হেয়ার কাম জুনিয়র মালিঙ্গা

যুব বিশ্বকাপে শুধু যে অ্যাকশন দিয়েই নজর কেড়েছিলেন এমন নয়। একেবারে অবিশ্বাস্য এক গতিময় বল করে মূলত হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন পাথিরানা। ভার‍তের বিপক্ষে ম্যাচে ওপেনার যশস্বী জ্যাসওয়ালকে করা ডেলিভারিটার পর স্পিডোমিটারে দেখা গেল বলের গতি ছিল ১৭৫ কিমি/ঘন্টা! যা কিনা শোয়েব আক্তারের করা সবচেয়ে দ্রুতগতির বল (১৬৩.১ কিমি/ঘন্টা) থেকেও বেশি ছিল।অবশ্য পরবর্তীতে জানা যায় স্পিডোমিটারের ভুল হয়েছে! যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এমন প্রায় অসম্ভব এক গতি দেখা গেছে স্পিডোমিটারে।

দূর থেকে দেখলে মনে হবে অল্প বয়সী লাসিথ মালিঙ্গা দৌঁড়ে আসছেন। বোলিং অ্যাকশন অনেকটাই মালিঙ্গার মতন। ইয়র্কার করার প্রতিভাটাও যেন পেয়েছেন মালিঙ্গার মতই। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বোলিং অ্যাকশন দিয়েই নজর কেঁড়েছেন সবার। নামের সাথে পেয়েছেন ‘জুনিয়র মালিঙ্গা’ তকমা। অনেকেই ডাকেন পরবর্তী মালিঙ্গা কিংবা ভবিষ্যত মালিঙ্গা।

বলছিলাম ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নেওয়া লঙ্কান পেসার মাতিশা পাথিরানার কথা। রীতিমতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় পাথিরানার বোলিংয়ের ভিডিও। মালিঙ্গার মত বোলিং অ্যাকশন, দিতে পারেন বিষাক্ত ইয়র্কারও। প্রতিপক্ষের ব্যাটারের উইকেট উপড়ে ফেলার ক্ষমতা তিনি রাখেন। সেটি অবশ্য এরই মধ্যে প্রমাণ করেছেন বেশ কয়েকবার।

তবে যুব বিশ্বকাপে শুধু যে অ্যাকশন দিয়েই নজর কেড়েছিলেন এমন নয়। একেবারে অবিশ্বাস্য এক গতিময় বল করে মূলত হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন পাথিরানা। ভার‍তের বিপক্ষে ম্যাচে ওপেনার যশস্বী জ্যাসওয়ালকে করা ডেলিভারিটার পর স্পিডোমিটারে দেখা গেল বলের গতি ছিল ১৭৫ কিমি/ঘন্টা! যা কিনা শোয়েব আক্তারের করা সবচেয়ে দ্রুতগতির বল (১৬৩.১ কিমি/ঘন্টা) থেকেও বেশি ছিল।

অবশ্য পরবর্তীতে জানা যায় স্পিডোমিটারের ভুল হয়েছে! যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এমন প্রায় অসম্ভব এক গতি দেখা গেছে স্পিডোমিটারে।

১৭ বছর বয়সে খেলছিলেন ২০২০ যুব বিশ্বকাপ। সেখানে ৪ ম্যাচে ২৭.২৮ গড়ে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। ইকনমি রেট ছিল ৬.১৬। সেবার ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল খেললেও উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। এখন পর্যন্ত লিস্ট-এ তে খেলেছেন এক ম্যাচ। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের আয়জনে লিগে দু’টি টি-টোয়েন্টিও খেলেন এই তরুণ পেসার। ফাইনালে ৩ ওভারে ২৮ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট।

এরপর হঠাৎ করেই নিজের প্রতিভা বিকশিত করার সুযোগ পেয়ে ফ্র‍্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর আইপিএলে। ২০২১ আইপিএলে লঙ্কান রহস্যময় স্পিনার মাহিশ থিকশানার সাথে রিজার্ভ খেলোয়াড় হিসেবে ছিলেন চেন্নাইতে। এরপর চলতি আসরের মেগা নিলামে ৭০ লাখ রুপিতে থিকশানাকে দলে ভেড়ায় চেন্নাই। তবে সুযোগ হয়নি পাথিরানার।

তবে ভাগ্যই তাঁকে সুযোগ করে দিয়েছে ঠিক। চলতি আইপিএলের মাঝপথেই হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়েন পেসার অ্যাডাম মিলনে। এছাড়া ইনজুরিতে দলের বাইরে আছেন আরেক পেসার দিপক চাহার। তাই পেসার সংকটে ভুগছে চেন্নাই। আর মিলনের ইনজুরি আশীর্বাদ হয়ে এল পাথিরানার জন্য। নিলামে থাকা ভিত্তিমূল্য ২০ লাখ রুপিতেই টুর্নামেন্টের মাঝপথে পাথিরানাকে দলে ভিড়িয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস।

সাত ম্যাচে দুই জয় নিয়ে পয়েন্টস টেবিলের নয়ে অবস্থান করছে পাথিরানার চেন্নাই সুপার কিংস। প্লে অসে যেতে হলে প্রায় সব ম্যাচই জিততে হবে চেন্নাইকে। মিলনে-চাহারদের ইনজুরি যেন মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে চেন্নাইর জন্য। তবে তরুণ যুবা পাথিরানার হাত ধরে পেস বিভাগের দাপটটা ফিরে আসে কিনা সেটা সময় বলে দিবে।

শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডির ট্রিনিটি কলেজ থেকে করেছেন পড়াশোনা। ওই কলেজের প্রাক্তনী লঙ্কান গ্রেট স্বয়ং কুমার সাঙ্গাকারা। পাথিরানা ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন বহু ক্রিকেটারের। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ভবিষ্যত সম্ভাবনাময় হিসেবেই দেখছেন অনেকে। জাতীয় দলে অভিষেকের আগেই আইপিএলের মত টুর্নামেন্টে দল পাওয়াটা নেহায়েৎ ভাগ্যের ব্যাপার বলা যায়।

সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে হয়ত এখান থেকেই পালটে যাবে এই তরুণ পেসারের ক্যারিয়ার। মালিঙ্গার নামটা জুড়ে গেছে অল্প বয়সেই। এই কিংবদন্তি ক্রিকেটারের নামের বোঝাটা বইতে পারবেন কিনা নাকি চাপের বোঝায় অল্পতেই মুখ থুবড়ে পড়বেন সেটাও সময়ই বলে দিবে।

তবে, আপাতত উত্থানের মঞ্চটা প্রস্তুত জুনিয়র মালিঙ্গার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...