কাতার বিশ্বকাপের পেলে হবেন কে!

বিশ্বকাপ ফুটবল হচ্ছে ফুটবলারদের নিজেকে প্রমাণ করার দারুণ এক মঞ্চ। একই সাথে তরুণ ফুটবলারদের আগমনী বার্তা দেওয়ারও মঞ্চায়ন হয় এই একই মহাযজ্ঞে। কারণ পুরো বিশ্বের চোখ থাকে এই বিশ্বকাপেই। 

১৯৫৮ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল মিলিয়ে ৫ গোল করেছিলেন পেলে। পেলের তখন বয়স মাত্র ১৭। সেই বিশ্বকাপ দিয়ে পেলেকে একদম নতুন করে চিনেছিল বিশ্ব। এরপর পেলের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বহু ফুটবলার বিশ্বকাপ দিয়েই নিজের জাত চিনিয়েছেন। তো, ২০০৬ বিশ্বকাপ থেকে ফিফা টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ ফুটবলারদেরও অ্যাওয়ার্ড দেওয়া শুরু করে।

যেটাকে বলে গোল্ডেন বয় অ্যাওয়ার্ড। মূলত ২১ বছরের কম বয়সী তরুণ ফুটবলারদের এই পুরস্কারটি দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত গোল্ডেন বয় পুরস্কার পেয়েছেন দুই দেশ থেকে চারজন। ২০০৬ এ জার্মানির লুকাস পোডলস্কি দিয়ে শুরু। এরপর একে একে থমাস মুলার, পল পগবা আর কিলিয়ান এমবাপ্পে ফুটবল বিশ্বকাপের সেরা তরুণ ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন। ২০২২ সালের এবারের বিশ্বকাপে এসে গোল্ডন বয় হবেন কে?

সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে খেলা ৭১। আর সম্ভাব্য সেরা তরুণ ফুটবলারদের নিয়েই আজকের এ আয়োজন। চলুন দেখে নেওয়া যাক। 

  • পেদ্রি (স্পেন) 

২০২০ ইউরো ফুটবলের সেরা তরুণ ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছিলেন এই পেদ্রি। বার্সার এ মিডফিল্ডার শুধু বার্সার মধ্যে না, বর্তমান বিশ্বেরই মধ্যমাঠের ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম সেরা। তাই গোল্ডেন বয় অ্যাওয়ার্ডের দৌড়ে বেশ ভালভাবেই এগিয়ে আছেন তিনি। 

  • জামাল মুসিয়ালা (জার্মানি) 

এবারের বিশ্বকাপ জার্মানির তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন এই জামাল মুসিয়ালা। উঠে এসেছেন ইংলিশ ক্লাব চেলসির একাডেমী থেকে। জার্মান হলেও খেলেছেন ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে। তবে, গত বছরেই তিনি জার্মানির হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন। আর ক্লাব ফুটবলে আগেই যোগ দিয়েছিলেন বায়ার্ন মিউনিখে।

বায়ার্নে এসেই নিজের ঝলকানি দেখাতে শুরু করেন তিনি। মধ্যমাঠ ছাড়াও জামাল মুসিয়ালা দুই উইংয়ে খেলতে পারেন। যেটা তাঁকে অনন্য করে তুলেছে। তাই এ বিশ্বকাপে জার্মানির জন্য অন্যতম এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন উনিশ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার। 

  • আনসু ফাতি (স্পেন) 

মেসি বার্সা ছাড়ার পর বার্সেলোনার ১০ নম্বর জার্সিটি তাঁকেই দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর থেকেই ইনজুরির বৃত্তে আটকে যান তিনি। মৌসুমের সিংহভাগ সময়েই তাঁকে মাঠের বাইরে কাটাতে হয়। তবে ইনজুরি কাটিয়ে আবারও ফিরেছেন ফাতি। জন্মস্থান মরক্কোতে হলেও খেলবেন স্পেনের হয়ে। 

আনসু ফাতির মধ্যে দারুণ সম্ভাবনার আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগেই। লা লিগা আর চ্যাম্পিয়ন লিগ, দুটির ইতিহাসেরই তিনি সর্ব কনিষ্ঠ গোলদাতা। ড্রিবলিং, স্পিড, পজিশনিং- সব কিছু মিলিয়ে দারুণ সক্ষমতা রয়েছে তাঁর মধ্যে।  সদ্য কৈশোর পেরোনো আনসু ফাতিকে নিয়ে তাই এবারের বিশ্বকাপে আলাদা নজর থাকছেই।  

  • বুকায়ো সাকা (ইংল্যান্ড) 

২০২০ ইউরোর ফাইনালে পেনাল্টি মিস করেছিলেন সাকা। সেই থেকে অনেক সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। তবে ইংল্যান্ডের প্রতিভাধর এ ফুটবলারকে এবারে বিশ্বকাপের গোল্ডেন বয় অ্যাওয়ার্ডের ফেবারিট ভাবা হচ্ছে।

কারণ, গত মৌসুম জুড়ে আর্সেনালে দুর্দান্ত  খেলেছেন সাকা। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে, ২০২০-২১ মৌসুমে আর্সেনালের বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন সাকা। তাই ফুটবলের এ মহাযজ্ঞে সাকাকে নিয়ে আলাদা করে নজর রাখতেই হচ্ছে। 

  • অরেলিয়েন শুয়েমেনি (ফ্রান্স) 

এই সামার ট্রান্সফার মার্কেটে শুয়েমেনিকে দলে ভেড়ানোর জন্য প্রায় ১০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তরুণ এ ফুটবলার কতটা কার্যকরী তা মোনাকোতে থাকাকালীনই দেখিয়ে আসছিলেন।

ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে দারুণ পজিশনিংয়ে সুয়ামেনিং পাসিং রেঞ্জও বেশ দুর্দান্ত। ইনজুরির কারণ ফ্রান্স স্কোয়াড থেকে এরই মধ্যে ছিটকে গিয়েছেন পল পগবা। তাই তাঁর অনুপস্থিতিতে এবারের ফ্রান্স স্কোয়াডে মধ্যমাঠের প্রাণ হতে পারেন শুয়েমেনি। 

  • রদ্রিগো (ব্রাজিল)

রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাজিকাল মোমেন্টের নায়ক তিনি। দারুণ একটা মৌসুম কাটাচ্ছেন। ক্লাব ফুটবলের ফর্মটা জাতীয় দলেও ধরে রাখতে পারলে এই রদ্রিগো হয়ে উঠতে পারেন অপ্রতিরোধ্য।

তুখোড় গতিতে ডি বক্সে ত্রাস সৃষ্টি করতে তাঁর জুড়ি নেই। যদিও, তিতের দলে নেইমারের আগে তাঁর মূল একাদশে ঠাই পাওয়া কঠিন, তবে সুপার সাব হিসেবে নেমে দেখাতে পারেন নিজের কারিশমা।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link