২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ মোটেই ভাল যায়নি জশ বাটলারের; দুর্নাম ঘুচানোর ভাল সুযোগ হয়ে এসেছিল ২০২৪ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। শুরুতে অবশ্য ভাল করতে পারেননি, টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি।
তবে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে, সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে – আরো একটি সেঞ্চুরি, আরো একটি ম্যাচ জয়।
একপ্রান্ত আগলে রেখে পুরোটা সময় দলের ত্রাতা হয়েছিলেন এই ব্যাটার। ওপেনিংয়ে নেমে অপরাজিত ছিলেন শেষপর্যন্ত, জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন। তাঁর এমন একক বীরত্ব অনেকদিন মনে রাখতে বাধ্য হবে ক্রিকেট বিশ্ব।
রাখবেই না কেন, এমন পারফরম্যান্সে প্রতিপক্ষ ফ্রাঞ্চাইজির মালিক শাহরুখ খান স্বয়ং বাধ্য হয়েছেন হাততালি দিতে। এদিন মাত্র ৬০ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেছেন এই তারকা।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের ছুড়ে দেয়া ২২৪ রানের পাহাড়সম টার্গেটও তাই কঠিন মনে হয়নি রাজস্থান রয়্যালসের কাছে। তাঁর অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের কল্যাণে দুই উইকেট হাতে রেখে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে সাঞ্জু স্যামসনের দল।
প্রথম দিকে অবশ্য হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেছিলেন ইংলিশ ওপেনার। অন্যপ্রান্তে যশস্বী জয়সওয়াল, রিয়ান পরাগরা যখন বোলারদের শাসন করার চেষ্টা করেছিলেন তখন তিনিও তাঁদের সাথে পাল্লা দিয়েছেন সমান তালে।
কিন্তু, পাওয়ার প্লে শেষ হতেই হুট করে তাঁর ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ বদলে যায়, কমে আসে রান তোলার গতি। শুরুর ১২ বলে ২০ রান করলেও পরের ২২ রান করতে তাঁকে খেলতে হয়েছিল ২২ বল!
মাঝের ওভারে রাজস্থানের ব্যাটিং ধ্বসের কারণেই হয়তো রক্ষণাত্মক হয়ে গিয়েছিলেন এই ডানহাতি। যদিও হাফসেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে এসে আবারো টি-টোয়েন্টি মেজাজে ফিরে আসেন; ফলে টিম রয়্যালসও ফিরে আসে জয়ের লড়াইয়ে। তাঁর একের পর এক বাউন্ডারিতে নির্ধারিত সমীকরণ সহজ হয়ে আসে অনেকটা।
ডেথ ওভারে তবু সম্ভাবনার পাল্লা ভারি ছিল শ্রেয়াস আইয়ারদের দিকেই; কিন্তু রোভম্যান পাওয়েলের খানিকটা সহায়তা আর নিজের অদম্য স্পৃহার জোরে সেই সম্ভাবনার মাপকাঠি বদলে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের সাদা বলের অধিনায়ক। দুর্ধর্ষ মিচেল স্টার্ক কিংবা ইনফর্ম সুনীল নারাইন কেউ পারেননি তাঁর পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে।
বাটলাররা ঠিক এখানেই অনন্য। তাঁরা যেদিন টিকে যান উইকেটে, সেদিন আসলে তাঁদের থামানো অসাধ্য হয়ে উঠে; দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন। অন্তত এবারের আইপিএলে তাঁর দুইটি শতক সেটাই প্রমাণ দেয়।