আমাকে ওয়াসিমের হাত থেকে বাঁচাও!

শেবাগের অভিষেকের পর থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত শেবাগ-টেন্ডুলকারের জুটিই ছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা। অনেক অনেক স্মরণীয় উদ্বোধনী জুটি আছে তাদের। আছে অনেক মজার স্মৃতিও। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি লিগ চলাকালীন ২০০৩ বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের এক স্মৃতি এবার স্মরণ করলেন শেবাগ।

ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনিং জুটি গুলো উপহার দিয়ে এসেছে ভারত। টেন্ডুলকার- গাঙ্গুলি কিংবা টেন্ডুলকার-শেবাগ অথবা রোহিত শর্মা-শিখর ধাওয়ানের উদ্বোধনী জুটি গুলো এখনো ইতিহাসের অন্যতম সেরা জুটি বলে বিবেচনা করা হয়। পরিসংখ্যানের দিক থেকেও সেরা পাঁচে আছে এই তিন জুটিই।

বীরেন্দ্র শেবাগের অভিষেকের পর থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত শেবাগ-টেন্ডুলকারের জুটিই ছিলো বিশ্বের অন্যতম সেরা। অনেক অনেক স্মরণীয় উদ্বোধনী জুটি আছে তাদের। আছে অনেক মজার স্মৃতিও।দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি লিগ চলাকালীন ২০০৩ বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের এক স্মৃতি এবার স্মরণ করলেন শেবাগ।

সাধারণত প্রথম বল কখনোই মোকাবেলা করতেন না শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। তবে ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা গেলো অদ্ভুত সেই ঘটনা। সেই ম্যাচে শচীনের প্রথম স্ট্রাইক নেয়া নিয়ে গবেষণা কম হয়নি। অনেক আলোচনায় অনেকেই নিজেদের মত করে ব্যাখা করেন সেদিন কেন প্রথম স্ট্রাইক নেন টেন্ডুলকার।

অনেকেই বলছেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিজেদের ইনটেন্ট প্রদর্শন করতেই প্রথম বলে ওয়াসিম আকরামের বিরুদ্ধে স্ট্রাইক নিয়েছিলেন শচীন। তবে সেই ম্যাচে শচীনের ওপেনিং পার্টনার শেবাগ এবার জানালেন সেই আলোচিত ঘটনার পেছনের ঘটনা।

শেবাগ বলেন, ‘আমি বাঁহাতি পেসারদের বিপক্ষে ভালো খেলছিলাম না। অনেকবারই আমি প্রথম বলে চামিন্দা ভাসের বিপক্ষে আউট হয়েছি এবং বেশ কয়েকবার নাথান ব্রাকেনের বলেও৷ আউট হয়েছি। যখন আমরা ওয়াসিম ভাইয়ের বিপক্ষে ২০০৩ বিশ্বকাপে খেলছিলাম, আমরা ফিল্ডিং করার সময় শেষ ওভারে আমি শচীনকে বলেছিলাম সে যেন আজকে স্ট্রাইক নেয় প্রথমে।’

শেবাগ তখন শচীনকে বলেন, ‘দেখো ওয়াসিম যদি প্রথমে বোলিং করে আমি আউট হয়ে যেতে পারি। কিন্তু শচীন প্রথম অস্বীকৃতি জানান স্ট্রাইক নিতে। শচীন বলেন, ‘আমি খুবই কুসংস্কারাচ্ছন্ন এসব বিষয়ে। আমার পন্ডিতজি আমাকে সবসময় দুই নম্বরে ব্যাট করতে বলেছেন। তখন শেবাগ টেন্ডুলকারকে বলেন, ‘তুমি বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান আর তুমি পন্ডিতজির কথা বলছো।’

তবুও তখন স্ট্রাইক নিতে রাজি হননি টেন্ডুলকার, ‘আমি দুই নম্বরেই ব্যাট করব। প্রথমে তোমাকেই স্ট্রাইক নিতে হবে।’ এরপর বারবার টেন্ডুলকারে একই অনুরোধ করতে থাকেন শেবাগ। কিন্তু শেবাগের পিঠ চাপড়ে দিয়ে টেন্ডুলকার তাঁকে বলেন, ‘যাও প্যাড পড়ে নাও। আমি স্ট্রাইক নেব না।’

কিন্তু এতবার শেবাগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরেও হঠাৎই নিজের চিন্তা পরিবর্তন করে প্রথম বলে ওয়াসিম আকরামের বিরুদ্ধে স্ট্রাইক নেন শচীন। ২৭৪ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নামা ভারতের দরকার ছিলো উড়ন্ত সূচনার। বিশ্বকাপের এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই সময়মতো জ্বলে উঠলেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’।

ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আক্তারদের নিয়ে গড়া পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণকে শাসন করে ৯৮ রান করেন শচীন। এই ৯৮ রানের ইনিংসকে শচীনের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস বলে বিবেচনা করে থাকেন অনেকেই। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪৯ টি সেঞ্চুরি করলেও সেসব সেঞ্চুরির চেয়েও অনেকাংশেই এগিয়ে শচীনের এই ইনিংস।

হঠাত করেই সে ম্যাচে শচীনের প্রথমে স্ট্রাইক নেয়ার ঘটনা পুরো বিশ্বের কাছে চমক হয়ে এলেও শেবাগ জানালেন তার পেছনের ঘটনা, ‘যখন আমরা ব্যাটিংয়ে নামছিলাম তখন আমি তাঁকে অনুরোধ করছিলাম যেন সে স্ট্রাইক নেয়। সে তখনো না বলে। ত্রিশ গজ বৃত্তের কাছে যাবার আগ পর্যন্তও আমি তাকে একই কথা বলছিলাম এবং সেও বারবার একই উত্তর দিচ্ছিল। কিন্তু হঠাতই উইকেট রক্ষক যেখানে দাঁড়িয়ে থাকে সেদিকে হাঁটা শুরু করলো সে।’

শেবাগ আরো বলেন, ‘ও প্রথম স্ট্রাইক নিল, প্রথম বলে সিঙ্গেল নিল এবং দ্বিতীয় বলেই আমাকে ওয়াসিম আকরামকে মোকাবেলা করতে হয়েছিল। আমি খুবই ভাগ্যবান ছিলাম যে অন্তত প্রথম বল আমাকে মোকাবেলা করতে হয়নি।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...