ঠিকঠাক জমছে না শরিফুল-তাসকিন জুটি!

শক্তির বিচারে শুরু থেকেই পিছিয়ে ছিল ঢাকা। তবে তাদের প্রধান ভরসা হয়ে ছিল শরিফুল-তাসকিন জুটি। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে যে দুজন পেসারকে বর্তমানে অটোমেটিক চয়েস ভাবা হয়, সেই দুজনকেই একসাথে দলে পেয়েছিল ঢাকা। তাই প্রত্যাশাটাও ছিল আকাশ ছোঁয়া। এই দুই পেসারের কেউ না কেউ একদিন ম্যাচের ফলভাগ্য পাল্টে দেবে, এমনটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু দুই পেসারের মিশেলটা যেন ঠিকঠাকভাবে হচ্ছে না।

এবারের বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের সেই দুরন্ত বোলিংয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে হারিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিল ‘দুর্দান্ত ঢাকা’। কিন্তু এরপরই হঠাৎ ছন্দপতন। টানা ৪ হারে রীতিমত পয়েন্ট টেবিলের তলানির দিকে ঠাই হয়েছে দলটির। দারুণ শুরু করেও এমন টানা ব্যর্থতার কারণ কী?

এমনিতে শক্তির বিচারে শুরু থেকেই পিছিয়েছিল ঢাকা। তবে তাদের প্রধান ভরসা হয়ে ছিল শরিফুল-তাসকিন জুটি। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে যে দুজন পেসারকে বর্তমানে অটোমেটিক চয়েস ভাবা হয়, সেই দুজনকেই একসাথে দলে পেয়েছিল ঢাকা। তাই প্রত্যাশাটাও ছিল আকাশ ছোঁয়া। এই দুই পেসারের কেউ না কেউ একদিন ম্যাচের ফল ভাগ্য পাল্টে দেবে, এমনটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু দুই পেসারের মিশেলটা যেন ঠিকঠাকভাবে হচ্ছে না।

আসর জুড়ে দুর্দান্ত বোলিং করছেন শরিফুল ইসলাম। মাঝে যদিও কিছুটা ছন্দ-চ্যুতি ঘটেছিল। কিন্তু শেষ ম্যাচে একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী বোলারও তিনিই। তবে শরিফুল যেভাবে উইকেট পাচ্ছেন দেদারসে, বিপরীত চিত্র তাসকিন আহমেদের ক্ষেত্রে। ৫ ম্যাচে এ পেসারের শিকার ৫ উইকেট।

চোটের সঙ্গে লড়াইটা যেন থামছেই না এ পেসারের। গত বছর বিশ্বকাপ খেলেছেন চোটের সঙ্গে লড়াই করে। এরপর দেশে ফিরে বিশ্রামে ছিলেন দুই মাস। দীর্ঘ বিরতির পর বিপিএলের তৃতীয় ম্যাচে খেলতে নেমে পিঠের অস্বস্তিতে পড়েছেন এ পেসার।রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে পিঠের ব্যথার কারণে নিজের স্পেল শেষ করতে পারেননি তিনি। বল করেছেন ২ ওভার।

এখন পর্যন্ত ৬.৭৫ ইকোনমিতে বোলিং করা তাসকিন প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে খোলসবন্দী করে রেখেছেন ঠিকই। কিন্তু পুরোনো আগ্রাসনে ঠিক উইকেট আদায় করে নিতে পারছেন না এ পেসার। তাসকিনকে নিয়ে চিন্তার ব্যাপারটা আরেকটি জায়গায়। নতুন বলে প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নিতে পারছেন না এ পেসার। ৫ উইকেটের একটি মাত্র উইকেটই তিনি প্রথম পাওয়ার প্লে-তে পেয়েছেন।

যেখানে এবারের বিপিএলে হাইস্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে না বললেই চলে, সেখানে দেশের সেরা বোলিং জুটি একসাথে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। এটা অবশ্যই আশঙ্কার যোগান দেয়। তবে কি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এখনও শেখার প্রক্রিয়ায় আছেন এ দুই পেসার? এমনটা হয়ে থাকলে, বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই ধরনের শিক্ষানবিশ প্রক্রিয়া আর কতদিন চলবে, সেটিও আপাতত অজানা।

গেল বছরে বল হাতে দারুণ সময় কাটিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। বিপিএলেও রয়েছেন ছন্দে। তবে শুভঙ্করের ফাঁকিটা হলো, ১০ উইকেটের ৭ উইকেটই তিনি পেয়েছেন ২ ম্যাচে। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটের সবগুলো উইকেটই ছিল স্লগ ওভারে। অর্থাৎ শেষের দিকে শরিফুলের বল মারতে গিয়েই তাঁরা উইকেট খুইয়েছেন। আক্ষরিক অর্থে, শরিফুলকে চেনারূপে দেখা গেছে শুধু শেষ ম্যাচেই।

এ দিকে তাসকিনের বোলিংটাও যেন গড়পড়তা। রান সেভাবে খরচ করছেন না ঠিকই। কিন্তু উইকেটের মুখও তিনি দেখছেন না ধারাবাহিক গতিতে। সব মিলিয়ে তাসকিন-শরিফুলের বোলিং জুটি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না সেভাবেই। অথচ নতুন বছরে যখন দেশের শীর্ষ লিগ শুরু হলো, তখন এই জুটিকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা ছিল। অবশ্য এখান থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে নেওয়ার সক্ষমতা শরিফুল-তাসকিনদের আছে। সেটি নিশ্চয়ই খুঁজে নিবেন এ জুটি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...