গোটা বিশ্বকে শাসন করে গেছে কত তাবড় তাবড় বোলাররা। কেউ কেউ তো জুটি বেঁধে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন বাইশ গজে। পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম আর ওয়াকার ইউনুস যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তবে দুইজন মিলিয়েই প্রতিপক্ষের দশটি উইকেট বাগিয়ে নেওয়ার ঘটনা প্রায় নেই বললেই চলে।
সেই ১৯৭৭ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম ও শেষবারের মত ঘটেছিল এমন ঘটনা। একই দলের দুই বোলার সেবার পেয়েছিলেন পাঁচটি করে উইকেট। সেবার গ্রেগ চ্যাপেল সঙ্গী হয়েছিলেন গ্যারি কোজিয়ার। অজি এই দুই বোলার সেবার জোট বেঁধে আক্রমণ করেছিলেন ইংরেজ ডেরায়। দশ উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন তারা।
১৯৭৭ সালের গ্রীষ্মকালীন অ্যাশেজ শুরু হওয়ার আগে ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ৪ জুন সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে বার্মিংহামের সবুজ গালিচায় পা রাখে দুই দল। টসে জিতে অজি কাপ্তান ইংল্যান্ডকে বোলিংয়ের নিমন্ত্রণ দেন। ইংল্যান্ড হয়ত তখনও ঘুনাক্ষরে টের পায়নি, কি হতে চলেছে।
১৯ রানের মাথায় ইংল্যান্ড হারায় দুই উইকেট। জোড়া আঘাত হানেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেল। সেখান থেকেই শুরু। এরপর উইকেট নেওয়ার নেশায় মত্ত হয়ে ওঠেন চ্যাপেল। প্রথম ওয়ানডে হেরে চাপেই ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে নামেন আরও একজন, তিনি গ্যারি কোজিয়ার।
ইংলিশদের প্রথম চারটা উইকেট অবশ্য চ্যাপেলই বাগিয়েছিলেন। মিডল অর্ডার থেকে লোয়ার মিডল অর্ডারে মূল আঘাতটা করেছিলেন কোজিয়ার। যার ফলে মাত্র ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় ইংরেজদের ইনিংস। চ্যাপেল ও কোজিয়ার পারস্পারিক লড়াইটা বিনোদনের জোগান দিয়েছিল অবশ্য। পাশাপাশি তা ইতিহাসের পাতাতেও জায়গা করে নিয়েছে।
সে ম্যাচে গ্রেগ চ্যাপেল ৫ উইকেট বাগিয়েছিলেন মাত্র ২০ রানের বিনিময়ে। অন্যদিকে কোজিয়ারের খরচা হয়েছিল ১৮ রান। ওভারও কম করেছিলেন কোজিয়ার। এই দুই বোলারের কাছে অস্ট্রেলিয়ার বাকি বোলাররা সেদিন পাত্তাই পায়নি। যদিও অজি দম্ভ খুব বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়নি। ১০১ রানের বিশাল পরাজয়ে ম্লান হয়ে যায় চ্যাপেল ও কোজিয়ারের কৃতীত্ব।