২০০৩ সালে যখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এলোমেলো পা ফেলে হাঁটা শিখেছিল বাংলাদেশ, তখন বাংলাদেশ যার আঙুল আঁকড়ে ধরেছিল তিনি ডেভ হোয়াটমোর। তাঁর হাত ধরেই দৃঢ় পায়ে হাঁটতে শিখেছিল টাইগাররা, তাঁর নেতৃত্বেই সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালদের উত্থান – ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বীরত্ব গাঁথার পিছনেও অসামান্য অবদান রেখেছিলেন তিনি।
২০০৩ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত লাল-সবুজের ক্রিকেটের সঙ্গে ছিলেন হোয়াটমোর। সে সময়ের প্রেক্ষাপটে অনেক সাফল্য পেয়েছেন, তবে শিরোপা পাননি। বাংলাদেশ তাঁকে কোথাও চ্যাম্পিয়ন করতে পারেনি। সেই আক্ষেপ মিটিয়েছে ফরচুন বরিশাল, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে এই ভূমি থেকে একটা ট্রফি পেলেন তিনি।
২০২৪ সালের বিপিএল শুরুর আগেই এই অস্ট্রেলিয়ান কোচকে নিজেদের ডাগ আউটে ভিড়িয়েছিল বরিশাল। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে পুরো আসর জুড়ে দলটিকে সহায়তা করে গিয়েছেন; তাঁর উপস্থিতিতেই বাড়তি নির্ভরতা খুঁজে পেয়েছেন তামিম, মুশফিকরা। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তিনি শেষ করেছেন নিজের এসাইনমেন্ট।
একুশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যখন বাংলাদেশে আসেন হোয়াটমোর, বাংলাদেশ তখন একের পর এক ম্যাচ হারের লজ্জায় ডুবে গিয়েছিল। কিন্তু পিছু হটেননি তিনি, শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন নবাগত দলটার। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর তাঁর অধীনেই প্রথম জয় পেয়েছিল টাইগাররা।
সাকিব, তামিমদের পাশাপাশি মানজারুল ইসলাম রানা, আফতাব আহমেদকে খুঁজে বের করেছিলেন বিশ্বকাপজয়ী এই কোচ। খালেদ মাসুদকে সরিয়ে কিপিং গ্লাভস তুলে দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিমের হাতে; যেই সিদ্ধান্তের সুফল দেড় যুগের বেশি সময় ধরে পেয়েছে বাংলাদেশ।
সবমিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভিত নিজ হাতে গড়ে তুলেছিলেন ডেভ হোয়াটমোর। তাই তো এই দেশের ক্রিকেট তাঁকে নিরাশ করেনি, ভালবাসা থেকে সম্মান সবকিছুই দিয়েছে; আর এবার একটা শিরোপাও পেয়ে গেলেন। লাল-সবুজের প্রতি তাঁর যে দুর্বলতা সেটা এখন আরো বাড়বে নিশ্চয়ই, হয়তো স্নেহের টানে আরো অনেকবার সবুজ শ্যামল বাংলায় পা রাখবেন তিনি।