ব্যাট হাতে গোল্ডেন ডাক। তবুও ভিন্নরকম সেঞ্চুরিতে বিরাট কোহলি। ভারতের সাবেক এই অধিনায়কের সেঞ্চুরি খরা নিয়ে আলোচনাটা কম হচ্ছেনা। প্রায় তিন বছরের বেশি সময় ধরেই বিরাটের ব্যাটে নেই সেঞ্চুরির দেখা। নামটা বিরাট কোহলি বলেই সেঞ্চুরি নিয়ে এত আলোচনা কিংবা সমালোচনা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হওয়ার মধ্যে দিয়ে এখন ‘একশো ম্যাচ’ সেঞ্চুরিহীন বিরাট!
প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে গেল ১০০ ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পাননি বিরাট। সবশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৯ সালে টেস্টে সেঞ্চুরির পর কেটে গেছে প্রায় তিন বছর। এর মধ্যে খেলে ফেলেছেন ১৭ টেস্ট, ২৫ টি-টোয়েন্টি ও ৩৭টি আইপিএলের ম্যাচ। তবুও সেই কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি ধরা দেয়নি বিরাটের কাছে।
সেঞ্চুরি নিজের সাথে সাথে যেন বিরাটের ব্যাট হাতে আগ্রাসী রূপটাও ছিনিয়ে নিয়েছে। রানের ফোয়ারা ছুঁটিয়ে ২২ গজ দাপিয়ে বেড়ানো সেই বিরাটের দেখা নেই দীর্ঘ সময়। কত দিন, কত মাস, কত বছর পেরোলো – দিনে দিনে সেঞ্চুরির খোঁজে বিরাট যেন নিজেকেই হারিয়ে ফেলছেন। এবারের আইপিএলেও ব্যাট হাতে ছন্দের দেখাটা পাচ্ছেন না বিরাট। ছন্দে ফেরার লড়াইয়ে খুঁজে পেয়েছেন শুধুই ব্যর্থতা।
৭ ম্যাচ। ১১৯ রান। গড় ১৯.৮৩। স্ট্রাইক রেট ১২৯.৫। আইপিএলে এবারের আসরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর জার্সি গায়ে প্রথম সাত ম্যাচে স্রেফ এই পরিসংখ্যান দেখে বোঝার উপায় নেই এটি বিরাটের। বিরাটের নাম কিংবা সামর্থ্যের তুলনায় এই রান আর গড়টা একেবারেই যৎসামান্য। জাতীয় দলেও আছেন অফ ফর্মে। রান পেলেও ধারাবাহিকতা রাখতে পারছেন না। আউটও হচ্ছেন দৃষ্টি কটু। ফরম্যাট কিংবা টুর্নামেন্ট বদলালেও বিরাট ভাগ্য যেন কোনোভাবেই বদলাচ্ছে না।
একেবারেই যে তিনি রান পাচ্ছেন না এমন না। জাতীয় দলের জার্সিতে ফিফটির দেখা মিলছে প্রায়ই। কিন্তু বিরাটের সামর্থ্যের কাছে সমর্থকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এই রানটা নিতান্তই সাধারণ। ধীরে ধীরে পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসের সংখ্যাও কমছে। শূন্য রানে কিংবা এক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েও ফিরছেন প্রায়ই। এলোমেলো এই বিরাট যেন কোনোভাবেই ব্যর্থতার কালো ছায়া পাশ কাটিয়ে নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিংটা করতে পারছেন না।
বছর তিনেক আগেও শচীনের একশো সেঞ্চুরির রেকর্ডটা ছিল হুমকির মুখে। সাবেক অনেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সমর্থকদের ধারণাও ছিল শচীনের রেকর্ডটা ভেঙে ফেলবেন বিরাট। শচীন নিজেও হয়ত মনে মনে এমনটাই আন্দাজ করেছিলেন। কিন্তু মূহুর্তেই যে পালটে যেতে পারে সব। প্রকৃতির এই অমোঘ নিয়মের কাছে হার মেনেছে বিরাটও। ব্যর্থতার শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে পারছেন না কোনোভাবেই।
একেবারেই যে তিনি রান পাচ্ছেন না এমন না। জাতীয় দলের জার্সিতে ফিফটির দেখা মিলছে প্রায়ই। কিন্তু বিরাটের সামর্থ্যের কাছে সমর্থকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এই রানটা নিতান্তই সাধারণ। ধীরে ধীরে পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসের সংখ্যাও কমছে। শূন্য রানে কিংবা এক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েও ফিরছেন প্রায়ই। এলোমেলো এই বিরাট যেন কোনোভাবেই ব্যর্থতার কালো ছায়া পাশ কাটিয়ে নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিংটা করতে পারছেন না।
‘বিরাট স্বরূপে ফিরবেন’ – এই আশার বাণী নিয়ে তিন বছর ধরেই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন সমর্থকরা। বিরাটের চেহারায়ও হতাশার ছাপ স্পষ্ট। তিনি নিজেও যেন এই ব্যর্থতার উত্তর মেলাতে পারছেন না। হয়ত সমস্যা খুঁজে পাচ্ছেন না, নয়ত সমস্যার সঠিক সমাধাণটা মিলছে না। বিরাটের এমন অসহায়ত্বটা ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তো বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলছেন। ২২ গজকে নিজের সাম্রাজ্য বানিয়ে একের পর এক রেকর্ডে নাম তুলছিলেন। শুরু থেকেই ২২ গজ দাপিয়ে বেড়ানো সেই বিরাট হঠাৎ যেন নিষ্প্রভ হয়ে গেলেন। তিনি ফিরবেন সমর্থকদের এমন আস্থাটা এখনও কমেনি।
নিজের ব্যাটিং শৈলিতে বছরের পর বছর যে অবদান তিনি ক্রিকেটে রেখেছেন সেটা হয়ত অপূরণীয়। একটা সেঞ্চুরি হয়ত বিরাটের ক্যারিয়ারে সব কালো ছায়া সরিয়ে আবার সফলতার উজ্জ্বল আলোর দেখা দিতে পারে। বিরাট কবে পাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত সেই ৭১ তম সেঞ্চুরি? – স্বয়ং ঈশ্বর ছাড়া সেই উত্তরটা আপাতত কারোর জানা নেই।