অনেকটা বিতর্ক আর আলোচনা, সমালোচনাকে সঙ্গী করেই শুরু হয়েছিল কাতারে বিশ্বকাপ মঞ্চায়নের যাত্রা। আর সেই রেশটা যেন দেখা গেল মাঠের ফুটবলেও। উদ্বোধনী দিনের একমাত্র ম্যাচে তিন মিনিটে কাতারের বিপক্ষে ইকুয়েডরের করা গোলটিকে কেন অফ সাইড দেওয়া হল, সেটি নিয়েই এখন চলছে বিতর্ক। অবশ্য সেটাকে বিতর্ক বলে উষ্কে দেওয়ার কোনো উপায় নেই। কারণ সেই অফ সাইডটি নির্ধারণে নিখুঁত প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হয়েছে।
এখন, কেন গোলটি অফ সাইডের কারণে বাতিল করা হল, সেই আলোচনাই করা যাক। ইকুয়েডর ম্যাচের মিনিট দুয়েকের মাঝে একটি ফ্রি কিক পেয়েছিল। আর সেই ফ্রি-কিকটা হাওয়ায় ভেসে এসেছিল ফেলিক্স তোরেসের কাছে। তোরেস তখন গোলরক্ষকের সাথে বল কাড়াকাড়ি করার মাঝে আছেন।
কিন্তু, ফেলিক্সের শরীরে লেগে বলটা চলে যায় মাইকেল এস্ত্রাদার কাছে। আর এস্ত্রাদা তখন অফ সাইড পজিশনে দাঁড়ানো। এখন কিভাবে এস্ত্রাদা অফ সাইডে ছিলেন? নিয়ম বলে, গোলরক্ষক এগিয়ে গেলে, স্ট্রাইকারকে কমপক্ষে দুইজন আউটফিল্ড খেলোয়াড়ের সঙ্গে সমান লাইনে থাকতে হবে।
শেষ প্রতিপক্ষকে অফ সাইড লাইন হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এখন কাতারের গোলরক্ষক যেহেতু ওপরে উঠে এসেছিলেন, তখন এস্ত্রাদার সামনে খেলোয়াড় আছেন মাত্র একজন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী থাকতে হয়, দুই জনকে। তাই এস্ত্রাদা দ্বিতীয় শেষ ডিফেন্ডারের পেছনে থাকায় গোলটি অফ সাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়।
অবশ্য এমন প্রযুক্তি ব্যবহারের ঘোষণা কাতার আগেই দিয়ে রেখেছিল। চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তে জানানো হয়, কাতার বিশ্বকাপ থেকেই সেমি-অটোমেটেড টেকনোলজি ব্যবহৃত হবে।
উদ্বোধনী দিনের এ ম্যাচে অফসাইডের কারণে ইকুয়েডর প্রথমে গোল বঞ্চিত হলেও ম্যাচের ১৬ মিনিটে কাতারের গোলপোস্টে বল জড়িয়ে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম গোল আসে পেনাল্টি থেকে। আর গোলটি করেন এনার ভ্যালেন্সিয়া। ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটিও করেন তিনি। ডান প্রান্তের এক ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক হেডে গোল করে ইকুয়েডরকে ৩৩ মিনিটের মাঝেই ২-০ গোলে এগিয়ে দেন ভ্যালেন্সিয়া।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ২ গোল আসলেও দ্বিতীয়ার্ধে আর গোলের দেখা পাওয়া যায়নি। ম্যাচটিও তাই শেষ হয়ে যায় স্কোরলাইন ২-০ তে থেকে। আর এর মধ্য দিয়ে ইকুয়ডরের দাপটে কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনেই ম্লান হয়ে যায় কাতারবাসীর উৎসব।
যদিও এখনও দুটি ম্যাচ তাদের হাতে রয়েছে। তবে তার জন্য কাতারকে পাড়ি দিতে হবে অনেক কঠিন পথ। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচ জিতে রাউন্ড অফ সিক্সটিনের পথে ভালভাবেই এগিয়ে গেল ইকুয়েডর।