সাদা পোশাকে টিম অস্ট্রেলিয়া এখন দারুণ ফর্মে, ঘরের মাঠে কিংবা বাহিরের মাঠে; সবখানেই যেনো সেরাটা দিয়ে আসছে টিম অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিংয়ে ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেনরা দিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের সেরাটা।
বোলাররাও নেই পিছিয়ে; অভিজ্ঞ মিশেল স্টার্কের সাথে প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজেলউডরা দলের প্রয়োজনে উজাড় করে দিচ্ছেন নিজেদের। পিছিয়ে নেই স্পিনার নাথান লিঁওও। এদের ভীরে একজন নিজেকে প্রমাণ কর চলছেন নিয়মিতই। তিনি টিম পেইম; অজিদের সাদা পোশাকের অধিনায়ক।
টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় রাজকীয় ফরম্যাট। এই ফরম্যাটে ব্যাটসম্যান-বোলারদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয় অধিনায়ককে। আপনি যদি টেস্ট ক্রিকেট এবং টিম অস্ট্রেলিয়াকে মাঠে অনুসরণ করেন তাহলে পেইনকে নিয়ো আপনার অল্প হলেও ধারণা থাকার কথা। দেখতে ছোটখাটো গড়নের হলেও বুদ্ধিতে পাকা ৩৬ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
টিম পেইন অধিনায়ক হিসেবে দারুণ এক চরিত্র; যেকোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রেখে দলকে দিয়ে যাচ্ছেন সেরাটা। স্টিভ ওয়াহর পর তিনিই একমাত্র অধিনায়ক যার নেতৃত্বে ২০০১ সালের পর ইংল্যান্ডের মাঠে অ্যাশেজ ট্রফি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।
মাঝের এই আঠারো বছর অসংখ্য নামীদামী অধিনায়ক এলেও অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পারেনি কেউই। এখানে একটু বলে রাখা উচিৎ পূর্বের সিরিজ অস্ট্রেলিয়া জিতেছিলো সেই প্রেক্ষিতে সিরিজ ড্র হলেও রিটেইন ট্রফি উঠেছিলো পেইনের হাতে। ২০০১ সালের পর ইংল্যান্ডের মাঠে প্রথম!
শুধু অধিনায়ক হিসেবে নয়, ব্যাটসম্যান হিসেবেও দলের প্রয়োজনে নিজেকে মেলে ধরেন তিনি। দলের প্রয়োজনে কখনো দ্রুত রান তোলা আবার কখনো ধীরগতিতে রান তুলে প্রতিপক্ষের বোলারদের বিরক্ত করে তুলতে দারুণ পারদর্শী তিনি। দলের বিপদে ভারতের বিপক্ষে গত ম্যাচ তাঁর ইনিংস সেরা কয়েকটি ইনিংসের একটি হয়ে থাকবে।
অধিনায়ক ও ব্যাটসম্যানের পর যেই বিষয়টি তাকে এগিয়ে নিয়েছে অনেকদূর সেটি হলো উইকেট কিপিং! উইকেটের পেছনে দারুণ কার্যকরী একজন চরিত্র পেইন। স্লেজিংয়ের দারুণ দক্ষ পেইন বিপক্ষের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের ভালোই পেইন দিয়ে থাকেন। সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ উইকেটের পেছনের দায়িত্ব ভালো ভাবেই পালন করেছেন, এক ইনিংসে পাঁচ ক্যাচ সহ ম্যাচে নিয়েছেন ৭ ক্যাচ।
ক্রিকেট মাঠে অধিনায়ক পেইন দারুণ একজন ব্যক্তিত্ব! দলের প্রয়োজনে বোলারদেরও ব্যবহার করে সঠিক ভাবে। এখন পর্যন্ত ২০ টেস্টে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করা পেইন জয় পেয়েছেন ১১ টেস্টে, হেরেছেন ছয় টেস্টে এবং ড্র হয় তিন টেস্ট।
পেইনদের মতো বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কদের কারণেই ক্রিকেটের মজা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ক্যারিয়ার শেষে পেইন নামের পাশে আরো কিছু সাফল্য যুক্ত করতে চাইবে নিশ্চয়ই! দেখা যাক ঠাণ্ডা মাথার এই ক্রিকেটার নিজেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারেন!
বলা যায়, বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পর টিম পেইনের ওপর আস্থা রেখে বাইরের বিশ্বের চোখে একটা জুয়া খেলেছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। কিন্তু, বাস্তবে এটা ছিল একটা ‘ক্যালকুলেটিভ রিস্ক’। আস্থার প্রতিদান দিয়ে সেই ঝুঁকিতে জিতে গেছেন টিম পেইন। আর তাঁর ভেলায় ভাসছে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের ভাগ্য। তাঁর মত আগে কেউ আসেনি, ভবিষ্যতেও আসবে কি না সন্দেহ!