ভাবনায় পাক-ভারত সংকট

এই মুহুর্তে ভারত ও পাকিস্তানের আসন্ন ম্যাচটি নিয়েই ক্রিকেট পাড়া সরগরম। টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আগামী ২৩ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছে। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর এই ম্যাচকে ঘিরে ক্রিকেট বিশ্বে আগ্রহের শেষ নেই। এমনিতেও এই দুই দলের মধ্যকার ম্যাচ মানেই তো বিশেষ কিছু। সারা দুনিয়ায় মাতামাতি চলে তাঁদের মধ্যকার ম্যাচ নিয়ে। যেমনটা এখন দেখা যাচ্ছে। কেবল এই এক বছরেই বিশ্ব আসরের সূত্র ধরে ভারত ও পাকিস্তানের এটি তৃতীয় সাক্ষাৎ।

টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে উভয় দলই নিজেদের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে এতদিন সিরিজ খেলায় ব্যস্ত ছিল। ভারত অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে দু’টি টিটোয়েন্টি সিরিজে ২১ ব্যবধানে পরাজিত করেছে। পাকিস্তান এই মাসের শুরুতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাত ম্যাচের সিরিজে ৩৪ ব্যবধানে হেরেছে। পাকিস্তান দলটি শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি হিসেবে নিউজিল্যান্ডে বর্তমানে ত্রিদেশীয় সিরিজে ব্যস্ত। আর বিশ্বকাপের বেশ আগেই অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার জন্য ভারত সেখানে চলে গিয়েছে।

অন্য সব দলের মত, ভারত ও পাকিস্তান ১৫ অক্টোবরের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত বিশ্বকাপ স্কোয়াডকে ঘোষণা করবে। বিশ্বে টি-টোয়েন্টির সেরা দল হওয়ার এই মিশনে নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী দল নিয়েই মাঠে নামতে চাইবে দলগুলো। অবশ্য শতভাগ প্রস্তুত হয়ে লড়াইয়ে নামা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়।

সবগুলো দলেরই কোন না কোন দিক দিয়ে দুর্বলতা থেকেই যাবে। তেমনি ভারত ও পাকিস্তান কেউই পুরোপুরি শতভাগ শক্তিমত্তা নিয়ে এই মিশনে নামতে পারবে না। দুই দলের সমস্যা আবার দুই ধরণের। ভারতের জন্য যেখানে সংকট বোলিং লাইন আপকে ঘিরে, পাকিস্তানের জন্য সেখানে সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম মিডল অর্ডার ক্রাইসিস।

সম্প্রতি ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন ভারত ও পাকিস্তান দুই দলের মধ্যে একটি স্পষ্ট দুর্বলতাকে নির্দেশ করেছেন। হুসেইন বলেন, ‘টিটোয়েন্টি ক্রিকেটের শুরুতে, সবাই কথা বলেছিল যে কীভাবে সাত নম্বর পজিশন নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। ধারণা ছিল তাঁরা বড়জোর সাত বলের মুখোমুখি হবে না হয়। তাই সেখানে অতিরিক্ত বোলার খেলানোর চিন্তা এলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আসলে, যদি আপনার কাছে একটি শক্ত সাত নম্বর পজিশনধারী ব্যাটার থাকে, তাহলে এর মানে হল যে আপনার উপরের ছয়জন একেবারে প্রাণ খুলে খেলতে পারে। ভারতের জন্য এটি একটি সমস্যা যে তাদের দলে পর্যাপ্ত অলরাউন্ডার নেই। পাকিস্তানের ব্যাপারটাও সেরকম। পাকিস্তানের বাবর এবং রিজওয়ান তাদের ব্যাটিংয়ের গভীরতা নিয়ে এতই চিন্তিত থাকে যে, তখন বিশ ওভার খুব দীর্ঘ সময় হয়ে যায়।’

ভারতীয় দল সম্পর্কে সাবেক এই ইংলিশ অধিনায়ক মতামত দেন যে ভারত তাদের আগের বিশ্বকাপ অভিযানেভীরু’ ছিল এবং তাদের সেই খোলস থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। যাই হোক অভিজ্ঞ নাসের হুসেইনের উপদেশকে কর্ণপাত করবে কিনা তা ভারত ও পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। তবে এটাও সত্য যে দলগুলোর অবশ্যই চেষ্টায় থাকবে নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী দলটি বাছাই করেই মাঠে নামার। দিন শেষে বাইশ গজের পারফরমেন্সই খেলার ফলাফল নিশ্চিত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link