একদিবসী বিশ্বকাপে বিদায়ের সুর

ক্রিকেটে যেমন ক্যারিয়ারের শুরু আছে, তেমনি একটা সময় পর এর শেষও আছে। এক সময় ক্যারিয়ার শুরু করা অনেকেই এখন অবসরে, কেউ বা আবার অবসরের দ্বারপ্রান্তে। কেউ ফিটনেস কিংবা বাজে ফর্মের কারণে ক্রিকেটকে বিদায় জানান আগেই, কেউ বা আবার বয়সের কারণে! তবে, অনেকেই চান ক্যারিয়ারের শেষটা আপন রঙে রাঙাতে। নিজের সেরাটা দিয়ে ক্যারিয়ারের শেষটা স্মরণীয় করে রাখতে। আর সেটা যদি হয় আইসিসি ইভেন্ট; তাহলে যেন প্রত্যাশার মাত্রাটা আরো বেশি থাকে।

আজকের আয়োজন সেই পাঁচ ক্রিকেটারকে নিয়ে যারা লম্বা সময় দলকে সার্ভিস দিয়ে চলে এসেছেন ক্যারিয়ারের শেষ দিকে। হয়তো ২০২৩ বিশ্বকাপের পর আর দেখা যাবে না তাঁদের ২২ গজের সবুজ গালিচায়।

  • শিখর ধাওয়ান (ভারত)

আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি ৩৫ বছর বয়সী ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ানে। মূলত, একাধিক অপশন থাকায় দলে জায়গা করতে পারেননি ধাওয়ান। টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি দলেও আপাতত নেই তিনি। শুধু ওয়ানডে ফরম্যাটে ঠিক কতদিন চালিয়ে যাবেন সেটা বলাও দুষ্কর।

আইসিসি ইভেন্টে ভারতের হয়ে বেশ সফল এই ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারও প্রায় শেষের দিকে। রোহিত শর্মা ছাড়াও ওয়ানডেতে লোকেশ রাহুল, পৃথ্বি শ কিংবা তরুন শুভমান গিলদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারলে হয়তো বাদ পড়বেন এই ফরম্যাটেও। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে ধাওয়ানের ফর্ম বিবেচনায় হয়তো ওয়ানডেতে খেলে যাবে আগামি ২০২৩ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তবে, সেই দলে জায়গা পেতে হলে পরের দুই বছর পারফরম্যান্সটাও করতে হবে নজরকাঁড়া।

  • ফাফ ডু প্লেসিস (দক্ষিণ আফ্রিকা)

দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় তারকা হিসেবেই পরিচিত ফাফ ডু প্লেসিস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতেই চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন প্লেসিস। কিন্তু সদ্য ঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা হয়নি সাবেক এই প্রোটিয়া অধিনায়কের।

ফ্র‍্যাঞ্চাইজি লিগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সত্ত্বেও জাতীয় দলে থেকেছেন উপেক্ষিত! তার ফর্ম বিবেচনায় বলা যায় আগামী ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও খেলবেন তিনি। আর সুযোগ পেলে ওই আসরেই হয়তো ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন তিনি।

  • মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশ ক্রিকেটের মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম লম্বা সময় সার্ভিস দিয়েছেন জাতীয় দলকে। ৩৪ বছর বয়সেও দিব্যি খেলে যাচ্ছেন তিন ফরম্যাটে। তবে, সম্ভাবনা রয়েছে আগামি ২০২৩ বিশ্বকাপের পরই হয়তো তরুণদের জায়গা করে দিতে ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন তিনি।

টি-টোয়েন্টিতেও পার করছেন বেশ বাজে সময়। ওয়ানডে ও টেস্টে ফর্মে থাকলেও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যেতে চাইবেন না মুশফিক। ৩৭ বছর বয়সে এসে তখন হয়তো চিন্তা করবেন ক্যারিয়ারের অর্জনটুকু নিয়ে ২২ গজকে বিদায় জানানোর।

  • মোহাম্মদ নবী (আফগানিস্তান)

বর্তমান সময়ে আফগান ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে খেলে যাচ্ছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। সদ্য রশিদ খানের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান নবী।

৩৬ বছর বয়সে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে যেতে চাইবেন সেরাদের কাতারে। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে মনযোগ দিতে ইতোমধ্যেই বিদায় জানিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটকে। ফর্ম আর ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বজায় থাকলে আগামি ২০২৩ বিশ্বকাপে আফগানদের হয়ে মাঠ মাতাতে দেখা যেতে পারে নবিকে। তবে, ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে ফর্ম ধরে রাখতে না পারলে এর আগেই হয়তো বাদ পড়বেন দল থেকে।

  • সিকান্দার রাজা

পাকিস্তানি বংশদ্ভূত জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজা বর্তমান সময়ের জিম্বাবুয়ে দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার নি:সন্দেহে। ব্যাট এবং বল হাতে পারফরম করে দলের হয়ে সেরাটা দিতেই সদা প্রস্তুত থাকেন তিনি। মাঝে শারিরীক অসুস্থতায় কিছু সময় মাঠের বাইরে ছিলেন রাজা।

এরপর মাঠে ফিরে এখানো দেখাতে পারেননি আগের সেই জৌলুস। চলতি বছর ছয়টি টি-টোয়েন্টিতে রান করেছেন ৪২ ও উইকেট নিয়েছেন মোটে একটি। তবে, আগামী ২০২৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ে যদি কোয়ালিফাই করতে পারে সেক্ষেত্রে হয়তো দলে দেখা যাবে এই অলরাউন্ডারকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link