বিরাট কি শচীনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন?

দুই প্রজন্মের দুই ক্রিকেটারের তুলনা করা সবসময়ই বোকামি; কেননা বদলে যায় পরিস্থিতি, প্রেক্ষাপট। তবু থামানো যায় না ক্রিকেটপ্রেমী মনকে, সে ঠিকই বিভিন্ন অজুহাতে ভিন্ন সময়ের দুজনের মাঝে বিচারের মাপকাঠি বসায়। এই যেমন শচীন টেন্ডুলকার আর বিরাট কোহলিকে নিয়ে বারবারই তো কথা ওঠে ক্রিকেট আড্ডায়।

এবার অবশ্য সেঞ্চুরির হিসেবে ক্রিকেট ঈশ্বরকে পিছনে ফেলেছেন বিরাট কোহলি। না, শততম শতকের রেকর্ড ভেঙে ফেলেননি তিনি; তবে পাঁচশ তম ম্যাচ শেষে শচীনের চেয়ে এক সেঞ্চুরি বেশি করার দারুণ এক কীর্তি গড়েছেন বিরাট। এবার হয়তো পূর্বসূরির সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করার মাইলফলক ছুঁতে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে পারবেন এই তারকা।

ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে টেন্ডুলকারের ঝুলিতে ছিল ৭৫টি তিন অঙ্কের ইনিংস, আর বিরাট কোহলি ইতোমধ্যে ৭৬ বার সেই ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন। আর এর মধ্য দিয়ে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে পাঁচশোতম ম্যাচে সেঞ্চুরি করার বিরল এক রেকর্ড গড়েন ভারতীয় ক্রিকেটের বরপুত্র।

২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেলমেট খুলে উদযাপনের পর কেটে গিয়েছে ৩৬ ইনিংস, বিদেশের মাটিতে লম্বা সময় আর সেই উদযাপনের উপলক্ষ পাননি বিরাট কোহলি, উইন্ডিজের বিপক্ষে ১২১ রানের দুর্দান্ত এক শতক হাঁকিয়ে সেই খরা কাটিয়েছেন তিনি। চার নম্বর পজিশনে এটি তাঁর ২৫তম শতক, কেবলমাত্র মাহেলা জয়াবর্ধনে, শচীন টেন্ডুলকার এবং জ্যাক ক্যালিস এই পজিশনে খেলে এর চেয়ে বেশি বেশিবার তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছে ছিলেন।

শুধু তাই নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ভারতের সিরিজ ক্রিকেট ইতিহাসের বইয়ে আরো অনেক চমকপ্রদ রেকর্ড যোগ করেছে। রোহিত শর্মার কথাই ধরা যাক, উইন্ডিজদের বিপক্ষে চার ইনিংসে এক সেঞ্চুরি আর দুই হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে ২৮০ রান করেছেন তিনি; যা অধিনায়ক রোহিতের সেরা পারফরম্যান্স। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজের ২০০০ রানও পূর্ণ করেছেন এই ওপেনার।

আবার অধিনায়ক হিসেবে একটানা সর্বোচ্চ ৩০ বা তদূর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড হয়েছে এই সিরিজে। অধিনায়ক হিসেবে দুই ম্যাচের সিরিজের সেরা রান সংগ্রাহকও এখন রোহিত শর্মা। এছাড়া টানা তিন ফিফটির দেখা পেয়েছেন তিনি, এর আগে কেবল সৌরভ গাঙ্গুলি ক্যাপ্টেন হিসেবে এমন কিছু করতে পেরেছিলেন।

রেকর্ড গড়ার এই ম্যাচে বাদ যাননি ঈশান কিষাণও; দ্রুত রান তুলতে এই উইকেট রক্ষককে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আগেভাগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাত্র ৩৪ বলে ৫২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। তাতেই উইকেটরক্ষক হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেটে অন্তত হাফসেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন এই উদীয়মান ব্যাটসম্যান।

ক্যারিবীয় সফর স্মরণীয় করে রাখতে ভুল হয়নি সিরাজ, অশ্বিনদেরও। মোহাম্মদ সিরাজ তো নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারের দেখা পেয়েছেন। এছাড়া অষ্টমবারের মত উইন্ডিজ কাপ্তান ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে আউট করেছেন অশ্বিন।

জয়ের জন্য দ্বিতীয় টেস্টের শেষদিন স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ২৮৯ রানের, আর এশিয়ান জায়ান্টদের চোখ ছিল অলআউট করার দিকে। যদিও বৃষ্টিবাধায় রোমাঞ্চকর সেই লড়াই মাঠে গড়ায়নি; তবে রেকর্ডে মোড়ানো সিরিজ উপভোগ করতে ছাড়েননি ভক্ত-সমর্থকেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link