তামিম ইকবাল তো আগে থেকেই নেই; সাকিব আল হাসানও বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ থেকে মাঠের বাইরে। এর উপর আবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ইনজুরি, তিন সিনিয়র ক্রিকেটারকে ছাড়াই বাংলাদেশকে যেতে হচ্ছে নিউজিল্যান্ড সফরে। স্কোয়াডেও তাই বড় সড় পরিবর্তন প্রত্যাশিত ছিল।
তবে প্রত্যাশিত ছিল না সৌম্য সরকারের অন্তর্ভুক্তি; কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে আর টেস্ট দুই ফরম্যাটের দলেই আছেন তিনি। অথচ দলে ফেরার মত পারফরম্যান্স করলেন কোথায়, সেই খবর জানা নেই কারোই। ফলে প্রশ্ন জেগেছে ভক্ত-সমর্থকদের মনে, কোন যুক্তিতে জাতীয় দলে সৌম্য?
সত্যি বলতে, কোন যুক্তিই নেই আসলে। তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে রান পান না, এ দল কিংবা গা গরমে ম্যাচেও রান পান না। তবে টিম ম্যানেজম্যান্ট বিশেষ করে হেডকোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের আকর্ষণ ঠিকই পান। আর সেজন্যই হয়তো বারবার সুযোগ আসে তাঁর কাছে, অবশ্য প্রতিবারই ব্যর্থতার পরিচয় দেন এই ব্যাটার।
বিশ্বকাপ দলেও তাঁকে রাখার ইচ্ছে ছিল, তাই হয়তো প্রসেসের বাইরে গিয়ে সেপ্টেম্বরের নিউজিল্যান্ড সিরিজে সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি পারেননি চমক জাগানিয়া কিছু করতে, পারেননি ‘স্পেশাল কল’ এর মর্যাদা রাখতে। উল্টো হাস্যরসের সৃষ্টি করেছেন দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে।
সেবার প্রায় সবাই ভেবেছিল এখন থেকে সৌম্যকে নিয়ে আর পরিকল্পনা করবে না টিম বাংলাদেশ। কিন্তু এই ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে মাস দুয়েক পরেই জাতীয় দলে ফিরলেন তিনি। অথচ নুরুল হাসান সোহানের মত ক্রিকেটাররা ডিপিএল, বিপিএলে পারফর্ম করেও রঙিন পোশাকে সুযোগ পান না।
বয়সের কোটা ত্রিশ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এই বামহাতিকে রাখা হয়েছিল ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলে। উদ্দেশ্যটা ছিল, বিশ্বকাপ আর এশিয়া কাপের আগে সৌম্যকে ফর্মে ফেরানো। কিন্তু বয়স ভিত্তিক সেই টুর্নামেন্টেও বলার মত কিছু করতে পারেননি তিনি, এরপর আবার বাংলা টাইগার্সের হয়ে খেলেছিলেন এশিয়ান গেমস স্কোয়াডের বিপক্ষে। সেখানেও আহামরি পারফর্ম করা হয়নি তাঁর।
ব্ল্যাক্যাপসদের দেশে সৌম্য সরকারকে উড়িয়ে একটা কারণ হতে বাউন্সি পিচে তাঁর ব্যাটিং সামর্থ্য। বাংলাদেশী ব্যাটারদের মাঝে তিনি তুলনামূলক ভাল পেস খেলতে জানেন, যদিও সেই সামর্থ্য এখনো আছে সেটার নিশ্চয়তা আবার নেই। এছাড়া পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে তাঁকে ব্যবহারের ইচ্ছেও হয়তো কোচের রয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, সুযোগ কাজে লাগিয়ে সৌম্য সরকার প্রত্যাবর্তনের নতুন কোন গল্প লিখতে পারেন কি না। নিজের প্রিয় কন্ডিশনে ঘুরে দাঁড়াতে পারলে খুশিই হবে দেশের সমর্থকেরা, তবে সেই সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ বললেই চলে।