এক আসরেই বিশ্বকাপ অভিযানের ইতি

আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ হলো ক্রিকেটের সেই মহাযজ্ঞ যেখানে পুরো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে সেরাদের সেরাকে নির্ধারণ করার জন্য। সর্বোচ্চ পাঁচ বার শিরোপা জিতে এ লড়াইয়ে সবচেয়ে সফলতম দল অস্ট্রেলিয়া। তাছাড়া ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দু’টি এবং পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার রয়েছে একটি করে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার কীর্তি।

১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মত ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। সেই থেকে অদ্যাবধি ২০ টি দল এ টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে। আইসিসির পূর্ণ সদস্যের দেশগুলো প্রায় নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেলেও সহযোগী দেশগুলোকে বাছাই পর্বের বাঁধা উৎরে তবেই অংশগ্রহণ করতে হয়।

সময়ের সাথে ক্রিকেট বিশ্বে নতুন নতুন দল উঠে আসার পাশাপাশি বিশ্বকাপেও বহু নতুন দলের আবিভার্ব ঘটেছে যাদের বিশ্বকাপ মিশন খুব একটা লম্বা হয়নি । এর মধ্যে এমন তিনটি দলও আছে, যারা কি না এখন পর্যন্ত মাত্র একটি করে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েছে।

  • পূর্ব আফ্রিকা (১৯৭৫ বিশ্বকাপ)

১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে মোট ৮টি দল অংশ নেয় যাদের মধ্যে পূর্ব আফ্রিকা অন্যতম। তারা ছিল টুর্নামেন্টের সেই দুটি দলের একটি যাদেরকে ছয়টি পূর্ণ সদস্য দলের সাথে খেলার আমন্ত্রণ জানায় আইসিসি। টুর্নামেন্টে গ্রুপ ‘এ’ তে ভারত, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের সাথে যোগ দেয় আফ্রিকার এ দেশটি।

পূর্ব আফ্রিকা নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যেখানে ১৮১ রানের পরাজয় বরণ করতে হয় তাদের। গ্লেন টার্নার একাই ১৭১ রান করেন সেই ম্যাচে। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ১০ উইকেটে এবং শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের ১৯৬ রানে হেরে গ্রুপ ‘এ’ এর তলানিতে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করে পূর্ব আফ্রিকা। তারপর ১৯৮৯ সালে তাদেরকে নিষিদ্ধ করে আইসিসি। তখন বিশ্ব ক্রিকেটে পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকা ক্রিকেট দল তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়।

  • নামিবিয়া (২০০৩ বিশ্বকাপ)

শীর্ষ তিনে থেকে ২০০১ আইসিসি ট্রফি শেষ করে ২০০৩ সালে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায় নামিবিয়া। বিশ্বকাপে তাঁরা ছিল গ্রুপ ‘এ’ তে। হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ অভিষেক ঘটে নামিবিয়ার।

তারপর একে একে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে খেললেও কোন ম্যাচ জিততে পারেনি তারা। গ্রুপপর্বে ভারত, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া রীতিমত তাদেরকে বিধ্বস্ত করে। এরপর বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ভাল না করায় ২০০৭ ও পরের বিশ্বকাপগুলোতে আর অংশ নিতে পারেনি নামিবিয়ানরা। যদিও, ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছে দলটি।

  • বারমুডা (২০০৭ বিশ্বকাপ)

ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে বারমুডার অভিষেক ঘটে ২০০৭ সালে। সেবারই প্রথমবারের মত ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিবেশী হিসেবে গ্যালারি থেকে তাই বেশ ভালো সমর্থন পায় এই দ্বীপদেশটি।

আসরে তারা প্রথম ম্যাচটি খেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যেখানে তাদেরকে ২৪৩ রানে হারায় ১৯৯৬-এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ভারতের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে নেমে আরো বড় পরাজয়ের সম্মুখীন হতে হয় বারমুডাকে। এবার তাদের হার ২৫৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। যদিও এই ম্যাচে বিশাল শরীর নিয়ে স্লিপে ঝাঁপ দিয়ে রবিন উথাপ্পার অবিস্মরণীয় এক ক্যাচ ধরে আলোচিত হন ডোয়াইন লেভেরক।

আর নিজেদের শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করা বারমুডা ৭ উইকেটে পরাজিত হয় বাংলাদেশের বিপক্ষে। এভাবে এশিয়ার এই তিন দলের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারের মাধ্যমে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে বারমুডা।

পরবর্তীতে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে নিজেদের বিগত সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে ব্যর্থ হয় তারা। বর্তমানে আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগের চতুর্থ বিভাগে খেলছে ‘ব্রিটিশ ওভারসিজ টেরিটোরি’র এই প্রতিনিধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link