চাঁদ ওঠেনি ভারতের আকাশে

ছেলেটা ক্রিকেটে আত্মনিয়োজন করলো। তারপর, মহকুমা, জেলা, রাজ্যস্তরের একের পর এক বাঁধা সহজেই অতিক্রম করে বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের জার্সি অর্জন করলো। শুধু তাই নয় বিশ্বসেরার মঞ্চে জাতীয় দলের অধিনায়কের মুকুট পরলো। আর, বিশ্বসেরার মঞ্চের শেষ ল্যাপে ‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে’র ম্যাজিক দেখিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের লাইমলাইটে চলে আসলো। আঠারো পেরোতে না পেরোতেই ছেলেটার পরিচিতি, যশ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি আকাশ ছোঁয়ার জোগাড় হল। বিজ্ঞাপনের মুখ হয়ে ওঠা ছেলেটাকে নিয়ে ক্রিকেট পাগল দেশের প্রত্যাশার পারদ তখন গগনচুম্বী।

মধ্যবিত্ত ঘরের একটা ছেলে পারিবারিক ব্যবসা কিংবা চাকুরীজীবি হওয়ার রেওয়াজকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তুলনামূলক অনিশ্চয়তায় ভরা এক ক্যারিয়ার বেছে নিল – ক্রিকেট।

ছেলেটা ক্রিকেটে আত্মনিয়োজন করলো। তারপর, মহকুমা, জেলা, রাজ্যস্তরের একের পর এক বাঁধা সহজেই অতিক্রম করে বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের জার্সি অর্জন করলো। শুধু তাই নয় বিশ্বসেরার মঞ্চে জাতীয় দলের অধিনায়কের মুকুট পরলো। আর, বিশ্বসেরার মঞ্চের শেষ ল্যাপে ‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে’র ম্যাজিক দেখিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের লাইমলাইটে চলে আসলো। আঠারো পেরোতে না পেরোতেই ছেলেটার পরিচিতি, যশ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি আকাশ ছোঁয়ার জোগাড় হল। বিজ্ঞাপনের মুখ হয়ে ওঠা ছেলেটাকে নিয়ে ক্রিকেট পাগল দেশের প্রত্যাশার পারদ তখন গগনচুম্বী।

সাফল্যের আতিশয্যে ডুব দিয়ে মজে থাকা ছেলেটা ধীরে ধীরে তার সাফল্যের চাবিকাঠি ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যেতে থাকলো, ভারতীয় ক্রিকেটের কক্ষপথ থেকে চ্যুত হতে থাকলো।

ঠিক যেন ক্রিকেট বা কোনো খেলাধুলা নিয়ে বানানো বলিউড ছবির ছকে বাঁধা বাণিজ্য সফল চিত্রনাট্য।

এরপর, ছেলেটা একে একে সব দল থেকে বাদ পড়বে। তারপর শুরু হবে প্রত্যাবর্তনের লড়াই। সেই লড়াইয়ের শেষে ছেলেটার ফিরে আসতে পাড়ার সম্ভাবনাকে নিয়ে সবার অবিশ্বাস, সংশয়কে হিমঘরে পাঠিয়ে ছেলেটা এক্কেবারে জাতীয় সিনিয়র দলে সুযোগ পাবে। ছেলেটার ব্যাটে ভর দিয়ে দেশ সাফল্য পাবে। ছবিটির ‘মধুরেন সমাপয়েৎ’ ঘটবে – হ্যাপি ইজ এন্ডিং!

কিন্তু, এখানেই রুপালি পর্দার রঙিন পরাবাস্তব এবং সাদাকালো বাস্তবের মধ্যে গড়ে ওঠা চরম বৈপরীত্য আগামী প্রজন্মকে জোরালোভাবে বার্তা দেয় – পরিশ্রম, তাগিদ, সাফল্যের খিদে, ফোকাস যেমন একজন ভবিষ্যতের তারকাকে সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা বিরাট কোহলি . বানাতে পারে, ঠিক তেমনই পরিশ্রম, তাগিদ, সাফল্যের খিদে, ফোকাসের অভাব একজন সম্ভাবনাময় উঠতি প্রতিভাকে উন্মুক্ত চাঁদও বানাতে পারে।

একজন ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে ২০১২ সালের আইসিসি আয়োজিত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসরের আগে থেকেই উন্মুক্ত চাঁদকে লক্ষ্য করতাম। কোটি কোটি ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীর মত আমিও ওকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। সিনিয়র জাতীয় দলের জার্সিতে চাঁদকে না দেখতে পাওয়ার বেদনাটা চাঁদের মতোই আমাদের মত ক্রিকেটপ্রেমীদেরও নাড়িয়ে দিয়ে যায় – ‘The very thought of not being able to represent my country again literally stops my heartbeat for a while.’

সবাই বিরাট কোহলি হতে পারে না, কেউ কেউ উন্মুক্ত চাঁদও হয়। ‘উন্মুক্ত’ হৃদয়ে আগামী জীবনের শুভেচ্ছা জানাই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...