এসিএল ইনজুরি নিয়ে এত আলোচনা কেন?

এসিএল ইনজুরি, বা অ্যান্টেরিয়র ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট ইনজুরি, বর্তমানে ফুটবল দুনিয়ার অন্যতম আলোচিত সমস্যা। এটি হাঁটুর সবচেয়ে প্রচলিত ইনজুরিগুলির মধ্যে একটি, যা শুধু সংঘর্ষ বা হাঁটুতে সরাসরি আঘাতের কারণে নয়, বরং অন্যান্য কারণে ও হতে পারে।

এসিএল ইনজুরি নিয়ে এই সময় অনেক আলোচনা হচ্ছে। কি এই এনসিএল ইনজুরি? এসিএল হল অ্যান্টেরিয়র ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট ইনজুরি, হাঁটুর খুব প্রচলিত সমস্যা। শুধু সংঘর্ষ বা হাঁটুতে সরাসরি আঘাতের কারণে তো বটেই, অন্যান্য কারণেও এমন ইনজুরি ঘটতে পারে।

ফুটবলে খেলোয়াড়রা কাট বা পিভট করার সময় হাঁটুর ওপর প্রচুর চাপ সৃষ্টি করে। যখন একজন খেলোয়াড় একটি পা স্থির করে শরীর ঘোরানোর চেষ্টা করেন এবং সেই পায়ে তার পুরো শরীরের ওজন থাকে, তখন এসিএল এই চাপ প্রতিরোধ করে হাঁটু সুরক্ষিত রাখে। কিন্তু কখনো কখনো এই চাপ এতটাই বেশি হয়ে যায় যে এসিএল আংশিক বা পুরোপুরি ছিঁড়ে যেতে পারে।

খেলাধুলায় এসিএল ইনজুরির ঝুঁকি বেড়ে যায় যখন খেলোয়াড়রা খেলায় যোগ দেওয়ার আগে পর্যাপ্ত ওয়ার্ম-আপ বা পেশি শক্তিশালীকরণের ব্যায়াম করেন না। অপর্যাপ্ত প্রস্তুতির কারণে পেশিগুলি শক্ত হয়ে যায়, যা হঠাৎ চলাচলে ইনজুরির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

এছাড়াও, শরীরের খারাপ বায়োমেকানিক্স বা অনিয়মিত নড়াচড়া, ভারসাম্যহীনতা এবং অস্বাভাবিক মুভমেন্টের কারণে এসিএল ইনজুরির ঝুঁকি বেড়ে যায়। বায়োমেকানিক্সের সমস্যা থাকলে খেলোয়াড়দের চলাচল সঠিকভাবে হয় না, যা ইনজুরির কারণ হতে পারে। একজন কোচ বা ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের সাহায্যে এই ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

ক্লান্তি বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে খেলোয়াড়দের মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে। ক্লান্তির ফলে পেশিগুলি দুর্বল হয়ে যায়, যা সঠিকভাবে চলাচল এবং ভারসাম্য বজায় রাখাকে বাধাগ্রস্ত করে। এর ফলে খেলোয়াড়ের সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কমে যায় এবং ইনজুরির ঝুঁকি বেড়ে যায়।

এসিএল ইনজুরির পরে পুনরায় ইনজুরির সম্ভাবনা থাকে, কারণ একবার ইনজুরি হওয়ার পর হাঁটুর স্থিতিশীলতা কমে যায়। এসিএল হাঁটুতে স্থিতিশীলতা প্রদান করে এবং উচ্চ প্রভাবযুক্ত ক্রিয়াকলাপ যেমন দৌড়ানো, লাফানো এবং কাট করার সময় সহায়তা করে। একবার এসিএল ইনজুরি হলে হাঁটুর শক্তি কমে যায় এবং পুনরায় ইনজুরির ঝুঁকি বেড়ে যায়।

মাঠের প্রতিটি পজিশন অনুযায়ী এসিএল ইনজুরির ঝুঁকি আলাদা। আক্রমণাত্মক খেলোয়াড়দের জন্য এসিএল ইনজুরির ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, বিশেষ করে যারা দ্রুত দৌড়ান এবং কাট করে। তবে, ডিফেন্সিভ খেলোয়াড়দের মধ্যে যেমন, সেন্টার ব্যাকদের এই ইনজুরির প্রবণতা বেশি, কারণ তাদেরও মাঠে দ্রুত গতির পরিবর্তন ঘটতে থাকে।

এখনও খেলাধুলায় এসিএল ইনজুরি প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন গবেষণা ও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। অতিরিক্ত প্রস্তুতি, শরীরের শক্তি বৃদ্ধি, সঠিক ব্যায়াম এবং ফিজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে এই ইনজুরির ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তবে, এক্ষেত্রে সচেতনতা এবং পেশাদার সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে খেলোয়াড়রা দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরে আসতে পারে। তবে, সেই তালিকাটা লম্বা নয়, ব্রাজিলের নেইমার-রোনালদো কিংবা নেদারল্যান্ডসের মার্কো মার্কো ভ্যান বাস্তেনের ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে এই ইনজুরির খড়গে!

Share via
Copy link