জালেসকে ফাঁকি দেয় ব্রাজিল। এবার ডিফেন্ডার ইয়ান কৌতোর পাসে গোল করেন গ্যাব্রিয়াল মার্টিনেলি। ম্যাচ দেখে বোঝাই যাচ্ছিল জয়ের তরী ব্রাজিল ঘাটেই ভিড়তে চলেছে।
কিন্তু খেলাটা যে ফুটবল। মুহূর্তেই পরিবর্তন হয়ে যায় ম্যাচের গতিপথ। ৭৩ মিনিটের মাথায় একটি গোল করে ম্যাচে ফেরার আশা বাঁচিয়ে রাখে মেক্সিকো। আর অতিরিক্ত সময়ের ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করে মেক্সিকো। তবে অতিরিক্ত সময়ের ২ মিনিট না পেরোতেই ২-২ এ সমতায় ফেরে এডসন আলভারেজরা। মার্টিনেজ আয়ালার গোলে উল্লাসে ফেটে পড়ে মেক্সিকোর দর্শকরা।
তবে স্থির ছিল ব্রাজিলের শিবির। তবে গোটা গ্যালারিকে আরও একবার অবাক করে দেন ব্রাজিলের তরুণ তুর্কী এন্ড্রিক। ভিনিসিয়াস জুনিয়রের উড়ে আসা বলে মাথার স্পর্শ দিয়ে গোল করে বসেন, সেটা অবশ্য শেষ বাজি বাজার মাত্র দুই মিনিট আগে। আর তাতেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয় মেক্সিকোর আর উল্লাসের উৎসব শুরু হয় ডরিভাল জুনিয়রের শিষ্যদের মাঝে।
দিনশেষে স্নায়ু চাপ স্তব্ধ করে দেয়া ম্যাচে তরুণ এন্ড্রিকের কাছেই পরাস্ত হল মেক্সিকো। আর শেষ মুহূর্তের এই টানটান উত্তেজনার কারণেই বিশ্বজুড়ে ফুটবল এতটা জনপ্রিয়। বোঝাই যাচ্ছে কোপা আমেরিকা ২০২৪ সামনে রেখে প্রস্তুতিটা বেশ ভালোই সারলো ব্রাজিল।