হৃদয়ের ব্যাটে রান, ধারাবাহিকতার জয়গান

অবশেষে এক মাইলফলক ছুঁয়ে দেখলেন তাওহীদ হৃদয়। নিজের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ধুঁকেছে। তবে হৃদয় সাবলীল ভঙ্গিমায় দেখিয়ে গেছেন ব্যাটিং করবার নিয়ম।

বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে ভীষণ দুশ্চিন্তার কারণ টপঅর্ডারের বাজে ফর্ম। লিটন দাসের বাজে সময়ের স্থায়িত্ব হয়েছে দীর্ঘ। নতুন সংযোজন নাজমুল হোসেন শান্তর টি-টোয়েন্টিতে সাদামাটা ব্যাটিং প্রদর্শন। এসব মিলিয়ে যাচ্ছে-তাই অবস্থা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের।

তবে মিডল অর্ডার নিয়ে নেই তেমন কোন চিন্তা। কারণ সেখানটায় যে আস্থার প্রতীক হয়ে দৃঢ়তার সাথে খেলে যাচ্ছেন তাওহীদ হৃদয়। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও ঘটেনি যার ব্যতিক্রম। আত্মবিশ্বাসের সাথেই খেলে গেছেন তিনি। আগ্রাসনের দেখাও মিলেছে তাঁর কাছ থেকে।

একেবারে শতভাগ টি-টোয়েন্টি মেজাজের ব্যাটিং করেছেন তিনি। যে ব্লেসিং মুজারাবানিকে খেলতে গিয়ে কুপোকাত হয়েছেন লিটনরা, সেই মুজারাবানির বলে প্যাডেল সুইপ খেলেছেন অনায়াসে। কাটায় কাটায় ১৫০ স্ট্রাইকরেটের একটা ইনিংস খেলে গেছেন তিনি। ৩৮ বলে নিয়েছেন ৫৭ রান। তবে মুজারাবানির এক দুর্দান্ত ইয়োর্কারে আউট হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁকে।

এর আগে অবশ্য তিনি দলের ব্যাটিং অর্ডারের হাল ধরেছেন। ইনিংস বড় করেছেন। সংগ্রহ বাড়িয়েছেন। তবে সেজন্য রানের গতিকে স্লথ হতে দেননি। টপ অর্ডারদের আরও একটি ব্যর্থতার দিনে জাকের আলী অনিকের সাথে জুটি গড়েন। তাঁদের ৮৭ রানের জুটিতেই মাঝারি মানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।

গত ম্যাচে হৃদয় ছুঁয়েছিলেন টি-টোয়েন্টিতে ৩০০ রানের মাইলফলক। এদিন তিনি দেখা পেলেন ব্যক্তিগত অর্ধ-শতকের। এর আগে ৪৭ রানে একবার অপরাজিত থেকেছিলেন তিনি। তাছাড়া ৩০ এর ঘরে প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। তবে পঞ্চাশ থেকে গিয়েছিল অধরা।

এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন হৃদয়। সবাই তাই প্রত্যাশা করেছিল বড় ইনিংস তিনি নিয়ম করে খেলবেন লাল-সবুজ জার্সি গায়ে। হচ্ছেও যেন তাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এখন অবধি ধারাবাহিকভাবে রান করে যাচ্ছেন হৃদয়। যদিও প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলেই অনেকের অনীহা জেগেছে হৃদয়ের ধারাবাহিকতা নিয়ে।

তবে বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হৃদয় যথেষ্ট ভালই করছেন ব্যাট হাতে। ছক্কা হাঁকাচ্ছেন, বাউন্ডারি আদায় করছেন। সেই সাথে রানিং বিটুইন দ্য উইকেটেও যথেষ্ট ভাল তিনি। দূর্বলতা গুলোও ক্রমশ কমে আসছে। এখন বড় দলগুলোর বিপক্ষে তাকে হতে হবে ধারাবাহিক, কেবল তবেই তার দৃঢ়তা, দক্ষতা আর আগ্রাসন যথাযথ মূল্যায়িত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link