কোথায় গিয়ে থামবেন শুভমান গিল? ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৬ সেঞ্চুরির ৫ টিই পেয়েছেন চলতি বছরে। এক পঞ্জিকাবর্ষে রানের দিক দিয়ে তো আগেই পেরিয়েছেন সহস্র রান। বিশ্বকাপের মঞ্চে অপেক্ষা করছে অনেক গুলো নতুন রেকর্ড গড়ার হাতছানি।
ওয়ানডেতে দ্রুততম ২ হাজার রানের রেকর্ড দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলার। তবে আসন্ন বিশ্বকাপে সে রেকর্ড এখন অতীত হওয়ার পথে। প্রোটিয়া এ ব্যাটার ২০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন ৪০ তম ইনিংসে। ২০০০ রানের দৌড়ে গিল এখন রয়েছে ৮৩ রানের দূরত্বে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত এ ব্যাটার ১৯১৩ রান করেছেন ৩৫ ইনিংসে। গিলের সাম্প্রতিক যেমন ফর্ম তাতে পরের ৪ ইনিংসে ৮৩ রান অনায়াসেই সম্ভব।
এখানেই শেষ নয়। বিশ্বকাপের আগে গিল যেমন ফর্মে ছুটছেন তাতে এক পঞ্জিকাবর্ষে শচীনের করা সবচেয়ে বেশি ১৮৯৪ রান তোলার রেকর্ডটাও ভেঙে দিতে পারেন ২৪ বছর বয়সী এ ব্যাটার। ১৯৯৮ সালে ভারতের এক কিংবদন্তি ব্যাটার এক বছরেই করেছিলেন ১৮৯৪ রান। চলতি বছরে, ২০ ইনিংসেই ১২৩০ রান তুলে ফেলেছেন শুভমান গিল।
এবারের বিশ্বকাপে ন্যূনতম ৯ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন গিল। দুই যুগ ধরে টিকে থাকা টেন্ডুলকারের সেই রেকর্ড ভাঙতে গিলের এখন দরকার ৬৬৫ রান। এখন পর্যন্ত গিলের যেমন ফর্ম, তাতে বিশ্বকাপেও সেই ছন্দ টিকে থাকলে এই রেকর্ড ভাঙা মোটেই অসম্ভব কিছু না।
তবে শচীনের এই রেকর্ডকে না টপকাতে পারলেও একটি কীর্তিতে তিনি ঠিকই ছাপিয়ে গেছেন গিল। ২০২৩ সালে ভারতের মাটিতে চারটি সেঞ্চুরি করেছেন শুভমান গিল। এক পঞ্জিকাবর্ষে ভারতের মাটিতে এত সেঞ্চুরির রেকর্ড আর কারো নেই। এর আগে ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে দেশের মাটিতে ৩ টি করে সেঞ্চুরির কীর্তি আছে শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার।
চলতি বছরের শুরুটা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি দিয়ে। এরপর আরো চারটি সেঞ্চুরি করেছেন শুভমান। ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে থাকা তরুণ এ ব্যাটারে এশিয়া কাপেও হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটার। এশিয়া কাপের পর ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজেও পেয়েছেন একটি শতক। সব মিলিয়ে গিলের রান-ক্ষুধার পথচলা এখনো অবিরতই থাকছে।
তবে আসন্ন বিশ্বকাপে তাঁর ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে থাকবে গোটা ভারত। ২০১১ বিশ্বকাপের পর আর কখনোই বিশ্বকাপ জেতা হয়নি ভারতের। এক যুগের সেই শিরোপা খরা ঘুচানোর দিক দিয়ে নিশ্চয় নজর রয়েছে গিলেরও। এজন্য তাঁকে বৈশ্বিক মঞ্চে টেনে আনতে হবে চলতি বছরের দুরন্ত ছন্দ।
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে এসে গিল নিজেকে কতটা রাঙাবেন, তা সময়ই বলে দিবে। তবে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে একটা গুরুদায়িত্ব যে গিলের কাঁধেই থাকছে, তা বলাই বাহুল্য। গিল সেই দায়িত্বের ভার বহন করতে পারবেন তো? গোটা বছর ধরে যার ব্যাটে রান-বন্যা বইছে, সেই অবারিত ধারা নিশ্চয়ই এবারও অব্যাহত রাখতে চাইবেন গিল।