ফিটনেসের ক্ষেত্রে কোনো আপস নয়- এটাই যেন বিরাট কোহলির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সফলতার মূলমন্ত্র। ভারতীয় দলের অধিনায়ক থাকার সময় নির্দিষ্ট ভাবে ক্রিকেটারদের ফিটনেস নিয়েই বেশি তাগিদ দিতেন তিনি। নিজেও ফিটনেস নিয়ে প্রচুর কাজ করতেন। সব সময় বিশ্বাস করতেন, বর্তমান সময়ের আধুনিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে ফিটনেসের কোনো বিকল্প নেই।
তবে খুব বেশি ফিটনেস না থাকলেই যে মাঠের ক্রিকেটে বড় ক্রিকেটার হওয়া যায় না, ব্যাপারটা তেমন না। একটু কান পাতলেই শোনা যায়, শচীন, সৌরভ, শেবাগ অনেক সময় নাকি তাদের খেলোয়াড়ী জীবনে বিপটেস্টেও উর্ত্তীর্ণ হতে পারতেন না।
তবে, তাতে তো আর তাদের গ্রেট হওয়া আটকায়নি। এখানেই অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন বিরাট কোহলি। ব্যাটার কোহলি ফিটনেসের দিক দিয়েও সেরাদের কাতারে। বয়স ত্রিশ পেরিয়েছে বছর তিনেক আগেই। তারপরও ফিটনেসের দিক দিয়ে কোহলি এখনও রয়েছেন শীর্ষে।
সম্প্রতি প্রকাশিত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই)-এর এক প্রতিবেদন বলছে, বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারের মধ্যে ফিটনেসে সবার চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে কোহলি। ২০২১-২২ মৌসুমে ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি (এনসিএ) কী কী কাজ করেছে, তার বর্ণনা দিয়ে একট প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বিসিসিআইর সিইও হেমাং আমিন।
সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে এনসিএর চিকিৎসক দল ৭০ ক্রিকেটারের ৯৬টি গুরুতর চোট নিয়ে কাজ করেছে। তাঁদের মধ্যে ভারত জাতীয় দলের চুক্তিবদ্ধ ২৩ জন, ‘এ’ দলের ২৫, যুব দলের ১, নারী দলের ৭ এবং রাজ্য দলের ১৪ জন ক্রিকেটার আছেন।
সে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে বিরাট কোহলিকে ফিটনেস জনিত কিংবা ইনজুরি ইস্যুর কারণে কখনোই ব্যাঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে শরণাপন্ন হতে হয়নি। পুরো বছর জুড়ে কোহলি ফিটনেস নিয়ে নির্দিষ্টভাবে প্রচুর কাজ করেন। এজন্য কখনোই হ্যামস্ট্রিং কিংবা মাসলের ইনজুরিতে তাঁকে পড়তে দেখা যায় না।
এ ছাড়া আরও বলা হয়, ৩৩ বছর বয়সী কোহলি চোটে না পড়লেও তাঁর চেয়ে ১০ বছর কমবয়সী অনেকে একাধিকবার এনসিএতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছেন। যার মধ্যে আছেন শুভমান গিল, পৃথ্বীশ, ঋতুরাজ গায়কোয়াদ, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, কেএস ভরত, কমলেশ নাগারকোটি, সাঞ্জু স্যামসন, ইশান কিষাণ, কার্তিক তিয়াগি, নবদীপ সাইনি ও রাহুল চাহার।
কোহলি সর্বশেষ চোটে পড়েছিলেন ২০১৮ সালে। সে বছর পিঠের চোটে সারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে পারেননি তিনি। তবে এরপর নিজেকে এমনভাবে ফিট রেখেছেন যে মাঠে বা মাঠের বাইরে বড় কোনো চোটের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে।