গ্রুপ পর্বের ম্যাচের ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে; সুপার ফোরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের জন্য তাই রাখা হয়েছিল রিজার্ভ ডে। সেটা অবশ্য কোন উপকার বয়ে আনলো না এশিয়া কাপের মূল আয়োজক দল পাকিস্তানের জন্য। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ভারতের কাছে রেকর্ড ব্যবধানে হারতে হয়েছে বাবর আজমের দলকে।
ব্যাটিং কিংবা বোলিং কেন বিভাগেই ভারতের কাছে পাত্তা পায়নি পাকিস্তান। বিরাট, রাহুলদের জোড়া সেঞ্চুরি আর কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণিতে ২২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে তারা। আর এই পরাজয়ে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা নিয়েও শঙ্কা জেগেছে শাহীন শাহদের।
দুইদিনে গড়ানো ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়নৃত সূচনা পেয়েছিল ভারত। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিলের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১৪ ওভারের মাঝেই দলীয় শতরানের দেখা পায় তারা। তবে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তোলার পর টানা দুই ওভারে দুজনে বিদায় নেন। কিন্তু বিপদ বাড়তে দেননি অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল।
১৭.৫ বলে শুভমান আউট হওয়ার পরে এই দুই ডানহাতি আর উদযাপনের সুযোগ দেননি পাকিস্তানকে। দুজনে ব্যাট করেছেন বাকি সময়, দেখা পেয়েছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে। বিশেষ করে কোহলি ছিলেন বিধ্বংসী, এই ম্যাচেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তেরো হাজার রানের মালিক হয়ে যান তিনি। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৫৬ রান, পাকিস্তানের বিপক্ষে দলটির এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস।
রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে যেমন শুরু প্রয়োজন ছিল পাকিস্তানের, সেটির ঠিক বিপরীত চিত্র মিলেছে। পঞ্চম ওভারে ইমাম উল হককে আউট করে পাক শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন জাসপ্রিত বুমরাহ। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি বাবর আজম, পাওয়ার প্লে শেষ হতেই হার্দিক পান্ডিয়ায় দুর্দান্ত এক ইনসুইংয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পাক অধিনায়ক।
পরের ওভারে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে শিকার করে নেন শার্দুল ঠাকুর। পাকিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা তখন নেমে এসেছিল শূণ্যের কাছে। পুরো ম্যাচে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটির ব্যাটাররা। ওপেনার ফখর জামান ২৭ রান করলেও, স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেননি। এছাড়া আঘা সালমান ফিরেছেন ২৩ রান করে।
কুলদীপ যাদব এদিন ছিলেন সেরা ছন্দে; ফখর, সালমানদের পাশাপাশি শাদাব খান, ইফতেখার আহমেদকেও সাজঘরে ফেরান তিনি। ১২০ রানের মধ্যে সাত উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান তখন লজ্জাজনক পরাজয়ের অপেক্ষায় ছিল। সেই লজ্জা আরো বেড়েছে কুলদীপের ফাইফারে; দলীয় ১২৮ রানের মাথায় ফাহিম আশরাফকে আউট করে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন এই স্পিনার।
হারিস রউফ এবং নাসিম শাহ ইনজুরিতে থাকায় আর ব্যাট করতে নামেননি। ফলে এখানেই থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস আর ভারত পায় বড় জয়। ভারত-পাকিস্তান লড়াই অবশ্য এখনি শেষ হয়ে যাচ্ছে না, ফাইনালে উঠতে পারলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আবারো মুখোমুখি হবে একে অপরের।