ধরুন প্যারালাল ইউনিভার্স তথা সমান্তরাল বিশ্বে ভারত ও পাকিস্তান চিরপ্রতিদ্বন্ধী দুই দল নয়। শত্রুতা পেরিয়ে মিত্রতায় তাঁদের সম্পর্ক রচিত। যদিও বাস্তবে তা অসম্ভব ব্যাপার তাতো আমরা জানিই। ভারতের রয়েছে জগদ্বিখ্যাত বেশ কিছু খেলোয়াড়, অন্যদিকে বর্তমানে পাকিস্তানেরও বেশ কিছু শক্তিশালী ক্রিকেটার রয়েছে।
টি-টোয়েন্টির জন্য কার্যকর ক্রিকেটারের অভাবও দেশটিতে কখনও ছিল না। যদি দুই দেশের মাঝের বিভেদকে বাদ দিয়ে যৌথভাবে পাকিস্তান ও ভারতের বিশ ওভারের ক্রিকেটের উপযুক্ত সর্বকালের সেরা একাদশ এর তালিকা বানানো যায়, কেমন হয় বিষয়টা?
- রোহিত শর্মা (ভারত)
নি:সন্দেহে সাম্প্রতিক সময়ের স্বল্প ওভারের খেলায় সেরা ওপেনার ধরা হয় রোহিত শর্মাকে। তাই এই দুর্দান্ত ব্যাটার টি- টোয়েন্টির যেকোন ধরণের একাদশেই অনায়াসে জায়গা করে নিবেন। রোহিত শর্মার ঝুলিতে চারটি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি রয়েছে!
- বাবর আজম (পাকিস্তান)
পাকিস্তান দলের সেরা ব্যাটার মানা হয় তাঁকে। যেকোন পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে যাওয়ার অদ্ভুত এক শক্তি রয়েছে তার। বাবরকে ছাড়া ভারত-পাকিস্তানের কাল্পনিক একাদশ সম্ভব নয়।
- বিরাট কোহলি (ভারত)
বিরাট কোহলিকে সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার মানা হয়। যদিও বর্তমানে অফফর্মে রয়েছেন তিনি, কিন্তু বিরাটকে একাদশ থেকে বাদ দেয়া অসম্ভব ব্যাপার। কারণ কোহলির ব্যাট না চললেও, মাঠের ফিল্ডিংয়ে তিনি বরাবর সেরা। টি- টোয়েন্টি ঘরানায় তার ব্যাটিং গড় পঞ্চাশের বেশি!
- যুবরাজ সিং (ভারত)
২০০৭ সালের টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুবরাজ সিং ছিলেন জয়ের মূল হোতা। সেই বিশ্বকাপেই স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে এক ওভারে ছয়টি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও দারুণ ফিল্ডিং তাঁকে অনায়াসে এই তালিকায় জায়গা করে দিবে।
- মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত): অধিনায়ক
সর্বকালের সেরা টি-টোয়েন্টি ফিনিশার মানা হয় ধোনিকে। পাক- ভারত টি- টোয়েন্টি একাদশের অধিনায়কত্বটাও থাকবে ক্যাপ্টেন কুলের কাঁধে। পাশাপাশি উইকেট রক্ষক ভূমিকায়ও রইবেন তিনি। এই একাদশে তিনিই একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে জিতেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা।
- শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান)
যে ক্রিকেটার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও লেগ স্পিনে দারুণ দক্ষতা রাখেন তাঁকে ছাড়া এই একাদশ তালিকা অসম্পূর্ণ। এই অলরাউন্ডার নিজ গুনেই জায়গা করে নিয়েছেন এই তালিকায়।
- হার্দিক পান্ডিয়া (ভারত)
দলের পেস বোলিং অলরাউন্ডারের ভূমিকায় থাকবেন তিনি। দারুণ ফর্মেও রয়েছেন। ফিল্ডিংটাও দারুণ করেন তিনি। এক কথায় তাঁকে বলা যায় নিখুঁত আধুনিক কালের দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার।
- শাহীন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান)
তাঁকে বলা যায় পাকিস্তানের পেস বোলিংয়ের নেতা। পেস ও বাউন্সে তিনি প্রতিপক্ষের ব্যাটিংয়ে ধস নামাতে পারদর্শী। তাঁর দুর্দান্ত বোলিং শৈলী তাঁকে এই তালিকায় জায়গা করে দিবে।
- মোহাম্মদ আমির (পাকিস্তান)
দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বাঁ-হাতি পেসার দারুণ প্রতিভা থাকা স্বত্বেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জৌলুস দেখাতে পারেননি। কিন্তু ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা অর্জনে দারুণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
- জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)
দারুণ একজন পেস বোলার তিনি। ভারতের পেশ বোলিংএর নেতা বলা যায় তাঁকে। দারুণ বোলিং অ্যাকশন আর নিখুঁত লাইন লেন্থ তাঁকে বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসারে পরিণত করেছে। ইকোনমি আর স্ট্রাইক রেট – দু’টোতেই এখন তিনি বিশ্বসেরা।
- সাইদ আজমল (পাকিস্তান)
এই তালিকার সবচেয়ে কঠিন ও বিতর্কিত নির্বাচন তিনি। হরভজন সিংকে বাদ দিয়ে তাঁকে তালিকায় জায়গা দেয়া হয়েছে। মাত্র সাত বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে পাকিস্তানকে অনেক ম্যাচ জেতাতে অনেক অবদান রেখেছেন। জাদুকরী ‘দুসরা’ বোলিংয়ে ক্যারিয়ারের উত্থান হয়েছিলো। যদিও দুসরাই পরবর্তীতে তাকে ছিটকে দেয় জাতীয় দল থেকে। তবে এটা মানতে হবে যে, পাকিস্তানের ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার তিনি।