রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও বিশ্বকাপ সম্ভাবনার দুয়ার

একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে রয়েছেন প্রায় ১৮ মাস। কিন্তু বিশ্বকাপ যখন দোরগোড়ায় তখন বারবার ঘুরে ফিরে আসছে রবিচন্দন অশ্বিনের নাম। গুঞ্জন আছে, শেষ মুহূর্তে ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ঢুকে যেতে পারেন অভিজ্ঞ এ অফ স্পিনার।

ভারতের ওয়ানডে স্কোয়াডে এই মুহূর্তে রয়েছেন ৪ স্পিনার। রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেলের সাথে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন দুই লেগি যুজবেন্দ্র চাহাল আর চায়নাম্যান কুলদ্বীপ যাদব। স্কোয়াডে ৪ স্পিনার থাকা সত্ত্বেও কেন অশ্বিনের অন্তর্ভুক্তি হতে পারে?

মূলত, জাদেজা আর অক্ষর প্যাটেল একই ধরনের বোলার। একই ভাবে, চাহাল, কুলদ্বীপরাও একমাত্রিক বোলার। যাদের শক্তিমত্তার জায়গা প্রায় একই। আর এ কারণেই ভিন্ন ভ্যারিয়েশনের একজন স্পিনারের তাগিদ অনুভব করছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।

শেষ পর্যন্ত, যেটি কার্যকর হলে, স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ে যেতে পারেন অক্ষর প্যাটেল। অবশ্য ভ্যারিয়েশন ছাড়াও অশ্বিনকে নেওয়ার পেছনে যৌক্তিক কারণ হিসেবে উঠে আসছে ভারতের মাটিতে তাঁর সাফল্যগাঁথার গল্প। কারণ ক্যারিয়ারে ৭১২ টি উইকেটের মধ্যে তিনি ৪৭৩ টি উইকেটই নিয়েছেন ভারতের মাটিতে।

অভিজ্ঞ এ স্পিনার সর্বশেষ ভারতের মাটিতে হওয়া ২০১১ বিশ্বকাপ দলেও ছিলেন। এক যুগ বাদে আবারো ভারতে বসছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এখন সেখানে অশ্বিনের সুযোগ মিলবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে অনেক ধোঁয়াশা। যদিও ভারতের উইকেট কিছুটা স্পিনসহায়ক হওয়ায় অশ্বিনের ভাগ্য খুলে যেতে পারে শেষ মুহূর্তে।

২০১১ বিশ্বকাপে ভারত প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই ৩ স্পিনারকে নিয়ে দল সাজিয়েছিল। এই মুহূর্তে এসে দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজালে সেখানে অক্ষর প্যাটেল, রবীন্দ্র জাদেজা— দুজনকেই দেখা যেতে পারে। কিন্তু একই মানের স্পিনার দিয়ে একাদশ সাজানো প্রক্রিয়ায় প্রতিপক্ষের জন্য এ আক্রমণ কতটা শক্তিশালী হবে, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

অশ্বিনকে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় আরেকটি। এই মুহূর্তে দলে থাকা কোনো স্পিনারই নতুন বলে তেমন পারদর্শী নন। কিন্তু অশ্বিন নতুন কিংবা পুরনো, দুই বলেই বল করতে পারেন। ২০১১ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনিই ম্যাচ শুরু করেছিলেন।

তাছাড়া, অশ্বিন ব্যাটিংটাও করতে পারেন ঠিকঠাক। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ বলের নাটকীয়তায় তাঁর বাউন্ডারিতেই নিশ্চিত হয়েছিল ভারতের জয়।

তবে অশ্বিনের বয়সটা এখন ৩৬। ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেননি প্রায় দেড় বছর। কন্ডিশন বিবেচনায় যতই তিনি বিবেচ্য হোক, ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তাঁর জায়গা পাওয়ার ব্যাপারটা বাস্তবিক অর্থে কঠিনই বটে। অবশ্য শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন প্রায় ১ বছর বিরতির পর। এখন এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও হবে কিনা, তার জন্য আরো কিছু সময়ের অপেক্ষা।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link