স্টোকসের ফিল্ডিং রণনীতি!

অজি ব্যাটার স্টিভ স্মিথ তখন উইকেটে এসেছেন কেবল। ঠিক তখনই ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্টোকস করে বসলেন অদ্ভুতুড়ে এক কান্ড। ফিল্ডারদের নিয়ে আসলেন সামনে। স্টিভের চারপাশে ফিল্ডিং সেটআপ করলেন। অবস্থাটা এমন, যেন এক নিরাপত্তা বেষ্টনী সাজানো হয়েছে অজি এ ব্যাটারের চারপাশে।  

ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া— ক্রিকেটের দুই কুলীন দলের শত বছরের বেশি প্রাচীন দ্বৈরথ ‘অ্যাশেজ’ সব সময়ই বিশেষ কিছু মুহুর্তের ধারক ও বাহক। এবারের অ্যাশেজও তার ব্যতিক্রম নয়।

ইংল্যান্ডের বাজবল ক্রিকেট এবারের অ্যাশেজে এমনিতে এবার আলাদা একটা বিশেষত্ব দিয়েছে। তবে এজবাস্টন টেস্টের তৃতীয় দিনে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক যে রণকৌশল সাজালেন, তা চোখ জুড়ে থাকবে অনেক দিন।

অজি ব্যাটার স্টিভ স্মিথ তখন উইকেটে এসেছেন কেবল। ঠিক তখনই ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্টোকস করে বসলেন অদ্ভুতুড়ে এক কাণ্ড। ফিল্ডারদের নিয়ে আসলেন সামনে। স্টিভের চারপাশে ফিল্ডিং সেটআপ করলেন। অবস্থাটা এমন, যেন এক নিরাপত্তা বেষ্টনী সাজানো হয়েছে অজি এ ব্যাটারের চারপাশে।

তিনটি স্লিপ, একটি গালি, ২ লেগ স্লিপ এবং একটি শর্ট মিডউইকেট অঞ্চলে ফিল্ডার রাখলেন ইংল্যান্ডের এ অধিনায়ক। অর্থাৎ, মোট ৭ জন ক্রিকেটার তখন স্মিথের আশপাশে ছিলেন। এভাবে ফিল্ডিং সাজানোর ফলাফলও হাতেনাতে পান স্টোকস। স্মিথের উপরে ক্রমাগত চাপ তৈরি হয়। ফলত তাঁকে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলতে হয়।

আর এতেই একটা সময় পর বেন স্টোকসের পাতা ফাঁদে পা দেন স্মিথ। স্টোকসের বল ঠিকঠাক রিড করতে না পারায় বল লাগে প্যাডে। ইংল্যান্ড অধিনায়কের জোরালো আবেদন। অতঃপর আউট। ১৬ রানেই ফিরে যেতে হয় স্মিথকে।

একই ভাবে উসমান খাজার বেলাতেও এমন ফিল্ডিং সেটআপ করেন স্টোকস। কারণ উইকেটে থিতু হয়ে ইংলিশদের জন্য তখন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠছিলেন খাজা। খাজা যদিও সেঞ্চুরির পর ইনিংস নিয়ে গিয়েছিলেন ১৪১-এ। তবে শেষদিকে স্টোকসের অমন ফিল্ডিং প্লেসমেন্টেই পরাস্ত হন অজি এ ব্যাটার। রবিনসনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি।

সবশেষ ২০১৫ সালে ঘরে অ্যাশেজ জিতেছিল ইংল্যান্ড। এরপর তিনটি অ্যাশেজ সিরিজে আর সেই ছাইভষ্ম পুনরুদ্ধার করতে পারেনি ইংল্যান্ড। তবে বাজবল ক্রিকেটের কল্যাণে এবার বেশ আশাবাদী স্টোকস।

হবে না-ই বা কেন? গত বছর মে মাসে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কোচ ও স্টোকস অধিনায়ক হয়ে আসার পর এই ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে ১৩ টেস্টের ১১টিতেই জিতেছে ইংল্যান্ড। অথচ তার আগের ১৭ টেস্টে মাত্র একটিতেই জিততে পেরেছিল ইংল্যান্ড।

সাহসী সিদ্ধান্ত, আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং প্লেসমেন্ট। বেন স্টোকস নিজেও জানেন এই প্রক্রিয়ায় ঝুঁকি আছে। তবে তিনি এও বিশ্বাস করেন, এভাবেই টেস্ট ক্রিকেটের বাঁকবদল ঘটাতে পারে ইংল্যান্ড। কোনো কিছু হোক বা না হোক, এই সময়ে স্টোকস আর ইংল্যান্ডের এমন অ্যাপ্রোচে টেস্ট ক্রিকেটই দিনশেষে চিত্তাকর্ষিত হচ্ছে, এটা এখন বলাই যায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...