বাংলাদেশে আসার আগে তিনি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন মোটে ছয়টা। পাকিস্তান সুপার লিগেও সুযোগ মেলে না নিয়মিত। তবে কিছুদিন আগে খেলে এসেছেন টি-টেন লিগে। সেখানে ব্যাট হাতে ঝড়ও তুলেছেন। ফলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ছিল উসমান খানের জন্য প্রমাণের মঞ্চ। যেখানে পারফর্ম করে বার্তা দিতে পারেন নিজ দেশে।
সাধারণত গল্পটা উল্টো হয়। নিজ দেশে প্রমাণ করে বাইরের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ গুলোর নজর কেড়ে থাকেন ক্রিকেটাররা। তবে উসমান খানের জন্য হতে চলেছে তাঁর উল্টোটা। উসমান প্রমাণ করতে পারেননি নিজ দেশ পাকিস্তানে। দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয়েছে বছর পাঁচেক আগে। তবে সুযোগ মেলে না।
২০১৭ সালে কায়েদে আজম ট্রফিতে করাচি হোয়াইটসের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক। তবে করাচির এই ব্যাটার গত পাঁচ বছরে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন মোটে দুটি। ওদিকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় বছর দুয়েক আগে। আর এই দুই বছরে খেলছেন মাত্র সাতটা ম্যাচ। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে অভিষেক হয় পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল)।
ফলে পাকিস্তানের জাতীয় দলের ধারেকাছেও কখনো যেতে পারেননি উসমান খান। এমন একজন ব্যাটারকেই খুঁজে বের করেছে বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এত বড় আসরে, বিদেশি কোটায় খেলা উসমানের জন্যও বুঝি বিস্ময়ের।
উসমান সেই বিস্ময় ভেঙে বিপিএলকে বেঁছে নিলেন প্রমাণের মঞ্চ হিসেবেই। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও সুযোগ পেয়েছিলেন। সেদিন করতে পেরেছিলেন মাত্র দুই রান। চট্টগ্রাম অবশ্য ভরসা রেখেছে এই পাকিস্তানির উপর। আজ খুলনার বিপক্ষে প্রতিদানও দিলের সেই ভরসার।
ওপেন করতে নেমে চট্টগ্রামকে এনে দিয়েছেন উড়ন্ত শুরু। আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও ডাউডের সাথে মিলে গড়েছেন ১৪১ রানের জুটি। ডাউড আউট হয়ে ফিরলেও থামেনি উসমানের তরবারি। খুলনার বোলারদের তুলোধুনো করেছেন এই ব্যাটার।
ওদিকে আগে ব্যাট করতে নামা খুলনার হয়ে ঝড় তুলেছিলেন আরেক পাকিস্তানি ব্যাটার আজম খান। তিনিও দেখা পেয়েছিলেন সেঞ্চুরির। ৫৮ বল থেকে ১০৯ রান করেছিলেন আজম। ছয় মেরেছিলেন ৯ টি। তাঁর সেঞ্চুরিতে খুলনা করতে পেরেছিল ১৭৮ রান।
আজম সেঞ্চুরি করলেও খুলনার বাকি ব্যাটাররা ছিলেন ব্যর্থ। কেউই বড় স্কোর করতে পারেননি। তামিম ইকবাল ৪০ রান করতে খেলে ফেলেছিলেন ৩৭ বল। ফলে ব্যাটিং উইকেটে খুলনা ১৭৯ রানের টার্গেট যথেষ্ট ছিল না।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সেটিই মনে করিয়ে দিলেন উসমান খান। সেঞ্চুরি হাকালেন তিনিও। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। আজকের আগ পর্যন্ত যার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রানই ছিল মোট ১৫২। তিনি আজ খেললেন ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস।
মাত্র ৫৮ বলের এই ইনিংসটা সাজিয়েছেন ১০ টি চার ও ৫ টি ছয় দিয়ে। ব্যাটিং করেছেন ১৭৭.৫৮ স্ট্রাইক রেটে। দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন। তাঁর ইনিংসের পর নয় উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে চট্টগ্রাম। এবার হয়তো তাঁকে নিয়ে খানিকটা আগ্রহ দেখাবে তাঁর দেশ। এমন সেঞ্চুরির পর পাকিস্তান সুপার লিগেও হয়তো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন উসমান।