কিং কোহলি ইজ ব্যাক। ফাইনালের মঞ্চেই নিজের সক্ষমতার প্রমাণ রাখলেন। দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেছেন। বিশ্বকাপের শেষবেলায় চিরায়ত কোহলির চিত্র এঁকেছেন। বাইশ গজের ওই ধূসর মাটিতে রঙ ছড়িয়ে দিলেন। ওই দেড় কেজির কাঠের টুকরো বিরাটের হাতে এলেই বনে যায় বর্ণিল চিত্রকর্মের রঙিন তুলি।
রোহিত শর্মা বলেছিলেন যে কোহলি তাকে জমিয়ে রেখেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্যে। অন্যদিকে ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেছিলেন যে বিরাটের ব্যাটে বড় কিছু আসতে চলেছে। অধিনায়ক ও কোচের সেই আস্থার প্রতিদান অবশেষে দিয়েছেন বিরাট কোহলি। ফাইনালের মঞ্চে নিজের ‘ক্লাস’ দেখালেন এই কিংবদন্তি।
টসে জিতে ব্যাটিং করবার সিদ্ধান্ত ভারতের। শুরুটাও হয়েছিল দারুণ। মার্কো ইয়ানসের প্রথম ওভারে তিনখানা চার হাকিয়ে শুভ সূচনা কোহলিই করেছিলেন। কিন্তু হুট করেই স্রোত বইতে শুরু করে উলটো দিকে। ১১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ের খাদে পড়তে শুরু করে টিম ইন্ডিয়া।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্বটা আরও একবার নিজের কাঁধে তুলে নেন বিরাট। শুরুর সেই আগ্রাসন অবশ্য সময়ের সাথে বদলে ফেলতে হয়েছে বিরাটকে। সেটা অবশ্য পরিস্থিতির প্রয়োজনেই। ভারতের প্রথম উইকেট পতনের আগে প্রায় ২৮০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন কোহলি।
কিন্তু সময়ের সাথে স্লথ হয়েছে তার রান তোলার গতি। কেননা রোহিত শর্মা, ঋষাভ পান্ত ও সুরিয়াকুমার যাদবের পর দ্রুত রান তোলার দায়িত্বটা নিজের কাঁধে তুলে নেন অক্ষর প্যাটেল। কোহলির দায়িত্ব ছিল তখন নিজের ইনিংসটি বড় করা। আস্থাভাজন কেউ একজন বাইশ গজে রয়েছেন এমন এক স্বস্তি ড্রেসিং রুমে ছড়িয়ে দেওয়া। সে কাজটাই করে গেছেন কোহলি।
তেমনটি করতে গিয়ে ৪৮ বলে অর্ধশতকের দেখা পান বিরাট। এবারের বিশ্বকাপে তার প্রথম হাফসেঞ্চুরি। মন্থর গতিতে কোহলি অর্ধশত রান তুলে বিপাকে ফেলেছেন ভারতকে- এমন অভিমত নিয়ে হয়ত হাজির হবে বলে ঠিক করে রেখেছিল সমালোচকরা। কিন্তু তেমনটিও হতে দেননি কোহলি।
১৭ তম ওভারের প্রথম বলে কাগিসো রাবাদাকে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান বিরাট। সেই ওভারে একাই নেন ১৪ রান নেন তিনি। শেষ অবধি ৫৯ বলে ৭৬ রান করে আউট হয়ে যান কোহলি। তাতে করে বেশ লড়াকু এই সংগ্রহের দিকেই এগিয়েছে টিম ইন্ডিয়া।
১২৮ এর একটু বেশি স্ট্রাইকরেটের এই ইনিংসটি হয়ত অনেকের কাছেই দৃষ্টিকটু ঠেকবে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় দারুণ এক কার্যকর ইনিংস খেলে গেছেন কোহলি। আরও একটিবার কোহলি প্রমাণ করলেন, তিনি বড় ম্যাচের মহানায়ক।