প্রায় মাথা ঘেষে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে কিছু একটা ছুটে গেলো। কেমন বোধ করবেন? হকচকতি হবে নিশ্চয়ই। খানিকটা ভীতও হবেন হয়ত অনেকে। আর সেটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু ক্রিকেটের বাইশ গজে প্রতিনিয়ত এই গতি সামলাতে হয় ব্যাটারদের। সেই প্রাচীন কাল থেকে আজ অবধি এই ঝক্কি সামলে চলেছেন তাঁরা।
সেই দিক থেকে এক সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবা অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের প্রাধান্য ছিল। এক সময় পাকিস্তানি বোলাররাও খুব আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। এখনও অবস্থাটা তেমনই। পাকিস্তানে এক সাথে ১৪০-এর ওপর গতিতে বোলিং করেন, এমন বোলারের সংখ্যা নেহায়েৎ নয় – হারিস রউফ, শাহিন শাহ আফ্রিদি কিংবা নাসিম শাহ – তালিকাটা বেশ লম্বা।
পেস বোলিংয়ে গতির দিক থেকে উপমহাদেশে এখনও পাকিস্তানিরাই মেরা। যদিও, বর্তমান সময়ে এই অঞ্চলে পাকিস্তান ছাড়াও অন্যান্য দেশের রয়েছেন এমন গতির ঝড় তোলা ফাস্ট বোলার। সেই সব গতিদানবদের নিয়ে হবে আজকের আলোচনা।
- জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)
এ সময়ের গতিদানবদের আলোচনায় জাসপ্রিত বুমরাহ থাকবেন না তা কি করে হয়। ভিন্নধর্মী বোলিং অ্যাকশনে নিজেকে আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ সুপরিচিত করে ফেলেছিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। তবে এখন তিনি আরো বেশি বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন তাঁর অপ্রতিরোধ্য ইয়র্কার দিয়ে।
সেই সাথে তাঁর ঝুলিতে যুক্ত হয়েছেন গতি। তিনি প্রায়শই ১৪০-৪৫ কিলো/ঘন্টা গতিতে বল করতে পারেন তিনি। তাছাড়া ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫৩.২ কিলো/ঘন্টা গতিতে বল করেছেন। যা কিনা এখন পর্যন্ত তাঁর সর্বোচ্চ বোলিং স্পিড।
- প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা (ভারত)
৬.২ ফুটের এক তোপ যুক্ত হয়েছে ভারতের বোলিং আক্রমণে। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন ভারতের হয়ে। এই অল্প সময়েই তিনি চলে এসেছেন আলোচনায়। এর মূল কারণ দারুণ লাইন লেন্থের সাথে তাঁর করা দ্রুতগতির সব ডেলিভারি।
তরুণ এই বোলার এখনই প্রায় ১৪০ কিলো/ঘন্টা কিংবা তারও বেশি গতিতে বল করতে সক্ষম। আগামী দিনগুলোতে যদি তিনি ১৪৫ এর বেশি গতিতে নিয়মিত বোলিং করেন তবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে।
- লাহিরু কুমারা (শ্রীলঙ্কা)
এইতো কিছুদিন আগেই প্রায় ১৪৬ কিলো/ঘন্টা গতিতে বল করে ঈশান কিষাণের মাথায় আঘাত হানেন লঙ্কান ডান-হাতি বোলার লাহিরু কুমারা। তাঁর সেই আঘাতে আইসিইউতে থাকতে হয়েছেন কিষাণের।
গুরুতর আঘাত না পেলেও লাহিরুর কুমারার সেই বল ভয় ধরিয়েছিলো ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের। বর্তমান সময়ে গতিশীল পেস বোলারদের মধ্যে লাহিরু কুমারাও থাকবেন কোন দ্বিধা ছাড়াই। তিনি নিয়মিত ১৪০ এর বেশি গতিতে নিয়মিত বল করতে পারেন লাহিরু।
- তাসকিন আহমেদ (বাংলাদেশ)
তরুণ মাশরাফি বিন মর্তুজা একসময় দ্যুতি ছড়িয়েছেন। তারপর গতির ভাটায় পড়েছিলো বাংলাদেশ। রুবেল হোসেন সেই আক্ষেপ ঘোচানোর চেষ্টা করেছেন তবে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। গতির সেই খরায় বৃষ্টি হয়ে আভিভূর্ত হয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
১৪৮ কিলো/ঘন্টা তাঁর সর্বোচ্চ গতি। তাছাড়া প্রায়শই তিনি ১৪০ এর আশেপাশে বল করে থাকেন। তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটে সমর্থকরা। তাসকিন তাঁর গতির ঝড় অব্যাহত রাখবেন।
- আবেশ খান (ভারত)
ভারতীয় জাতীয় দলে আরো একজন গতিদানবের অভিষেক ঘটেছে সাম্প্রতিক সময়ে। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত ভাল পারফর্ম করার পাশাপাশি তিনি গতিতে মুগ্ধ করেছেন।
ইতোমধ্যে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অভিষেক হয়ে গেছে তাঁর। তিনিও ১৪০ কিলো/ঘন্টা গতিতে বল করতে পারেন নিয়মিত। মাত্র ২৫ বছর বয়সী এই তরুণ পেসার গতিশীল বলকে আরো সমৃদ্ধ করবে সময়ের সাথে। প্রত্যাশা সবার।