ফিরেই হিরো নম্বর ওয়ান

তিনি জানতেন, সবকিছু ঠিক আছে। তিনি জানতেন, বিশ্ব তার হাতের মুঠোতেই আছে। কেবল বিশ্বটা থমকে ছিলো। কেবল তার নাম ছিলো না এই তালিকায়।

অবশেষে তিনি ফিরলেন। সেই সম্রাটের মতোই ফিরলেন। তিনি ফিরতেই সসম্মানে ছেড়ে দেওয়া হলো চেয়ারটা। জানিয়ে দেওয়া হলো, রাজা ফিরেই সিংহাসনে বসেছেন।

হ্যাঁ, আমাদের সাকিব আল হাসান।

এক বছর নিষিদ্ধ ছিলেন আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৮ অক্টোবর। ২৯ অক্টোবর থেকে আবার সব ধরণের ক্রিকেট খেলার জন্য যোগ্য হয়েছেন তিনি। কিন্তু এখনও ক্রিকেট শুরু করেননি। তারপরও সাকিব আল হাসান যে সেরা, সেটা মাঠে না নেমেই প্রমাণ করে ফেললেন।

পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচের সিরিজ শেষ হতেই নতুন ওয়ানডে র‌্যাংকিং প্রকাশ করা হয়েছে। আর ৩৭৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষ অলরাউন্ডার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন সাকিব।

নিষিদ্ধ হওয়ার পর তিন ফরম্যাটেই র‌্যাংকিং থেকে মুছে ফেলা হয়েছিলো তার নাম। আইন অনুযায়ীই নিষিদ্ধ কোনো খেলোয়াড়ের নাম র‌্যাংকিংয়ে থাকতে পারে না। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে সাকিবের রেটিং পয়েন্ট ছিল ৩৯৪। এই এক বছরে খুব বেশি ওয়ানডেতে তিনি মিস করেননি। চলতি বছর মার্চে বাংলাদেশের হয়ে তিনটি ওয়ানডে মিস করেছেন তিনি। করোনার ধাক্কাসহ লম্বা এই সময়টাতে তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি কেউ।

সাকিবের না থাকার সময়টাতে শীর্ষে ছিলেন আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। সাকিব ফিরতেই নবীর স্থান দুইয়ে নেমে গেল। তার রেটিং পয়েন্ট ৩০১। অলরাউন্ডারদের র‌্যাংকিংয়ে তিনে ক্রিস ওকস ২৮১, চারে বেন স্টোকসের ২৭৬, পাঁচে থাকা ইমাদ ওয়াসিমের রেটিং পয়েন্ট ২৭১।

এমনিতে র‌্যাংকিং বা রেটিং বা পুরষ্কার নিয়ে কখনোই সাকিব খুব বেশি আগ্রহী নন। তবে এক নম্বরের শ্রেষ্ঠত্বটা নিজের দখলে থাকলো কি না, এটুকু উৎসাহ তিনি সবসময়ই দেখিয়ে এসেছেন।

২০০৯ সালে প্রথম ওয়ানডে ক্রিকেটের এক নম্বর অলরাউন্ডার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন সাকিব। এরপর এক সময় ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিন ফরম্যাটেই এক নম্বর অলরাউন্ডার হিসেবে আসীন ছিলেন র‌্যাংকিংয়ে।

এর মধ্যে বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটের এক নম্বর অলরাউন্ডার হলে খুব আবেগী হয়েছিলেন। সেই আসনটাও নিশ্চয়ই তার অপেক্ষায় আছে। সে জন্য হয়তো মাঠে নামতে হবে।

সাকিবের মাঠে নামারও আর খুব বেশি বাকি নেই। পারিবারিক সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় এসে পৌছাবেন। তারপরই শুরু হবে দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাঠে নামার প্রস্তুতি।

আপাতত সাকিবের সামনে মিশন হলো বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। পাচ দলীয় এই করপোরেট লিগে খেলবেন তিনি। এটাকে সাকিব আল হাসানের জন্য প্রস্তুতিমূলক টুর্নামেন্ট বলা যায়। এরপর আসল প্রর্ত্যাবর্তনটা হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসবে বাংলাদেশে। খেলবে পূর্নাঙ্গ সিরিজ। আর এই সিরিজেই আবার বিশ্বের সামনে মাঠে নামবেন সাকিব।

এর আগেই এরকম বিরতির পর মাঠে নেমে ব্যাটে-বলে দূরন্ত জবাব দেওয়ার রেকর্ড আছে তাঁর। এবার সেই মাঠে নেমে আরেকবার বিশ্বকে দেখিয়ে দেওয়ার পালা যে, তিনি নম্বর ওয়ান; হিরো নম্বর ওয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link