টি-টোয়েন্টির এই যুগে প্রায় সময়ই ব্যাটসম্যানকে ঝড়ো ইনিংস খেলতে দেখা যায়। বিশেষ করে ইনিংসের শেষের দিকে এই রকম ক্যামিও প্রায় সব ম্যাচেই দেখা যায়।
ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া যায় ১৯৭২ সালে। এরপর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে অসংখ্য সেঞ্চুরি হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে কিছু সেঞ্চুরি ব্যতিক্রম হয়েছে এই ঝড় তুলতে পারার কারণে।
ওয়ানডে ক্রিকেটে অনেকবারই ঝড়ো ইনিংস খেলে ক্রিকেটাররা দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন অনেক ক্রিকেটার। যেসব ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন তাদেরকে নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
- এবি ডি ভিলিয়ার্স – ৩১ বল (দক্ষিণ আফ্রিকা)
ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির বর্তমান মালিক এবি ডি ভিলিয়ার্স। দক্ষিণ আফ্রিকান এই মারকুটে ব্যাটসম্যান এই রেকর্ড গড়েছিলেন ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ান্ডার্স স্টেডিয়ামে এই এই ম্যাচে ৪৪ বলে ৩৩৮.৬৩ স্ট্রাইক রেটে ১৪৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
এই ইনিংস খেলার পথে হাশিম আমলার সাথে ১৯২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ১৪৪ রানের এই ইনিংসে ৯ টি চার এবং ১৬ টি ছক্কা হাঁকান তিনি।
ডি ভিলিয়ার্সের এই ইনিংসের উপর ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ দাঁড়ায় দুই উইকেটে ৪৩৯ রান। এই ম্যাচে ১৪৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
- কোরি অ্যান্ডারসন- ৩৬ বল (নিউজিল্যান্ড)
এবি ডি ভিলিয়ার্সের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক হবার আগে এই রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন কোরি অ্যান্ডারসন। অ্যান্ডারসনের এই রেকর্ড টিকে ছিলো মাত্র এক বছর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কুইন্সটাউনে এই রেকর্ড গড়েন কোরি অ্যান্ডারসন। বছরের প্রথম দিনে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। এই ম্যাচে জেসি রাইডার এবং কোরি অ্যান্ডারসন দুই জন মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৯১ রান যোগ করেন।
কোরি অ্যান্ডারসন ৪৭ বলে ২৭৮.৭২ স্ট্রাইক রেটে ১৩১ রানের ইনিংস খেলেন। এই ইনিংসে ছিলো ছয়টি চার এবং ১৪ টি ছক্কা।
কোরি অ্যান্ডারসন এবং জেসি রাইডারের সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৮৩ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। ২৮৪ রানে লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ১৫৯ রানের আগেই থেমে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ।
- শহীদ আফ্রিদি – ৩৭ বল (পাকিস্তান)
কোরি অ্যান্ডারসন এবং এবি ডি ভিলিয়ার্সের সেঞ্চুরির আগে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিলো শহীদ আফ্রিদির দখলে। শহীদ আফ্রিদি এই রেকর্ড গড়েছিলেন ১৯৯৬ সালে নাইরোবিতে। তাঁর এই রেকর্ড অক্ষুন্ন ছিলো ২০১৪ সাল পর্যন্ত।
শ্রীলংকার বিপক্ষে যখন শহীদ আফ্রিদি এই ম্যাচ খেলতে নামেন তখন তিনি ছিলেন ১৮ বছরের তরুণ। এই ম্যাচে আফ্রিদির ব্যাটিংয়ে নামেন তিন নাম্বার পজিশনে। ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার সাঈদ আনোয়ারের সাথে ১২৬ রানে জুটি গড়েন তিনি।
দ্রুততম সেঞ্চুরি করার পথে আফ্রিদি ৩৭ বলে ২২৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেন। এই ইনিংসের ছয়টি চার এবং ১১ টি ছক্কা হাঁকান তিনি। সেঞ্চুরি করার তিন বল পরেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
আফ্রিদির ব্যাটে ভর করে ৩৭১ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান এবং এই ম্যাচে শ্রীলংকাকে ৮২ রানে হারায় পাকিস্তান।
- মার্ক বাউচার – ৪৪ (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকার সোনালী প্রজন্মের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার ছিলেন মার্ক বাউচার। তিনি মূলত ছিলেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপের নিচের দিকের মূল স্তম্ভ ছিলেন।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের একটি মাত্র সেঞ্চুরি করেছিলেন মার্ক বাউচার। এই ম্যাচে চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৬৮ বলে ১৪৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিলো ২১৬.১৭। এই ম্যাচে তিনি আটটি চার এবং ১০ টি ছক্কা হাকিয়েছেন।
বাউচারের এই ইনিংসে ভর করে ৪১৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এই বিশাল সংগ্রহের পাশাপাশি ১৭১ রানের বিশাল জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
- ব্রায়ান লারা – ৪৫ বল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই কিংবদন্তি ওয়ানডে ক্রিকেটের পঞ্চম দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক। তিনি এই সেঞ্চুরি করেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে।
১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফরের সময় এই রেকর্ড গড়েন তিনি। এই ম্যাচে তিনি ৬২ বলে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেন। এই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিলো ১৮৮.৭০। এই ম্যাচে তিনি ১৮ টি চার এবং চারটি ছক্কা হাকিয়েছেন।
ব্রায়ান লারার এই ইনিংসে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১৪। এই ম্যাচে ১০৯ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।