পাকিস্তানের বোলিং রত্ন

এই উপমহাদেশে সবচেয়ে ভাগ্যবান দেশ হিসেবে পাকিস্তানকে আখ্যায়িত করা যায় একটা দিক থেকে। পাকিস্তান ক্রিকেটে কখনো বিশ্বমানের বোলারদের অভাব পড়েছিলো এমন ঘটনার কথা খুব একটা শোনা যায় না। তাছাড়া ইতিহাসেও তেমন নজির খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর। এই একটা দিক থেকে পাকিস্তান তথা পাকিস্তান ক্রিকেট বেশ সৌভাগ্যবান।

এই উপমহাদেশে সবচেয়ে ভাগ্যবান দেশ হিসেবে পাকিস্তানকে আখ্যায়িত করা যায় একটা দিক থেকে। পাকিস্তান ক্রিকেটে কখনো বিশ্বমানের বোলারদের অভাব পড়েছিলো এমন ঘটনার কথা খুব একটা শোনা যায় না। তাছাড়া ইতিহাসেও তেমন নজির খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর। এই একটা দিক থেকে পাকিস্তান তথা পাকিস্তান ক্রিকেট বেশ সৌভাগ্যবান।

যুগে যুগে পাকিস্তান শুধু তাঁদের ক্রিকেটকে নয় পুরো বিশ্ব ক্রিকেটকে উপহার দিয়েছে নান্দনিক সব বোলার। সেই সব বোলারদের মধ্য থেকে সেরাদের সেরা ক’জন বোলার নিয়ে হবে আজকের আলোচনা।

  • সাকলাইন মুশতাক

দুসরাটা বেশ ভালই আয়ত্ত্বে ছিল সাকলাইন মুশতাকের। তাঁর সেই কার্যকরী দুসরা দিয়েই তিনি মূলত এসেছিলেন আলোচনায়। অফ স্পিন বোলিংটাকে আবার নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সাকলাইন মুশতাক। মূলত সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি ছিলেন বেশ দূর্দান্ত একজন বোলার। সেটা অবশ্য তাঁর ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যান দেখেই আন্দাজ করে নেওয়া যায়। ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি ২৮৮ উইকেটের মালিক।

গড়টা ২১.৭৯। এটা বিশ্বাস করা হয় তিনি ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা বোলাদের একজন। লাল বলেও তাঁর ঘূর্ণিতে কাবু হয়েছেন বাঘা-বাঘা সব ব্যাটাররা। সেখানে ২৯.৮৪ গড়ে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ২০৮টি উইকেট। নিঃসন্দেহে তিনি পাকিস্তানের সেরা বোলারদের একজন।

  • আবদুল কাদির

একটা সময় ছিলো যখন ক্রিকেটে বিশ্বমানের কোন স্পিন বোলার খুঁজে পাওয়ার নজির ছিলো বেশ বিরল। সেই সময়ে বিশ্বের সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নিয়েছিলেন আবদুল কাদির। তাঁর সময়ে তাঁর সতীর্থ এবং প্রতিপক্ষ সবাই তাঁকে বিশ্বসেরা বলেই আখ্যায়িত করেছিলেন। মাত্র ৬৭ টেস্ট খেলে তিনি নিয়েছিলেন ২৩২টি টেস্ট উইকেট।

গড়টা ছিলো ত্রিশের ঘরে। তবে ঘরের মাঠে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। সেখানে তাঁর গড় ২৭ এর নিচে। বিদেশের মাটিতেও তিনি বেশ কার্যকরী একজন বোলারই ছিলেন। তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারে ইকোনমি রেট ছিলো মাত্র ২.৭১। এই গড়ে ঘরে-বাইরে সমানতালে পারফর্ম করেছেন আবদুল কাদির।

  • ওয়াকার ইউনুস

বিশ্ব ক্রিকেটে একসময় দাপট দেখিয়েছেন পাকিস্তানের দুই পেসার ওয়াকার ইউনুস ও ওয়াসিম আকরাম। তাঁদের জুঁটি রীতিমতো ত্রাসের কারণ ছিলো। ওয়াকার ইউনুস তাঁর গতিতে কাবু করতেন নামকরা সব ব্যাটারদের। তাছাড়া তাঁর সুবিখ্যাত ‘বানানা সুইং’ খাবি খাইয়েছে সকলকে।

মাত্র ৮৭ টেস্ট খেলে তিনি ৩৭৩টি উইকেট নিয়েছেন  ২৩.৫৬ গড়ে। তাছাড়া ইনিংসের শেষের দিকে তিনি রিভার্স সুইংটাও করাতে পারতেন বেশ। ওয়ানডেতে ওয়াকার ইউনুসের নামের পাশে রয়েছে ৪১৬ উইকেট তাও মাত্র ২৬২ ম্যাচে। এ থেকে আন্দাজ করে নেওয়া যায় ঠিক কতটা বিধ্বংসী বোলার ছিলেন ওয়াকার আর তিনি যে সেরাদের একজন তাতেও আর সন্দেহ থাকে না।

  • ইমরান খান

১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক ইমরান খান পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা বোলারদের একজন তো বটেই, বিশ্বসেরাদের কাতারে তিনি অনায়াসে জায়গা করে নেবেন কোন ধরণের দ্বিধা ছাড়াই। তবে তিনি মূলত ছিলেন অলরাউন্ডার। রিভার্স সুইংয়ের উদ্ভাবক হিসেবে তাকেই গন্য করা হয়। আর বিশ্বাস করা হয় তিনি ওয়াকার ইউনুস এবং ওয়াসিম আকরামদের সেই টোটকাটা দিয়ে গিয়েছিলেন।

৮৮ টেস্ট ম্যাচে ইমরান খান ৩৬২ বার ব্যাটারদের সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন। তাঁর বোলিং গড় ছিলো ২২.৮১। বিশ্বের নানা প্রান্তের বৈরী সব উইকেটে বল করেও কখনো তাঁর বোলিং গড় ২৮.৫০ এর বেশি হয়নি। তাঁকে ছাড়া সত্যিকার অর্থেই বিশ্বসেরা বোলারদের তালিকা অপূর্ণ থেকে যাবে।

  • ওয়াসিম আকরাম

ইমরান খানের কাছ থেকে ওয়াসিম আকরাম শিখে নিয়েছিলেন রিভার্স সুইং। শুধুমাত্র সেই একটা অস্ত্র যে ছিলো তাঁর অস্ত্রাগারে তা কিন্তু নয়। বিচিত্র সব বোলিং স্কিল রপ্ত করেছিলেন বাঁ-হাতি পেসার ওয়াসিম আকরাম। তাঁর ভেরিয়েশনে খাবি খায়নি এমন ব্যাটার বোধহয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আর ওয়াকার ইউনুসের সাথে মিল ধ্বংসলীলায় মেতে উঠতেন ওয়াসিম আকরাম।

টেস্টে ৪১৪ উইকেট আর ওয়ানডেতে ৫০২ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়াসিম আকরাম। দুই ফরম্যাটেই তাঁর গড় তেইশের ঘরে। এমন বোলিং প্রদর্শনই তাঁকে সর্বকালের সেরা বোলারদের একজন বানিয়েছে। তিনি শুধু পাকিস্তান নয় গোটা ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের একজন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...