করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের অবস্থা বিপন্ন। এর প্রভাব পড়েছে ক্রিকেট মহলেও। যদিও, এই মহামারীর মধ্যেও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটারদের নিয়ে পুর্বের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে রাজি নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আগের মতই নিজেদের অবস্থানে অনড় বোর্ড।
এমন এক সময় এই করোনা ভাইরাস হানা দিল, যখন আকবর বাহিনীকে নিয়ে দেশের জন্য বড় একটি পরিকল্পনা প্রনয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল বিসিবি। তাদের অনুশীলনের জন্য বিশ^খ্যাত কোচের পাশাপাশি প্রথম শ্রেনীর সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছিল বোর্ড।
ভারতের মত শক্তিশালী দলকে তিন উইকেটে হারিয়ে অনুর্ধ-১৯ দল বিশ^কাপ শিরোপা জয় করায় বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন অতীতের মত এই খেলোয়াড়রাও যেন হারিয়ে না যায় সেটি তিনি নিশ্চিত করবেন।
এরই ধারাবাহিকতায় দলটিকে দুই বছরের চুক্তিতে নিয়ে আসে বিসিবি। যাদের প্রত্যেকের মাসিক বেতন ধরা হয়েছে এ কলাখ টাকা। এই দলটিকে দুই মাসের জন্য ইংল্যান্ডে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করানো যায় কিনা সেটিও খতিয়ে দেখেছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের ওই সদস্যরা চুক্তি অনুযায়ী মাসিক বেতন হিসেবে একলাখ টাকা করে পেলেও তাদেরকে এখন নিজ গৃহেই বাস করতে হচ্ছে। কারণ কোভিড-১৯ এর সংক্রমনের কারণে মার্চের মধ্যভাগ থেকেই থেমে গেছে দেশের সব ক্রিকেটিং কার্যক্রম।
বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন এক বৈঠক শেষে বলেন, ‘আমরা এই ছেলেদের জন্য সেইরকম মান সম্পন্ন কিছুই ভাবছি, যাতে তারা দেশের জন্য আরো বড় কিছু নিয়ে আসতে পারে। জুনে আমরা ইংল্যান্ডে একটি কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। ইংল্যান্ডে যেহেতু ক্রিকেটীয় কর্মকান্ড শুরু হয়েছে, সেহেতু সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে সেটি করা যেতে পারে। কিন্তু ওই সময়ে আমরা আমাদের কাংখিত কন্ডিশন পাব না। তাই সেটি আপাতত স্থগিত রাখতে হবে। কিন্তু আগামী বছর আমরা অবশ্যই এই ক্যাম্পের আয়োজন করব।’
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির এই পরিচালক বলেন, ‘ছেলেরা ইংল্যান্ডের মাটিতে কিছু ম্যাচ খেলারও সুযোগ পাবে। আমাদের মুল লক্ষ্য হচ্ছে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেয়া। এ জন্য বিশেষজ্ঞ কোচদেরও আমন্ত্রন জানাব। একই সময় আমরা কিছু ম্যাচও খেলব। আমাদের মনে হয় ইংলিশ মৌসুমের শুরুতে যদি আমরা ইংল্যান্ডে খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষন শুরু করতে পারি, তাহলে তারা দারুন অখিজ্ঞতা অর্জন করবে।’
খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে অফ মৌসুমে বৃষ্টির কারণে কিছুই করতে পারব না। কিন্তু আমরা যদি বিদেশের মাটিতে অনুশীলন ও ম্যাচের আয়োজন করতে পারি, তাহলে তাদের দক্ষতা অনেকগুন বেড়ে যাবে এবং নিজেদেরকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ গ্রহনের উপযুক্ত করে গড়তে পারবে।’
সুজন জানান, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এই ক্রিকেটারদের বিশ্বমানের খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইতোমধ্যে বাজেট প্রনয়ন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘তাঁদের নিয়ে আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় বাজেটও প্রস্তুত। কোভিড-১৯ এর কারণে এই বছরটি ভেসে গেছে। কিন্তু আগামী বছরটি এখনো হাতে আছে। বেশি করে ম্যাচ খেলে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে।’