হাসারাঙ্গা ও একটি রঙিন শিরোপা

অথচ এশিয়া কাপের  শুরুটা ছিল একেবারেই হতাশার। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে রীতিমত উড়ে গিয়ে লংকানরা। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে কথার লড়াইও শুরু হয়। আর এই কথার লড়াই বুঝি তাতিয়ে দিয়েছিল লংকানদের। বাংলাদেশের বিপক্ষ ম্যাচ থেকে দেখা গেল এক নতুন ক্রিকেটীয় ব্র্যান্ড।

রাত হলেই যেন আলোকিত হয়ে উঠে দুবাই শহর। তবে সেই শহর আজ আরো বেশি রঙিন হয়ে উঠলো। হারিস রউফের স্ট্যাম্পটা উড়িয়ে দিয়েই চামিকা করুনারত্নের ভো দৌড়। আর তাঁর পিছনে পিছনে পুরো শ্রীলঙ্কা দল। দুবাই স্টেডিয়ামেও আলোর ঝলকানি। লাল-নীল আলোর উৎসব যেন। যে উৎসব দুবাই থেকে ছড়িয়ে পড়ে কলম্বো কিংবা গলে। রঙিন হয়ে উঠলো লড়াই করতে থাকা একটা দেশ, শ্রীলঙ্কা।

অথচ এশিয়া কাপের  শুরুটা ছিল একেবারেই হতাশার। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে রীতিমত উড়ে গিয়ে লংকানরা। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে কথার লড়াইও শুরু হয়। আর এই কথার লড়াই বুঝি তাতিয়ে দিয়েছিল লংকানদের। বাংলাদেশের বিপক্ষ ম্যাচ থেকে দেখা গেল এক নতুন ক্রিকেটীয় ব্র্যান্ড।

এরপর পুরো এশিয়া কাপে আর কোন ম্যাচই হারেনি দলটি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নতুন ব্র্যান্ডের শ্রীলঙ্কাকে দেখা গেল। অনেকদিন ধরে ক্রিকেট মাঠে ধুকতে থাকা শ্রীলঙ্কা তাঁদের প্রত্যাবর্তনের জন্য বেঁছে নিল এশিয়া কাপকে। অর্থনীতির চাকা থমকে যাওয়া একটা দেশও আজ সবকিছু ভুলে উৎসবে মেতে উঠলো।

 

শেষ চার ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ৬১ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বাস্তবতায় খুব কঠিন কিছুনা। এছাড়া তখনো বাইশ গজে ছিলেন সেট ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। এরপর আসিফ আলী, খুশদিল শাহও ছিলেন। এমন সময়ই অধিনায়ক দাসুন শানাকা বোলিংয়ে আনলেন তাঁর সেরা অস্ত্রটা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

আর একটা ওভারেই ম্যাচের সব নাটকীয়তার ইতি টানলেন তিনি। শ্রীলঙ্কাকে এশিয়া কাপ জেতানোর পণ করেই যেন বলটা হাতে তুলে নিয়েছেন। একেবারে প্রথম বলেই ফেরালেন মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। এরপরই যেন পাকিস্তানের সবকিছু একটু থমকে গেল। তবুও হাসারাঙ্গা থামলেন না।

পাকিস্তানের শেষ দুই ভরসা হিসেবে বাইশ গজে ছিলেন আসিফ আলী ও খুশদিল শাহ। আর শেষ আশাটা যেন তছনছ করে দিলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ইনিংসের সতেরো তম ওভারে এসে দুজনকেই টপাটপ তুলে নিলেন। ওই ওভারেই পাকিস্তানের স্বপ্ন ভাঙলেন, নিশ্চিত করলেন শ্রীলঙ্কার শিরোপা।

 

পুরো এশিয়া কাপে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলা পাকিস্তানকে যেন শেষ দুই ম্যাচে মাটিতে নামিয়ে আনলো লংকানরা। যদিও শেষ ম্যাচটায় পাকিস্তানের বিপক্ষে হাসারাঙ্গার বোলিংটা ভালো হয়নি। তাই ফাইনালের আগে নিশ্চয়ই একটু চিন্তিত ছিলেন। তবে শ্রীলঙ্কা দল তাঁদের ট্রাম্পকার্ডের উপর ভরসা রেখেছে।

আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সবচেয়ে বড় ত্রাস ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাও কাজের কাজটা করে দিয়েছেন বড় ম্যাচে। আর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা তো বড় ম্যাচেরই ক্রিকেটার। হাসারাঙ্গার এই একটা ওভারেই পাকিস্তান ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটা উইকেট তুলে নেন এই লেগ স্পিনার।

চার ওভার বোলিং করে খরচ করেছেন মাত্র ২৭ রান। প্রথম তিন ওভার বোলিং করে কোন উইকেট না পেলেও শেষ ওভারে যেন পুষিয়ে দিলেন। ধুকতে থাকা একটা গোটা জাতিকে শিরোপা জয়ের স্বাদ দিলেন। ক্রিকেট মাঠে হারিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার ব্র্যান্ডটাও আবার ফিরিয়ে আনলেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...