শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লজ্জাজনক পরাজয়, এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ভাগ্য এখন তাই সুতোয় ঝুলছে। সুপার ফোরে যেতে চাইলে আফগানিস্তান বিপক্ষে জয়ের কোন বিকল্প নেই, আবার জিতলেও নিশ্চিত নয় পরের রাউন্ড। এমন অবস্থায় তাই টাইগারদের নির্ভর করতে হচ্ছে অনেক যদি কিন্তুর ওপর।
আফগানিস্তান ম্যাচে যদি হেরে যায় সাকিবের দল তখন অবশ্য কোন সমীকরণ ছাড়াই বিমানের টিকিট কাটতে হবে তাদের। তবে জিতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে আফগানিস্তান শ্রীলঙ্কা ম্যাচের জন্য। সে ম্যাচে যদি শ্রীলঙ্কা জয়ের হাসি হাসলে লাভ হবে টিম বাংলাদেশেরও, কেননা সেটি হলে লঙ্কানদের সঙ্গে সুপার ফোরে জায়গা পেয়ে যাবে বাংলাদেশও।
কিন্তু আফগানিস্তান দাসুন শানাকাদের হারিয়ে দিলে তিন দলকেই তাকিয়ে থাকতে হবে রান রেটের দিকে। প্রত্যেক দলই এক ম্যাচ করে জেতায় বাদ পড়তে পারে যে কেউ।
কিন্তু স্বস্তির ব্যাপার, একটা ম্যাচ হারতেই সব শেষ হয়ে যায়নি। এত এত হিসেবে না গিয়ে সরাসরি দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগও আছে বাংলাদেশের সামনে। সেক্ষেত্রে যদিও আফগানিস্তানকে হারাতে হবে নির্দিষ্ট ব্যবধানে। মূলত শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বাংলাদেশের নেট রান রেট এখন -০.৯৫১, এটিকে ০ বা তার বেশি করতে পারলেই ভারত, পাকিস্তানের সাথে খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে।
আর সেজন্য আগে ব্যাটিং করলে কমপক্ষে ৪৮ রানে জিততে হবে মুশফিক, শান্তদের। লাহোরের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে বড় রান তুলে আফগানদের অল্পতে থামিয়ে দিতে পারলেই সব সমালোচনার পথ বন্ধ করতে পারবে টিম টাইগার্স।
পরে ব্যাটিং করলে অবশ্য একটু জটিল হয়ে যায় রান রেটের ব্যাপারটা। এই যেমন, আফগানিস্তান যদি ৩০০ রানের টার্গেট দেয়, তবে সেটা ৪৩.১ বলের মধ্যেই চেজ করতে হবে। আবার লক্ষ্যটা ২৫০ হলে বাংলাদেশকে ৪২ ওভারের মধ্যে জিততে হবে। এছাড়া ২০০ রানের ক্ষেত্রে ৪০.৩ বল এবং ১৫০ রানের ক্ষেত্রে ৩৭.৩ বলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যেতে হবে। বোঝাই যাচ্ছে, আগে ফিল্ডিং করতে হলে আফগানদের দ্রুত অলআউট করার কোন বিকল্প নেই।
এবার নেট রান রেটের পেছনের রহস্যটা খোলাসা করা যাক। যদি বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে নূন্যতম +১.০০ নেট রান রেট সংগ্রহ করতে পারে তাহলে বাংলাদেশের গড় রান রেট দাড়াবে + ০.০২৪৫ তে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে এটা তো শ্রীলঙ্কা চেয়ে অনেক কম, কীভাবে বাংলাদেশ নিশ্চয়তা পাচ্ছে?
আসলে বাকি দুই দলের সঙ্গে তুলনা করলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। বাংলাদেশ +১.০০ রান রেট অর্জন করলে আফগানিস্তানের নেট রান রেট কিন্তু চলে যাবে -১.০০ এ। তাই পরের রাউন্ডে কোয়ালিফাই করতে তাঁদের শ্রীলঙ্কাকে হারাতে হবে +১.০০ রান রেট বা এর বেশি ব্যবধানে। তখন তাঁরা পরের রাউন্ডে যাবে ঠিকই, কিন্তু শ্রীলঙ্কার নেট রান রেট হয়ে যাবে বাংলাদেশের কম।
আবার +১.০০ এর চেয়ে কম ব্যবধানের আফগানিস্তান জিতলে তাঁদের রান রেট হবে ০ এর চেয়ে একটু কম। তখন জিতেও বিদায় নিতে হবে রশিদ, মুজিবদের।
ক্রিকেটের জটিল এসব হিসেব নিকেশ শেষে বলাই যায়, সুপার ফোরে যাওয়ার রাস্তা বাংলাদেশের জন্য একদিকে সহজ আরেকদিকে কঠিন। বড় ব্যবধানে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দিতে পারলে গ্রুপের শেষ ম্যাচের দিকে তাকাতে হবে না আর, আবার কোনরকমে জিতলে প্রার্থনা করা ছাড়া উপায় থাকবে না। কিন্তু যদি হেরে যায় সেক্ষেত্রে নেপালের আগেই ঘরে ফিরতে হবে বাংলাদেশকে।