বাঁ-হাতের সেরা পেস ব্যাটারি!

যেকোনো দলেই একজন বাঁ-হাতি পেস ব্যাটারি মানে একটু স্পেশাল ব্যাপার। যেমন একজন বাঁ-হাতি পেসার যদি কোনো ডান হাতি ব্যাটসম্যানকে ওভার দ্য উইকেট বল করেন তবে বল করার আগেই ব্যাটসম্যান তাঁর পজিশন নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে যান।

বাঁ-হাতি পেস বোলাররা সব সময়ই ক্রিকেটের একটি বিরল আবিষ্কার। দলের অধিনায়কের জন্য বাড়তি প্রাপ্তিও বটে। খেলার যেকোনো ফর্মে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ওয়াসিম আকরাম থেকে চামিন্দা ভাস সবাই বল হাতে নিয়ে দারুণ সাফল্যের স্বাদ পেয়েছেন।

যেকোনো দলেই একজন বাঁ-হাতি পেস ব্যাটারি মানে একটু স্পেশাল ব্যাপার। যেমন একজন বাঁ-হাতি পেসার যদি কোনো ডান হাতি ব্যাটসম্যানকে ওভার দ্য উইকেট বল করেন তবে বল করার আগেই ব্যাটসম্যান তাঁর পজিশন নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে যান। এবারের আয়োজনে একুশ শতকের সেরা পাঁচ বাঁ-হাতি পেস ব্যাটারিদের নিয়ে আলোচনা করা যাক।

  • মিশেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া) 

দীর্ঘদেহী ছয় ফুট সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী এক দৈত্যাকার মানুষ স্টার্ক। প্রাথমিকভাবে সাদা বলের বোলার হিসেবে দেখা গেলেও কিন্তু লাল বলের মাধ্যমে সাফল্যের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। তিনি ধারাবাহিকভাবে মারাত্মক ইনসুইং ইয়র্কার বোলিং করার ক্ষমতা দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন।

২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সফল অভিযানের পেছনে স্টার্কের দারুণ ভূমিকা ছিল। সেবার তিনি ট্রেন্ট বোল্টের সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণের প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন মিশেল স্টার্ক। 

ভবিষ্যতেও করে যাবেন। তাছাড়া ব্যাট হাতে লোয়ার অর্ডারে শক্তিশালী ভূমিকা রাখেন তিনি। বাঁ-হাতি এই পেসার ৭১ টেস্ট ম্যাচে ২৮৭ টি উইকেট নিয়েছেন, ১০৪ টি ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২০৩ টি উইকেট এবং ৫১ টি- টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৬৩ টি উইকেট।  

  • ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)

কিউই পেস শক্তির অন্যতম হাতিয়ার ট্রেন্ট বোল্ট। স্যুইং, দুর্দান্ত গতি আর বাউন্স – সবকিছুর মিশেলে বর্তমান সময়ে তিন ফরম্যাটেই অন্যতম সেরা বোলার নিউজিল্যান্ডের এই বাঁ-হাতি পেসার। ইনস্যুইংয়ের পাশাপাশি ১৪০+ কি.মি গতিতে অনবরত বল ফেলতে পারেন এই পেসার।

দুর্দান্ত ইনস্যুইংটা মূল অস্ত্র, সাথে পেস আর বাউন্সে তিনি হয়ে ওঠেন অদম্য আর অপ্রতিরোধ্য। প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটিং লাইন আপকে একাই গুঁড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। এই বাঁ-হাতি পেসার ৭৮ টেস্টে নিয়েছেন ৩১৭ টি উইকেট। ৯৮  টি ওয়ানডে ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ১৮৫ টি উইকেট এবং ৪৬ টি- টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৬৩ টি উইকেট।

  • জহির খান ( ভারত) 

ভারতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং ভারতীয় পেস আক্রমণের মেরুদণ্ড ছিলেন বাঁ-হাতি পেসার জহির খান। তিনি ঘরের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের জয়ে দারুণ অবদান রেখেছিলেন এবং ২১ উইকেট নিয়ে টুর্ণামেন্টে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন। জহির খান ছিলেন রিভার্স সুইংয়ের মাস্টার।

৯২ টেস্টে তার ঝুলিতে রয়েছে ৩১১ উইকেট। ২০০ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৮২ টি উইকেট এবং ১৭ টি টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ১৭ টি উইকেট। অবসর নিলেও জহিরকে একুশ শতকের সেরা বোলারদের একজন হিসেবে মনে রাখা হবে। তাছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে একাদশ পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ রান গড়ে বিশ্বরেকর্ডের অধিকারীও তিনি।

  • মিশেল জনসন (অস্ট্রেলিয়া) 

জনসন তার শক্তিশালী, পেশীবহুল কাঁধের সাহায্যে পৃষ্ঠ থেকে অতিরিক্ত বাউন্স তৈরি করতে পারে। ২০১৩-১৪ অ্যাশেজ ডাউন আন্ডারে তিনি তার ভয়ঙ্কর গতি, ভয়ঙ্কর বাউন্স এবং সূক্ষ্ম সুইং দিয়ে ইংলিশ লাইন আপকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।

৭৩ টেস্টে তাঁর শিকার ৩১৩ টি উইকেট। ১৫৩ ওয়ানডেতে তাঁর সংগ্রহ ২৩৯ টি উইকেট। ২০ টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৩৮ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে মিচেল জনসন একুশ শতকের সব বাঁ-হাতি পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী।

  • নাথান ব্র্যাকেন (অস্ট্রেলিয়া) 

তিনি একজন বিরল শ্রেণীর বোলার যিনি বলকে বাতাসে এবং টার্ফে পিচ করার পর উভয় দিকেই সুইং করতে পারতেন। যদিও তিনি টেস্ট ক্রিকেটে সফল হননি, কিন্তু নিজেকে একটি দুর্দান্ত সীমিত ওভারের বোলার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।

গতি নয় বরং তার শক্তি ছিল বলের দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং সুইং। হাঁটুর আঘাত ব্র্যাকেন এর ক্যারিয়ারকে বাধাগ্রস্ত করেছিলো। ২০১১ তে অবসর নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই বাঁ-হাতি পেসার ১১৬ ওয়ানডেতে, ব্র্যাকেন ১৭৪ টি উইকেট শিকার করেছিলেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...