লিওনেল মেসি কি পরের বিশ্বকাপে খেলবেন? এমন সম্ভাবনায় মেসি ইতি টেনেছেন বেশ ক’বার। কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে কিংবা ফাইনাল ম্যাচের আগে, প্রত্যেকবারই মেসি কাতার বিশ্বকাপকেই নিজের শেষ বিশ্বকাপ বলে এসেছেন।
কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ দিয়েই বিশ্ব মেসিকে একজন বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার হিসেবে চিনেছে। তাই সমর্থক থেকে শুরু করে সতীর্থ- সবার আকুতি, মেসি আরেকটা বিশ্বকাপ খেলুক। কোচ লিওনেল স্ক্যালোনিও মেসির জন্য দ্বার খুলে রেখেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপ জেতার পর মেসি সে ব্যাপারের প্রতিশ্রুতি দেননি। বরং পরের বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কিনা, সে ব্যাপারের সংশয়ই প্রকাশ করেছেন।
তবে সতীর্থ, কোচ, ভক্তদের যে দাবি সেই একই দাবির এবার পুনরাবৃত্তি করলেন মেসির বন্ধু, সতীর্থ অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ফাইনাল ম্যাচের গোলদাতা এ ফুটবলার এক প্রকার জোর কন্ঠেই বলেছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে মেসিকে খেলতে হবে। সম্প্রতি ইএসপিএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডি মারিয়া বলেছেন, ‘মেসি ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়। তাঁকে আগামী বিশ্বকাপে খেলতেই হবে।’
তবে আগামী বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা নিজে দেখেন না ডি মারিয়া। তিনি বলেন, ‘সামনের কোপা আমেরিকাটায় বোধহয় শেষ। আমি আর পরের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা দেখি না।’
ইএসপিএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডি মারিয়া মেসিকে টেনে আরো বলেন, ‘মেসিই সর্বকালের সেরা। ওর ৭ টা ব্যালন ডি অর আছে। কোপা আমেরিকার, ফিনালিসিমা আছে। আবার বিশ্বকাপও পেলে। আর বার্সার হয়ে তো মেসি তো সর্বজয়ী। তাই সে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।’
বিশ্বকাপ জেতার কারণে মেসি-ম্যারাডোনার তুলনা টেনে তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘ম্যারাডোনা তো ম্যারাডোনাই। তিনি অনন্য। তবে আমার কাছে মেসিই সেরা। ফাইনালে ডিয়েগো থাকলে কী যে হত, ঈশ্বরই জানে। মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখলে বোধহয় তিনি আনন্দে, উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়তেন।’
মেসি আর ডি মারিয়া বলতে গেলে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একসাথে খেলছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে ডি মারিয়াকে একটা ধন্যবাদ দিতে পারেন মেসি। কারণ সেই অলিম্পিক ফাইনাল থেকে কোপা আমেরিকা, ফিনালিসিমা ও বিশ্বকাপ- প্রত্যেকটা ফাইনালেই ডি মারিয়ার পা থেকে গোল এসেছে।
আর ফাইনালে ডি মারিয়ার গোল মানেই আর্জেন্টিনার জয়। ফ্রান্সের বিপক্ষে হয়েছেও তাই। ডি মারিয়ার গোলে প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এরপর এমবাপ্পে ঝড়ে বহু নাটকীয়তা, আশঙ্কার অবতারণা হলেও দিনশেষে বিশ্বকাপ উঠেছে আর্জেন্টাইনদের হাতেই। অপূর্ণ মেসিকে পূর্ণতা এনে দিয়েছে এই বিশ্বকাপই। একই সাথে ৩৬ বছর পর একটা দেশের দীর্ঘ অপেক্ষা ঘুচেছে কাতার বিশ্বকাপ দিয়েই।