মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আরেকটা বিশ্বকাপের ফাইনাল। আর এবারের চ্যাম্পিয়ন দলটা ইংল্যান্ড। আরেকবার বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক হলেন বেন স্টোকস। অসাধারণ বোলিং করেও শেষ হাসি হাসতে পারেননি শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহরা। তবে কম পুঁজি নিয়েও বিশ্বকাপ ফাইনালের মেজাজটা ধরে রেখেছিল পাকিস্তান।
টিকেট কেটে আসা ৮০ হাজার দর্শককে হতাশ করেনি কোন দলই। তবুও দিন শেষে এক দলের ট্রফি নিয়ে, উদযাপন করে ঘরে ফেরা। আরেক দলের সঙ্গী শুধুই হতাশা, স্বপ্নের ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখার আকাঙ্ক্ষা। তাইতো রানার্স আপ দলের অধিনায়ক বাবর আজমের কণ্ঠেও ফুটে উঠলো আক্ষেপের সুর।
নিজেরা ট্রফিটা জিততে না পারলেও চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে সম্মান দেখাতে ভোলেননি বাবর আজম। ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের অধিনায়ক বলেন, ‘ইংল্যান্ডকে অভিনন্দন জানাই, তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হবার যোগ্য দল এবং দারুণ লড়াই হয়েছে।’
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলা হলেও দর্শকদের পুরো সমর্থন পেয়েছে পাকিস্তান। মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ ফাইনাল দেখেছেন আশি হাজারের বেশি দর্শক। আর তাঁদের অধিকাংশই ছিলেন পাকিস্তানের সমর্থক। খেলার মাঝে বারবার পাকিস্তানের সমর্থকদের গর্জন শোনা গিয়েছে।
সেজন্যই ম্যাচ শেষে দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি বাবর আজম। মেলবোর্নে খেলা হলেও নিজ দেশে খেলার আমেজই পেয়েছে পাকিস্তান দল। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তাই বাবর আজম বলেন, ‘আমাদের এখানে নিজের ঘরে খেলা মনে হয়েছে, প্রতিটা ভেন্যুতেই অসাধারণ সাপোর্ট পেয়েছি আমরা। আপনাদেরকে ধন্যবাদ এই সমর্থনের জন্য।’
বিশ্বকাপের রানার্স আপ হলেও আসরের শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি পাকিস্তানের। এমনকি সেমিফাইনালে ওঠাটাই অনিশ্চিত ছিল দলটার। প্রথম দুই ম্যাচে হেরেও দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান। টানা জয় পেয়েই ফাইনালের মঞ্চে এসেছিল দলটা।
একই সুর ভেসে আসছিল বাবর আজমের কন্ঠেও, ‘আমরা প্রথম দুইটা ম্যাচই হেরে শুরু করেছিলাম। তবে শেষ চারটা ম্যাচ আমরা যেভাবে জিতে এসেছি সেটা ছিল অবিশ্বাস্য।’
বিশ্বকাপ ফাইনালে মাঠে নামার আগে বারবার উঠে আসছিল ১৯৯২ বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা। সেবার ইমরান খানের দল ইংল্যান্ডকে হারিয়ে হয়েছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। বাবর আজমের উপরও ছিল সেই প্রত্যাশাই।
ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামার আগে অধিনায়ক বাবর আজম কী বার্তা দিয়েছিলেন তাঁর দলকে। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,’ আমি শুধু ছেলেদের বলেছি তাঁদের ন্যাচারাল ক্রিকেটটা খেলতে। তবে আমাদের ২০ রান কম হয়ে গিয়েছিল। তবুও ছেলেরা বল হাতে দারুণ লড়েছে।’
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করেছিল মাত্র ১৩৭ রান। ফাইনাল ম্যাচ জয়ের জন্য পাকিস্তানের রান হয়তো যথেষ্ট ছিল না। তবুও ইনিংসের শুরু থেকে নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন পাকিস্তানের পেসাররা। ম্যাচটা এতদূর নিয়ে যাবার পেছনে তাই বোলারদের অবদানই সবচেয়ে বেশি।
তাইতো ম্যাচ শেষে পেসারদের প্রশংসা করতে ভোলেননি বাবর আজম। পাকিস্তানের পেস আক্রমণ নিয়ে বলছিলেন, ‘আমাদের বোলিং আক্রমণ বিশ্বের সেরা। দুর্ভাগ্যবশত শাহীনের ইনজুরি আমাদের পেছনে ঠেলে দেয়। তবে এগুলো খেলারই অংশ।’
অল্প পুঁজি নিয়েও শাহীন শাহ আফ্রিদিরা ম্যাচটা অনেক কঠিন করে ফেলেছিলেন ইনিংল্যান্ডের জন্য। তবে নিজের তৃতীয় ওভারটা শেষ করতে পারেননি আফ্রিদি। এক বল করেই তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আফ্রিদির এই ইনজুরি হয়তো ম্যাচের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট ছিল। যেমনটা বলছিলেন বাবর আজমও। তবে এই সবই তো খেলার অংশ।