সুনীল নারাইন, গ্রেটেস্ট এভার নাইট

সুনীল ‘বিস্ময়কর নারাইন। যাঁকে ঠ্যাঙানো যায় না। কোনও পিচেই তাঁকে সহজে খেলতে পারে না ব্যাটার। কেকেআরের আইপিএল জয়ের পিছনেও নারাইনের আঙুলের ভেলকি।

সুনীল নারাইন যখন আইপিএল খেলতে এলেন তখনও স্মার্টফোনে খেলা দেখার চল আসেনি। ২০১২ সাল। নাইন্টিজ কিডদের অনেকেরই মাধ্যমিকের বছর।

সুনীল ‘বিস্ময়কর নারাইন। যাঁকে ঠ্যাঙানো যায় না। কোনও পিচেই তাঁকে সহজে খেলতে পারে না ব্যাটার। কেকেআরের আইপিএল জয়ের পিছনেও নারাইনের আঙুলের ভেলকি।

এই শতকের দু’দশকে অনেক মিস্ট্রি স্পিনার এসেছেন, সে মিস্ট্রি ভেদও হয়ে গেছে। কিন্তু নারাইনের রহস্য তো ভেদ হলই না, বরং পরের দু’বছরে আরও ধারাল হল নারাইন জাদু।

বিতর্কের জেরে বারবার বদলাল বোলিং অ্যাকশান, কিন্তু, গত বারো বছরের আইপিএল ইতিহাসে কোনও ক্রিকেটবোদ্ধাই কি দাবী করতে পারবেন ধারাবাহিকভাবে নারাইনকে দুরমুশ করতে পেরেছেন কেউ? নাহ!

ক্রিস লিনের সঙ্গে জুটি বেঁধে নারাইন যখন ওপেনে নেমে বিধ্বংসী খেলতে শুরু করলেন, সবাই জানতাম এটা পার্ট অফ প্ল্যানিং, সব ম্যাচে ক্লিক না করলেও কিছু ম্যাচে করবে। আর সেইদিন ম্যাচটা কে কে আরের হাতে চলে আসবে। আসলও৷

কিন্তু শর্ট বল, বাউন্সারের বিরুদ্ধে দূর্বলতা এ যুগে ধরে ফেলা কঠিন না। ধরা পড়লেন নারাইনও। কিন্তু একজন দেড়শোর ওপর উইকেট নেওয়া, কার্যত লেজেন্ড হয়ে যাওয়া একজন টি-টোয়েন্টি বোলার যে নিজেকে অমন রোলে মানিয়ে দুটো সিজন খেললেন, সেটাই বিস্ময়কর।

আমরা ধরেই নিয়েছিলাম নারাইন মানেই বিস্ময়। সারা বছর জুড়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টি-টোয়েন্টি খেলে বেড়ানো নারাইন জানেন, বিস্ময় হয়ে থাকতে গেলে দরকার আধুনিকতম ক্রিকেট বিজ্ঞানের সঙ্গে রোজ মোলাকাত।

গম্ভীর হটসিটে ফিরে আসার পর, নারাইন ফের ওপেনে নামছেন। নারাইন যদি এই ফর্মে ব্যাটিং না-ও করতেন তিনি নাইট জার্সিতে খেলে যাওয়া শুধু না, সম্ভবত আইপিএলে খেলে যাওয়া সেরা বিদেশি হয়েই থাকতেন। কিন্তু নারাইন তাঁর গায়ে লেগে থাকা ‘বিস্ময়কর’ তকমাটা এত সহজে ঝেড়ে ফেলতে চাননি।

নারাইন আইপিএলে আসার পর ১২ টা বছর কেটে গেছে। একটা আস্ত যুগ। আমরা স্কুল পেরিয়ে, কলেজ পেরিয়ে, এখন প্রায় তিরিশের কোঠায়। অথচ, যা এক থেকে গেছে তা হল নারাইন নামক বিস্ময়। নারাইন এখনও খেলছেন।

তাঁর পুরোনো সতীর্থরা প্রায় সকলেই বিদায় জানিয়েছেন মাঠকে। নারাইন এখনও নিজেকে ভেঙে গড়ে নিচ্ছেন। আর এতবছর পরেও, সেই প্রথম দিনের মতো, একটা জিনিস নারাইন করে চলেছেন, তা হল আমাদের বিস্মিত করা। ‘যেকোনো ভূমিকায় সমানে লড়ে যাই’ – শুধু না, একটা যুগ ধরে নাইটদের ক্ষণে ক্ষণে বিস্ময় হয়ে থেকে যাওয়ার আরেক নাম সুনীল নারাইন।

গ্রেটেস্ট এভার নাইট- তকমাটা এই লোকটা ছাড়া আর কি কাউকে দেয়া যায়?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...