মাশরাফির বোধোদয় হবে কবে!

বয়স চল্লিশ ছুঁইছুঁই। বয়সটাও এক পাশে রাখলে ঘোরতর শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে নিজের বাজে ফিটনেস ও ইনজুরি। তবুও এবারের বিপিএলে খেলছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি। তা নিয়ে সমালোচনা বইছে চারদিকেই। তবুও তা কর্ণপাত হয়নি মাশরাফির। যেন বাইশ গজটাতে নিজের অস্ত্বিত্বটা জোর করে ধরে রাখছেন এ ক্রিকেটার। 

মাশরাফির শেষ কবে? এ প্রশ্নের উত্তরটা যেন তিনি নিজেই জানেন না। এবারও জানিয়ে রেখেছেন, পা ঠিক থাকলে খেলবেন আগামী আসরও। অথচ এবারের আসরই তিনি খেলছেন খুড়িয়ে খুড়িয়ে।

নিজের প্রধান অস্ত্র বোলিংয়েও তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না নিয়মিতভাবে। তবুও মাঠের যেন অবিচ্ছেদ্য চরিত্র ম্যাশ। তবে এভাবে আর কতদিন? এখনই কি থামার সময় নয়? কিংবা কোথায় থামতে হবে সেই জ্ঞানটাও এখন শূন্যের পথে মাশরাফির?

দেশের ক্রিকেট মহলে মাশরাফির চাহিদা আছে। আর সেই চাহিদায় মাশরাফির জন্য স্পন্সররা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকগুলোরও সেটিই প্রধান লক্ষ্য। আর প্রধান লক্ষ্য যখন ক্রিকেট হয় না, তখন ক্রিকেটের থেকে ১০ মাস বাইরে থাকা মাশরাফিকেও মালিকদের বড্ড বেশি প্রয়োজন হয়। আনফিট মাশরাফিকে তাই বড্ড বেশি প্রয়োজন সিলেট স্ট্রাইকার্সের।

স্পন্সরদের জন্য ক্যারিয়ারের শেষ লগ্ন পেরিয়ে খেলে গিয়েছেন শচীন, রজার ফেদেরাররা। তবে তাতে সোনালী অতীত কখনোই ম্লান হয়নি। কিন্তু মাশরাফি সেই অতীত ফেলে এসেছেন বহু বছর আগে। ২০১৯ সালে এমপি হয়েছেন। ব্যস্ততা বেড়েছে সেখানেই। কিন্তু ব্যস্ততার মাঝেও বিপিএলটা কখনোই মিস দেন না তিনি।

সেটা হোক রাজনৈতিক মিটিং শেষে তড়িঘড়ি করে মাঠে নামা, কিংবা স্রেফ মাঠে দাঁড়িয়ে ম্যাচ শেষ করে। মোদ্দা কথা, মাশরাফির ক্রিকেট আবেগটা সুস্পষ্টই। কিন্তু এই একগুঁয়েমিতাই তিনি নিখুঁত পেশাদারিত্ব কিংবা একটা দায়িত্ববোধ থেকে পিছু হটে যাচ্ছেন কিনা সেটাই প্রশ্নের বিষয়। 

বিপিএল খেলা না খেলা ইস্যুতে মাশরাফির বেশ কিছু বক্তব্যে তাঁর দ্বিচারিতায় প্রকাশ পায়। এই যেমন, বোর্ডলে ভবিষ্যৎ ক্রিকেটার বের করা পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি নিজেই নওজের জায়গাটা ছাড়েননি।

তাঁর কারণে যে স্কোয়াডের একজন পেসারকে দলের বাইরে থাকতে হচ্ছে, সেটিতে যেন ইচ্ছা করেই চোখ এড়িয়ে যান এ ক্রিকেটার। দায়টা দিয়ে দেন টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়ার উপরে। 

তবে মাশরাফির একটা ঘোষণাই পাল্টে দিতে পারে সব কিছু। কম তো দেননি বাংলাদেশ ক্রিকেটে। কিন্তু এখন যেটা করছেন, তা অতিরঞ্জিতই বটে। এটা নিয়ে সমালোচনা হওয়াটাই শ্রেয়। আর যাই হোক, এটিতে সাধুবাদ পাওয়ার মতো কিছুই করেননি মাশরাফি। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link