পাকিস্তান ক্রিকেটের অশনি সংকেত

পুরো ক্রিকেট বিশ্বের মনোযোগ তখন ছিল ভারত বনাম নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে, সেসময় নিজের ভবিষ্যত সম্পর্কে জানতে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার। চার জয় আর পাঁচ পরাজয় সঙ্গী করে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে তৎকালীন বোর্ড প্রধান জাকা আশরাফের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি।

সেসময় অবশ্য বিশ্বকাপ পরবর্তী অস্ট্রেলিয়া সিরিজ নিয়েই পরিকল্পনা করতে ব্যস্ত ছিলেন আর্থার। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ শেষে আমরা লাহেরে ফিরে গিয়েছিলাম। আমরা অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে সবার সাথে কথা বলেছিলাম, এমনকি টিম কম্বিনেশনও ঠিক করে রেখেছিলাম।’

এরই মাঝে বিশ্বকাপ পারফরম্যান্সের রিভিউ দেয়ার জন্য ক্রিকেট বোর্ডে যেতে বলা হয় পাকিস্তানের পুরো টিম ম্যানেজম্যান্টকে। আর সেসময়  মিকি আর্থারের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন জাকা আশরাফ এবং তাঁকে সোজাসুজি জানিয়ে দেন যে সাপোর্ট স্টাফ ও অধিনায়ককে সরিয়ে দেয়া হবে।

সেই মুহূর্তটি পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তখন বোঝা গিয়েছিল একটা পরিবর্তনের ঝড় আসছে; আর্থার, ব্র্যাডবার্ন বা অধিনায়ক বাবর কেউই অস্ট্রেলিয়া যেতে পারছেন না। এরপরই পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজকে একইসাথে হেড কোচ আর টিম ডিরেক্টরের দায়িত্ব দিতে মনস্থির করেছিলেন আশরাফ।

স্রেফ অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করার সময়ে এসব কিছু করেছেন তিনি। অথচ তাঁকে বলা হয়েছিল রুটিনমাফিক কাজ ছাড়া বড় কোন সিদ্ধান্ত না নিতে। এসব নিয়ে মিকি আর্থার বলেন, ‘পারফরম্যান্স রিভিউ ছিল একটা শো-অফ। জাকা যদি সরাসরি বলতো বাদ দেয়ার কথা তাহলে আমি বোধহয় একটু বেশি সম্মান পেতাম।’

বাবর আজমকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, তিনি সেই কথা মেনে নিয়ে তিন ফরম্যাট থেকেই সরে দাঁড়ান। কিন্তু বাদ সাধে মিকি আর তাঁর ম্যানেজম্যান্ট। সাবেক এই কোচ বলেন, ‘আমাদের চুক্তি বাতিলের জন্য নূন্যতম তিন মাসের ক্লজ ছিল। সবাই যেভাবে চেষ্টা করেছি সেটার জন্য হলেও আমরা তিন মাস সময় প্রাপ্য ছিলাম।’

এমন হুটহাট বদল পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য অশনি সংকেত বলেও মনে করছেন তিনি। এই প্রোটিয়া বলেন, ‘যখন নিশ্চয়তা থাকে, পাকিস্তান তখন দারুণ খেলে। কিন্তু যখন অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তখন ক্রিকেটাররা নিজেদের জন্য খেলতে শুরু করে। এটা একটা বিপদজনক ব্যাপার, পাকিস্তান ক্রিকেট এখন এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। এটা সত্যি আমার জন্য হতাশাজনক এবং কষ্টের।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link