ভারত তো বটেই ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম সময়ে ২৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করার রেকর্ড এই তারকার দখলে।
মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসরের পর তিন ফরম্যাটেই জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন কোহলি। তাঁর সময়ে বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারের উত্থান হলেও অনেকেই পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি। আসুন দেখে নেয়া যাক, কোহলির সময়ে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়া কয়েকজন ক্রিকেটারকে।
- যুবরাজ সিং
ভারতের হয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের প্রধান কারিগর ছিলেন অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং। ব্যাটে-বলে সেবার অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে দলকে শিরোপা জেতানোর পাশাপাশি নিজে জিতেছিলেন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার। ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে থাকার সময় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে হলেও ফিরেছিলেন প্রবলভাবে।
কিন্তু ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে সবাইকে হতাশ করেন যুবরাজ। লংকানদের বিপক্ষে সেই ম্যাচের হারের কারণ হিসেবে সবাই যুবরাজের ২১ বলে ১১ রানের ধীরগতির ইনিংসকেই দায়ী করে থাকেন।
এরপর থেকেই জাতীয় দলে অনিয়মিত হতে শুরু করেন তিনি। তবে ধারণা করা হয় অধিনায়ক কোহলি আস্থা রাখলে হয়তো আরো বেশ কিছুদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যেতে পারতেন যুবি। ২০১৯ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন এই তারকা।
- গৌতম গম্ভীর
সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনার ছিলেন গৌতম গম্ভীর। ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে চাপের মুখে ৯৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন এই তারকা। তবে বিরাট কোহলির সাথে তাঁর দা-কুমড়ো সম্পর্কের কথা কারোরই অজানা নয়। আইপিএলের এক ম্যাচে রীতিমতো তর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এই দুই তারকা।
বিরাট কোহলি অধিনায়কত্ব পাবার পর রোহিত শর্মা এবং শিখর ধাওয়ানকেই ওপেনার হিসেবে ভরসা করেছেন। গৌতম গম্ভীর আইপিএলে পারফর্ম করলেও তাই জাতীয় দলে আর ফিরতে পারেননি।
- সুরেশ রায়না
ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সুরেশ রায়না। জাতীয় দলের হয়ে ২২৬টি একদিনের ম্যাচের পাশাপাশি ৭৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নামেন তিনি। জাতীয় দলের ২০১১ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে ছিলেন এই তারকা। বিশেষ করে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে সফল এক ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন রায়না।
কিন্তু বিরাট কোহলির অধীনে খুব বেশি ম্যাচে সুযোগ পাননি রায়না। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ভারতের হয়ে মাঠে নামেন এই তারকা। ২০২০ সালে ধোনি অবসর নেবার কয়েক ঘন্টা পরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন রায়না। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, ধোনির অবসরের সাথে সাথে রায়না বুঝে গিয়েছিলেন জাতীয় দলে আর ফেরা হচ্ছে না তাঁর।
- রাহুল চাহার
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের স্কোয়াডে ছিলেন তরুণ লেগস্পিনার রাহুল চাহার। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে ভারত লজ্জাজনকভাবে বিদায় নিলে দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। যদিও যেসব ম্যাচে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানে খুব একটা মন্দ করেননি এই তারকা।
নিজের খেলা একমাত্র ওডিয়াই ম্যাচে তিন উইকেট শিকার করেন চাহার। এছাড়া ছয় টি-টোয়েন্টি ৭.৫৯ ইকোনমিতে তাঁর সংগ্রহ সাত উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর কখনোই জাতীয় দলে ডাক পাননি রাহুল। তবে বয়স মাত্র ২৩ হওয়ায় রাহুলের সামনে সুযোগ আছে ভবিষ্যতে আবারো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানোর।
- থাঙ্গারাসু নটরাজন
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও ধূমকেতুর ন্যায় যেন হারিয়ে গেছেন থাঙ্গারাসু নটরাজন। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ক্যারিয়ারের একমাত্র টেস্টে তাঁর সংগ্রহ ছিল তিন উইকেট। এছাড়া দুই ওডিয়াই এবং চার টি-টোয়েন্টিতে তাঁর শিকার যথাক্রমে তিন এবং সাত উইকেট।
এমন দারুণ পারফরম্যান্সের পরও ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটাই হয়ে আছে তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বিরাট কোহলি সেসময় অধিনায়ক হবার সুবাদে তিনি চাইলেই এই পেসারকে দলে ফেরাতে পারতেন। কিন্তু সেটা কখনোই ঘটেনি।