হতে পারতো নতুন একটা রূপকথা, হতে পারতো অঘটন নামক উপন্যাসের আরেকটা অধ্যায়। তবে হয়নি এমন কিছুই, রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে প্রত্যাশিত জয় তুলে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এই জয় পেতে যতটুকু ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাঁদের সেটা অপ্রত্যাশিত ছিল। পাপুয়া নিউগিনি যেভাবে লড়েছে সেটি সত্যিই বিস্ময় জাগিয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম পাপুয়া নিউগিনি – একদিকে দুইবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, অন্যদিকে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে আসা দল। অসম এই লড়াইয়ে উইন্ডিজরা উড়িয়ে দিবে প্রতিপক্ষকে সেটিই ছিল সবার ধারণা, কিন্তু সেই ধারণাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নায়কোচিত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে নিউগিনি।
উইন্ডিজদের জন্য জয়ের লক্ষ্যটা ছিল মাত্র ১৩৭ রান; ইনিংস বিরতির সময় সবাই সম্ভবত ধরেই নিয়েছিলেন দুই পয়েন্ট নিশ্চিত দলটির, নেট রান রেট বাড়ানোর দিকেই বরং নজর দিতে হবে তাঁদের। কিন্তু কোথায় কি, প্রথম থেকেই অবিশ্বাস্য প্রত্যয় নিয়ে লড়াই করতে সূচনা করে আসাদা ভালার বাহিনী। শুরুটা করেছিলেন পেসার আলেই নাইও, নিজের প্রথম বলেই জনসন চার্লসের উইকেট তুলে নেন তিনি।
ব্রেন্ডন কিং আর নিকোলাস পুরান এরপর অবশ্য বিপদ বাড়তে দেননি, তবু স্বপ্ন দেখা থামায়নি নিউগিনি। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ক্রমাগত চাপ বাড়িয়েছে, মাঝের ওভারে এসে স্বাগতিক ব্যাটিং লাইনআপকে পুরোপুরি ধসিয়ে দেয় দলটির স্পিনাররা। অধিনায়ক আসাদের পাশাপাশি দারুণ বোলিং করেন জন কারিকো।
যদিও শেষমেশ ইতিহাস রচনা করা হয়নি পাপুয়া নিউগিনির, একপ্রান্ত আগলে রাখা রস্টন চেজ সব হিসেব নিকেশ এলোমেলো করে দেন নিমিষে। কৃষকের অনেকদিনের লালিত স্বপ্ন যেমন একটা ঝড়ে বিনষ্ট হয়ে যায়, তেমনি তাঁর ৪২ রানের ইনিংসের কারণে খুব কাছে এসেও হৃদয় ভেঙেছে টনি উরা, হিরি হিরিদের।
ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে কেন বেশি দলের টুর্নামেন্ট প্রয়োজন সেটাই প্রমাণ হলো এদিন। জিততে না পারলেও পাপুয়া নিউগিনির বীরত্ব নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। ‘তথাকথিত’ ছোট দলগুলো এমন প্রদর্শনী৷ নিয়মিত দেখাতে পারলেই বদলে যাবে ক্রিকেটের চিত্র।