জামান খান, পাকিস্তানের নব্য গতি তারকা

এই সময়ের সেরা গতি তারকা কে? – এই প্রশ্নের জবাবে খুব বেশি মাথা না চুলকেই জবাবটা দেওয়া যায়। তিনি হলেন উমরান মালিক, ভারতের নতুন সেনসেশন। ওয়ানডেতে তিনি সর্বোচ্চ ঘন্টায় ১৫৬ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন। টি-টোয়েন্টিতে ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার আর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ১৫৭ কিলোমিটার। আর এই সব গুলোই ভারতের রেকর্ড।

তবে, পাকিস্তানে নাকি নতুন এক গতি তারকার উত্থান হয়েছে, যিনি ছাড়িয়ে যেতে পারেন এই উমরানকেও। তিনি হলেন জামান খান। তিনি নিজেই দাবি করেছেন, গতি দিয়ে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন খোদ উমরান মালিককে, সেটাও আবার আসছে পাকিস্তান সুপার লিগেই (পিএসএল)।

তিনি বলেন, ‘আমি পিএসএলেই উমরান মালিকের দ্রুততম গতির ডেলিভারির রেকর্ড ভেঙে ফেলবো। তবে, যদি পেসের কথাই বলতে হয়, ওটা নিয়ে আমি খুব একটা ভাবি না। আমি ভাবি পারফরম্যান্স নিয়ে। পেস তো আমার স্বভাবজাতই।’

এখন প্রশ্ন হল, কে এই জামান খান? সহজ উত্তর, পেস বোলিংয়ের আঁতুরঘর পাকিস্তানের নতুন পেস প্রতিভা তিনি। মজার ব্যাপার হল, উমরানের মত জামানও কাশ্মীরের ছেলে। তবে, পাকিস্তানের কাশ্মীর। আর জামানও উঠে এসেছেন টেপ টেনিসের ক্রিকেট থেকেই। সেখান থেকে কাশ্মীরে অবস্থিত মিরপুরের ক্রিকেট ক্যাম্প থেকে ডাক পান অনূর্ধ্ব-১৬-তে। সেখান থেকে অনূর্ধ্ব-১৯।

প্রথম তিনি আলোচনায় আসেন ২০১৮ সালে, তখন তিনি ছিলেন মুলতান সুলতান্সের ক্যাম্পে। পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৬ ও ১৭’র দলে খেলেন। এরপর ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি লিগ খেলেন পাকিস্তানে। কাশ্মীর প্রিমিয়ার লিগে (কেপিএল) খেলেন রাওয়ালকোট হকসের হয়ে।

গত আসরের পিএসএলে তাঁকে দলে নেয় লাহোর কালান্দার্স দল। সেখানে তিনি নেন ১৮ টি উইকেট। উইকেট সংখ্যায় তাঁর চেয়ে এগিয়ে ছিলেন কেবল দুই কিংবদন্তি – শাহীন শাহ আফ্রিদি ও শাদাব খান। ওই আসরের পুরো সময়ে কেবল চারটা মেইডেন হয়, এর মধ্যে দু’টোই করেন এই জামান খান।

এর মধ্যে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচের কথা না বললেই নয়। শেষ ওভারে তিনি দেন মাত্র তিন রান, যেখানে জিততে ইসলামাবাদের দরকার ছিল ১২ রান। আর ক্রিজে ছিলেন দুই পাওয়ার হিটার আসিফ আলী ও আজম খান। করাচি কিংসের বিপক্ষে ১৬ রান দিয়ে নেন চার উইকেট। এছাড়া তার আবিস্কারক দল মুলতান সুলতান্সের বিপক্ষে মিডল ওভারে দু’টো জরুরী উইকেট নেন।

অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদির সাথে জুঁটি বেঁধে প্রতিপক্ষের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছেন। ১৩ ম্যাচ খেলেছেন জামান। গড় ছিল ২১.৫০। তাছাড়া ইকোনমি রেটটাও ছিল সন্তোষজনক। ৮.২৬ ইকোনমি রেট বজায় রেখে লাহোর কালান্দার্সকে শিরোপা জেতাতে সহায়তা করেছেন জামান খান। গতিটা দারুণ, নিয়মিত ৯০ মাইলের ওপর গতি নিয়ে বোলিং করতে পারেন।

ইনিংস জুড়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বোলিং করতে পারার দক্ষতা তাঁকে আলাদা করেছে অন্যদের থেকে। ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে তাঁর দিকে চোখ রাখতে পারে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তাঁকে ‘পাকিস্তানের মালিঙ্গা’ও বলা যায়। কারণ, লঙ্কান পেস গ্রেট লাসিথ মালিঙ্গার মতই স্লিঙ্গিং অ্যাকশনে বোলিং করেন তিনি। খেলেছেন সর্বশেষ লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগেও (এলপিএল)। সেখানেও পারফরম্যান্স মন্দ নয়।

আর বয়স মাত্র ২১ বছর। ফলে, ভবিষ্যতটা তাঁর উজ্জ্বলই বলা যায়!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link